সম্পাদকীয়: পরবি তো মালির গাঢ়েই!

Slider গ্রাম বাংলা জাতীয় বাধ ভাঙ্গা মত বিনোদন ও মিডিয়া সম্পাদকীয় সারাদেশ সারাবিশ্ব

 

1506_mahfujএ কে এম রিপন আনসারী

এডিটর ইন চীফ

গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম: সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক  সরকার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেফতার করেছিল। অনেক রাজনীতিবিদদের কারাদন্ড দিয়েছিল। দন্ডিত নেতা বর্তমানে মন্ত্রীও আছেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে ওই সরকার বিষ প্রয়োগে হত্যার চেষ্টা করেছেন বলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নিজেই জাতীয় সংসদে অভিযোগ করেছেন। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক  সরকারকে  বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সরকার গত মেয়াদে বৈধতা দিয়ে ১২২টি অধ্যাদেশের মধ্যে প্রায় সব কটি অধ্যাদেশকে জাতীয় সংসদে পাশ করে নিয়েছেন। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক  সরকারকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ওই সময়ই বৈধতা দিবেন বলে ঘোষনা করেছিলেন। যার ফলশ্রুতিতে  সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক  সরকার এখন বৈধ হয়ে গেছে এবং ওই সরকারের কর্তা ব্যাক্তিরা বহাল তবিয়তেই আছেন। তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগও কেউ আনছেন না। কিন্তু এখন মামলা হচ্ছে ডেইলি স্টার সম্পাদকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ হলে প্রকাশিত সংবাদের কারণে দুঃখ প্রকাশ করা।

সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক  সরকারের আমল পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, গণমাধ্যমে সরকারী স্পন্সরশীপে অনেক সংবাদ প্রচার ও প্রকাশ করা হয়েছে। অনেক মন্ত্রী ও এমপি ওই সরকারের চাপে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবান বন্ধিও দিয়েছেন। বর্তমান সরকারের একজন দাপটি মন্ত্রী মুক্তি পেয়ে বলেছিলেন রাজনীতির পাঠশালা থেকে আসলাম। ওই সময় বর্তমান এমপিও বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর স্বীকারোক্তি আদালতেও দিয়েছেন। ওই গুলো এখন আর অপরাধ নয়। ডেইলি স্টার যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে একই প্রতিবেদন অন্য গণমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছে এবং মাহফুজ আনাম একাই দুঃখ প্রকাশ করেছেন। আর কেই করেননি। এরপরও ওদের কোন অপরাধ হয়নি। অপরাধ হয়েছে শুধু মাহফুজ আনামের। কেন হয়েছে তাও অজানা।

বর্তমান সরকারের আমল পর্যালোচনায় স্পষ্ট হবে যে, বিগত সরকার গুলোর চেয়ে আরো বেশী করে  গণমাধ্যম নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারছে না। সরকারী স্পন্সরশীপেও অনেক সংবাদ প্রচার হচ্ছে। এ সব ক্ষেত্রে গণমাধ্যম অসহায় বলতে হবে। কারণ গণমাধ্যমকেও আইন মেনে চলতে হয়।

সম্প্রতি উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্যনীয়, যে সরকারের আমলে ঘটনা ঘটে ওই সরকারই রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা করে। কিন্তু গত সরকারের আমলে সংঘটিত ঘটনার মামলা এই সরকার কি ভাবে করতে চাচ্ছে তাও বোধগম্য নয়। আবার কোন প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে সম্পাদক দুঃখ প্রকাশ করলে মানহানি মামলাও করা উচিত নয়। এরপরও মানহানি মামলা হচ্ছে গণহারে। আইন কানুন জেনে রাষ্ট্রদ্রোহী ও মানহানি মামলার সিরিয়াল পড়ছে। মামলার সংখ্যা যে ভাবে লম্বা হচ্ছে তাতে বুঝা যায় সরকারের সঙ্গে গণমাধ্যমের দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়াও জাতীয় সংসদে অনুপস্থিত কোন ব্যাক্তিকে নিয়ে আলোচনাও অনভিপ্রেত। সব কিছু মিলিয়ে বলা যায় পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।

পরিশেষে দাবি উঠতে পারে যে, বাড়ির মালিক বা কর্মচারীদের কিছু বলতে না পেরে সরকার সব দোষ মালির গাঢে চাপাচ্ছেন। এতে করে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়া ছাড়া আর কিছুই হবে না। পাশাপাশি গণমাধ্যমকে কোনঠাসা করায় প্রশ্নবিদ্ধ গনতন্ত্র প্রশ্নহীন হতে পারে যার উত্তর পাওয়া মুশকিল হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *