খুলনায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ১

Slider গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ সারাদেশ

78a6755afc2adf92fcbd37d5276391fd-khulna-1
গ্রাম বাংলা ডেস্ক: খুলনার ফুলতলা উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনাস্থল থেকে কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র, তাজা বোমা ও গুলি উদ্ধারের দাবি করেছে পুলিশ।
নিহত ব্যক্তির নাম মনিরুল ইসলাম শেখ (৩৫)। তাঁর বাবা আবদুস সাত্তার শেখ। বাড়ি উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের দামোদর শীতপাশাডাঙ্গা গ্রামে।

পুলিশের দাবি, পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (জনযুদ্ধ) আঞ্চলিক কমান্ডার ছিলেন মনিরুল। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি ও অস্ত্রের বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।

পরিবারের দাবি, কিছু মানুষের স্বার্থ রক্ষার জন্য ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে মনিরুলকে হত্যা করেছে পুলিশ।

পুলিশের ভাষ্য, দ্বিতীয় স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল দুপুরে নড়াইলের কালিয়া থানা এলাকার বারোইপাড়া গ্রাম থেকে মনিরুলকে আটক করা হয়। ফুলতলার তাজপুর গ্রামের হেলাল গাজী হত্যা মামলার আসামি হিসেবে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।

পুলিশের ভাষ্য, জিজ্ঞাসাবাদে মনিরুল তাঁর সহযোগীদের নাম ও অস্ত্রের তথ্য দেন। তাঁকে নিয়ে রাত দুইটার দিকে অভিযানে যায় পুলিশের একটি দল। ফুলতলা জামিরা সড়কের ধোপাখোলা জুনিয়র স্কুলসংলগ্ন বিলডাকাতিয়া এলাকায় পৌঁছালে মনিরুলের বাহিনী পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ও বোমা ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। দুই পক্ষের বন্দুকযুদ্ধের একপর্যায়ে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে মনিরুলের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়।
ঘটনাস্থল থেকে একটি শাটারগান, একটি পাইপগান, একটি ওয়ান শুটারগান, ছয়টি তাজা বোমা, সাতটি গুলি ও চারটি গুলির খোসা উদ্ধার করার কথা দাবি করেছে পুলিশ।
পুলিশের ভাষ্য, বন্দুকযুদ্ধ চলাকালে তারা রাইফেলের সাতটি এবং শটগানের ২৫টি গুলি ছোড়ে। সন্ত্রাসীরা ২৫-৩০টি গুলি ও ৮-১০টি বোমা ছোড়ে।
‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনায় উপপরিদর্শক (এসআই) ইয়াছিন আলম চৌধুরী, উজ্জ্বল, কনস্টেবল হুসাইন, আল মামুন ও কৃষ্ণপদ আহত হন বলে দাবি করেছে পুলিশ।
মনিরুলের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।
ফুলতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মো. নাসির উদ্দিনের দাবি, পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (জনযুদ্ধ) আঞ্চলিক কমান্ডার ছিলেন মনিরুল। বাহিনীর আঞ্চলিক প্রধান সবুজ শেখ পুলিশের ‘এনকাউন্টারে’ নিহত হওয়ার পর কমান্ডারের দায়িত্ব পান তিনি। পলাতক থেকে এলাকায় সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি করে আসছিলেন মনিরুল। তাঁর ভয়ে এলাকাবাসী আতঙ্কিত ছিল।
নিহত মনিরুলের মা সাহিদা বেগমের (৬০) ভাষ্য, তাঁর ছেলে শান্ত প্রকৃতির ছিলেন। ভ্যান চালিয়ে এবং ইট ভাটার ইট টেনে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কয়েক বছর আগে দামোদর প্রাইমারি এলাকার কয়েকজন যুবকের প্ররোচনায় বিপথগামী হয়ে পড়েন মনিরুল। কিছু মানুষের স্বার্থ রক্ষার জন্য ‘বন্দুকযুদ্ধে’র নামে তাঁকে হত্যা করেছে পুলিশ।

ওসি মো. নাসির উদ্দিন জানান, ফুলতলা বাজারের ব্যবসায়ী জিন্নাহ ভূঁইয়া, আলকা গ্রামের রাজু মোল্যা, তাজপুরের হেলাল গাজী, চাতালশ্রমিক জসিম, গোপিনাথপুর গ্রামের শাহিন ও দামোদর গ্রামের মুকুল হত্যা মামলার আসামি ছিলেন মনিরুল। তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি ও অস্ত্র মামলা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *