সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সৌদি লড়াইয়ে যোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশের

Slider জাতীয় সারাদেশ সারাবিশ্ব

109697_Arab

 

অর্থপূর্ণ সহযোগীতার মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে সৌদি আরবের চলমান লড়াইয়ে যোগ দেওয়ার দৃঢ় সঙ্কল্প ব্যক্ত করেছেন দেশটিতে সফররত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলি। এ খবর দিয়েছে আরব নিউজ।
বুধবার সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবেইয়রের সঙ্গে রাজধানী রিয়াদে সাক্ষাৎ করেন মাহমুদ আলি। তিনি বলেন, উভয় মন্ত্রী দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের আদ্যপান্ত পর্যালোচনা করেছেন। এছাড়া তারা জাতিসংঘ, ওআইসি ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে পারস্পরিক সহযোগীতার বিষয়টি সহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে মতবিনিময় করেন।
খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ইরানের তেহরানে সৌদি দূতাবাস ও মাশহাদে সৌদি কনস্যুলেটে হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ। এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ বলেছে, হামলার ঘটনা কূটনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক ভিয়েনা কনভেনশনের ‘পরিষ্কার লঙ্ঘণ’। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ওই দেশের সরকারেরই দায়িত্ব বিদেশী কূটনৈতিক ও কনস্যুলার মিশনের প্রয়োজনীয় সুরক্ষার ব্যবস্থা করা। আন্তর্জাতিক আইনানুসারে এটি অলঙ্ঘনীয় বিধান।
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আল জুবেইরের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণে দুই দিনের সফরে সৌদি আরবে রয়েছেন মাহমুদ আলি। দুই মন্ত্রীর বৈঠকে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগের উপমন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে উপস্থিত ছিলেন দেশটিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মোশি, ডেপুটি চিফ অব মিশন নজরুল ইসলাম, জেদ্দার কনসাল জেনারেল শহিদুল করিম, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক আসিফ রহমান।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৌদি বাদশাহ সালমানের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন। তিনি চলতি বছরের মার্চ ও মে মাসের মধ্যে দেশটিতে প্রধানমন্ত্রীর সফরের প্রস্তাব করেন। প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুই ভাতৃপ্রতীম দেশের মধ্যে সম্পর্ক অনেক বছর ধরেই দারুণ। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যার্থনা জানাতে বাদশাহ সালমান আনন্দিত হবেন।
প্রধানমন্ত্রীর সফরকে সামনে রেখে বিনিয়োগ, সংস্কৃতি, শিক্ষা ও কৃষির ওপর সহযোগিতার বিষয়ে কাজ করতে উভয় মন্ত্রী একমত হন, যাতে করে সফরের সময় এ সংক্রান্ত চুক্তিসমূহ স্বাক্ষর করা সম্ভব হয়। প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় ‘ফরেইন অফিস কনসাল্টেশনে’র (এফওসি) বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়টিও চুড়ান্ত করেন তারা।
সৌদি আরবে বাংলাদেশীদের ভূমিকার প্রশংসা করেন আল-জুবেইর, যারা উভয় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন। তিনি ডাক্তার ও নার্স সহ বাংলাদেশ থেকে দক্ষ ও আধা-দক্ষ শ্রমিক নিয়োগে আরও সহযোগিতার বিষয়ে রাজি হন। এ বিষয়ে উভয় মন্ত্রী একমত হন যে, বাংলাদেশী স্বাস্থ্য পেশাজীবীদের ভবিষ্যতে নিয়োগের বিষয়ে মেডিকেল ডিগ্রি ও অন্যান্য সুবিধাদি পরিদর্শনে সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি দল বাংলাদেশ সফর করবে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত উভয় দেশের ‘জয়েন্ট কমিশন’ বৈঠক ও সেখানে নেওয়া সিদ্ধান্তের বিষয়টি তুলে ধরে মাহমুদ আলি বাংলাদেশ সাম্প্রতিক উন্নয়নের বিষয়ে আল-জুবেইরকে সংক্ষেপে অবহিত করেন। এছাড়া দক্ষ শ্রমিক ও সৌদি আরবে সম্ভাব্য রপ্তানির জন্য তৈরি পোশাক, ওষুদ সামগ্রী সহ বিশ্বমানের রপ্তানি পণ্যের বর্ণনা দেন তিনি। এমনকি বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে, বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের জন্য বিজনেস ভিসা ইস্যু করতে সৌদি দূতাবাসকে পরামর্শ দিতে ওই বৈঠকে উপস্থিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন আল জুবেইর। সৌদি আরবে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখা খোলার বিষয়ে উভয়ে একমত হন। এটি দেশ দু’টির মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। আজ জেদ্দায় ওআইসি’র মহাসচিবের সঙ্গে এক বৈঠকের কথা রয়েছে মাহমুদ আলির।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *