রেকর্ড পঞ্চমবারের মতো বর্ষসেরা মেসি

Slider খেলা

 

2016_01_12_01_53_55_O2IIzdhg88S0MdfxxQXtE1PW4Fddx7_original

 

 

 

 

ঢাকা: তিনিই পেতে যাচ্ছেন এবারের ফিফা ব্যালন ডি’অরের পুরস্কার, এমন ভাবনা ছিল অনুমিত। কারণ গত বছরটা তার কেটেছে স্বপ্নের মতো। ব্যক্তিগত নৈপুন্যের পাশাপাশি ক্লাব বার্সেলোনার হয়ে জিতেছেন পাঁচটি শিরোপা। ছিল নানা রেকর্ডের মিশেল। শেষ অবধি জুরিখের আলো ঝলমলে রাতটাতে চওড়া হাসি লিওনেল মেসিরই। রেকর্ড পঞ্চমবারের মতো ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার পেয়েছেন বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন এই ক্ষুদে ফুটবল জাদুকর। পেছনে ফেলেছেন রিয়ালের পর্তুগিজ উইঙ্গার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ও বার্সা সতীর্থ নেইমারকে।

২০০৯ থেকে ২০১২, টানা চারবার ফিফা বর্ষসেরার খেতাব জিতে ইতিহাস গড়েছিলেন মেসি। এবার জিতলেন পঞ্চমবারের মতো। যা ফুটবল ইতিহাসে বিরল রেকর্ড। কারণ চারবারই বর্ষসেরা হওয়ার কৃতিত্বই নেই আর কারো। সর্বোচ্চ তিনবার করে জেতার রেকর্ড আছে দুই রোনালদোর (ব্রাজিল ও পর্তুগালের) ও ফ্রান্সের জিনেদিন জিদানের। এবার নিজের রেকর্ড নিজেই ভেঙ্গে অনন্য উচ্চতায় নিজেকে নিয়ে গেলেন লিওনেল মেসি।

জুরিখে তারকায় ঠাসা ছিল অ্যাওয়ার্ডস নাইটস। বাংলাদেশ সময় রাত দশটায় অনুষ্ঠান শুরু হলেও রাত একটার দিকে সবার শেষে ঘোষণা করা হয় পুরুষ বর্ষসেরা ফুটবলার অ্যাওয়ার্ডের। স্মিত মুখে বর্ষসেরা লিওনেল মেসির নাম ঘোষণা করেন ব্রাজিলের সাবেক ফুটবলার কাকা। ২০০৭ সালে কাকা জিতেছিলেন ফিফা বর্ষসেরার খেতাব। তারপর এই পুরস্কার ভাগাভাগি করে জিতেছেন শুধু মেসি ও রোনালদো। গেল আট বছরে মেসি পাঁচবার, রোনালদো তিনবার। গত দুটি আসরেই জিতেছিলেন রোনালদো।

এবার রোনালদোকে টেক্কা দিয়ে সিংহাসন আবারো দখল করলেন মেসি। যদিও পুরস্কার নেয়ার সময় বেশ বিনয়ীই দেখালো মেসিকে। তিনি বলেন, ‘এটা একটা বিশেষ মুহূর্ত আরেকটি ব্যালন ডি’অর জেতা। যা গতবার দুইবার দেখেছি রোনালদোকে জিততে। এটা কল্পনাও বাইরে। অবিশ্বাস্য এটি পঞ্চমবারের মতো।’

তিনি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন, ‘আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই যারা আমাকে ভোট দিয়েছে, আমার সতীর্থ ও সবাইকে। যাদের জন্য এই পুরস্কারে ভূষিত হলাম। এটা আমাকে চলার পথে প্রেরণা জোগায় ও অনেক কিছু শেখায়’। মোট ভোটের প্রায় ৪১ শতাংশ পেয়েছেন মেসি। রোনালদো ২৭ শতাংশ আর নেইমার পেয়েছেন সাত শতাংশ। অন্যান্য ক্যাটাগরিতে বর্ষসেরা কোচ হয়েছেন বার্সেলোনার লুইস এনরিক, মহিলা বর্ষসেরা ফুটবলার আমেরিকার চার্লি লয়েড, মহিলা ফুটবল দলের বর্ষসেরা কোচ জিল ইলিস, বছরের সেরা গোলের পুরস্কার পুসকাস অ্যাওয়ার্ড জেতেন ব্রাজিলের ওয়েন্ডেল লিরা।

গত বছর বার্সেলোনার হয়ে স্বপ্নের মতো কেটেছে মেসির। যার ফলস্বরুপ এই পুরস্কার। গত মৌসুমে বার্সেলোনাকে ‘ট্রেবল’ জেতাতে অসাধারণ অবদান রাখা মেসি ক্লাবের হয়ে পরে আরও দুটি শিরোপা জেতেন। কোপা দেল রে, লা লিগা, উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, উয়েফা সুপার কাপ ও সবশেষ গত ডিসেম্বরে বার্সেলোনা জেতে ক্লাব বিশ্বকাপ।

তবে জাতীয় দলের হয়ে ২০১৫ সালটা হতাশার মাঝেই শেষ হয় মেসির। আগের বছর বিশ্বকাপের ফাইনালে হারের পর এ বছর কোপা আমেরিকায়ও ফাইনালে হেরে দেশের হয়ে প্রথম শিরোপা জয়ের স্বপ্ন ভাঙে তার।

দুই মাস চোটের কারণে মাঠের বাইরে থাকলেও গেল বছরে সব মিলিয়ে ৬১ ম্যাচ খেলে ৫২ গোল করেন মেসি। সতীর্থদের দিয়ে ২৬টি গোল করানও তিনি। যদিও গোল করার দিক থেকে গত বছরের মতো এবারও মেসির চেয়ে এগিয়ে ছিলেন রোনালদো, দেশ ও ক্লাবের হয়ে ৫৭ ম্যাচে ৫৭টি। এ সময়ে সতীর্থদের দিয়ে ১৭টি গোল করান তিনি।

২০১০ সাল থেকে ফিফার বর্ষসেরা পুরস্কারের সঙ্গে একীভূত হয়ে এর নাম হয় ফিফা ব্যালন ডি’অর। বিজয়ীরা নির্বাচিত হন ফিফার ২০৭টি সদস্য দেশের জাতীয় দলগুলোর অধিনায়ক ও কোচ এবং ফিফা ও ফ্রান্স ফুটবল সাময়িকীর বাছাই করা ক্রীড়া সাংবাদিকের ভোটে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *