এবার ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে বিএনপির সংবাদ সন্মেলন

Slider রাজনীতি

 

2016_01_02_14_59_31_RY1wDMwvbqanfn6aDIcWdFvmhOFVgc_original

 

 

 

 

পাবনা: ক্ষমতাসীন পাবনার আওয়ামী লীগ নেতারা সদর পৌরসভার ফলাফল প্রত্যাখ্যানের ২ দিন পর ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে সংবাদ সন্মেলন করেছেন বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী, জেলা বিএনপির সহ সম্পাদক নুর মোহাম্মদ মাসুম বগাসহ জেলা বিএনপি নেতারা।

শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পাবনা প্রেসক্লাবের ভিআইপি মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। গত বৃহস্পতিবার একই দাবিতে জেলা আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রকিব হাসান টিপু দলীয় কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সন্মেলন করে সদর পৌরসভার ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনঃনির্বাচনের দাবি করেছেন।

বিএনপি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পরাজিত মেয়র প্রার্থী নুর মোহাম্মদ মাসুম বগা বলেন, ‘সুক্ষ্ম ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে, শীর্ষ একটি অশুভ চক্রের চক্রান্তের মাধ্যমে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রগুলোতে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি অযথা জঙ্গির রণসাজে সজ্জিত হয়ে কেন্দ্রে মহড়া দিয়ে ধানের শীষ প্রতীকের সমর্থকদের মনে আতংক সৃষ্টি করেছে। এতে ধানের শীষ প্রতীকের ভোট কমে যায় এবং তার পরাজয় হয়।’ তাই তিনি এই প্রহসনের নির্বাচন প্রত্যাখ্যানের দাবি জানান উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে।

পাবনা সদর পৌরসভার বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান তোতা বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসন উলঙ্গ হয়ে বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোট কাটার পরিবেশ তৈরি করেছে। আওয়ামী লীগ-বিএনপির মতো শীর্ষ দুইটি দলের প্রার্থী থাকার পরও কীভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হন। নীলনকশা প্রণেতা শীর্ষ একটি মহলের ইশারায় পাবনার প্রশাসন নির্বাচনের এই ফলাফল বাস্তবায়ন করে দল বর্হিভুত প্রার্থীকে নির্বাচিত করেছেন।’

এই নীলনকশা প্রণেতা শীর্ষ মহল কে? এমন প্রশ্নের জবাব জেলা বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় নেতারা সুকৌশলে এড়িয়ে যান। জেলা বিএনপির ওই গোষ্ঠীর পরিচয় বলার সেই ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে দাবি করে তারা বলেন, এরা কারা, আপনারা ভালোমতো জানেন। তবে বিএনপি নেতারা আরও বলেন, গত চার বছর ধরে আমরা এই গোষ্ঠির সকল কর্মকাণ্ড বর্জন করে আসছি। তাদের ইফতারসহ বাৎসরিক নানা আয়োজন থেকে দুরে সরে আছি।

নির্বাচনে প্রধান পর্যবেক্ষক, জেলা বিএনপির সভাপতি মেজর (অব.) কেএস মাহমুদ বলেন, ‘পাবনার ৩৮টি কেন্দ্রের বেশ কিছু ভোটকেন্দ্রেই আওয়ামী লীগ-বিএনপির পোলিং এজেন্ট ছিল না। অথচ নারিকেল গাছ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী কামরুল হাসান মিন্টুর এজেন্ট ছিল। অনেকস্থানে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে পোলিং এজেন্টদের ফলাফল গণনার আগেই বের করে দেয়া হয়েছে।’

আ.লীগ-বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর নগ্ন আচরণ করেছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা। তিনি বলেন, ‘এই নীলনকশার প্রণেতারা বারবার এই প্রার্থীর (নারিকেল গাছ প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কামরুল হাসান মিন্টু) পক্ষ অবলম্বন করছেন।’

পাবনা সদর পৌরসভায় পরপর তিনবার মেয়র নির্বাচিত হলেন পাবনা জেলা বিএনপি থেকে ৭ বছর আগে বহিষ্কৃত সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বর্তমান মেয়র কামরুল হাসান মিন্টু। বর্তমানে তিনি জেলা বিএনপির রক্ষা কমিটির ব্যানারে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলীয় কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে পাবনা জেলা বিএনপির সভাপতি মেজর (অব.) কেএস মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তোতা, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মির্জা আজিজুর রহমান, আব্দুস সামাদ খান মন্টু, দপ্তর সম্পাদক জহুরুল ইসলাম ও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি একেএম মুসাসহ বিএনপির সব নেতা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, পাবনা সদর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের পরাজিত মেয়র প্রার্থী রকিব হাসান টিপু ফলাফল ঘোষণার পরপরই ফল প্রত্যাখ্যান করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘিরে রাখে। পরদিন দুপুরে নির্বাচনের ফলাফল বাতিল, পুনঃনির্বাচন দাবির পাশাপাশি পাবনার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অপসারণসহ শাস্তির দাবিতে পাবনা-ঢাকা মহাসড়কের কেন্দ্রীয় বাস টারমিনাল এলাকায় দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *