কারখানায় অনশন করে ঈদ করল তুবা গ্রুপের শ্রমিকেরা

Slider খেলা গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ

58034_Tuba
গ্রাম বাংলা ডেস্ক: তুবা গ্রুপ নামের পোশাক কারখানার ১,৬০০ শ্রমিক ঈদের বেতন, বোনাস না পেয়ে ঈদের দিন অনশন কর্মসূচি পালন করেছে রাজধানী বাড্ডায় কারখানা ভবনের সামনে। বেতন, ভাতা না পাওয়া পর্যন্ত তারা অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানিয়েছে, কয়েকজন শ্রমিক মঙ্গলবার সকালে পোশাক কারখানার সামনের রাস্তায় ঈদ জামাত আয়োজনের চেষ্টা করলেও পুলিশ তা বানচাল করে দেয়।
পোশাক কারাখানার মালিকরা ঈদের আগেই ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই কথা রাখেননি তুবা গ্রুপের মালিক দেলোয়ার হোসেন। এই দেলোয়ার হোসেন হলেন বহুল আলোচিত তাজরিন ফ্যাশানের মালিক। ২০১২ সালের নভেম্বরে এই তাজরীন ফ্যাশানেই দেলোয়ার হোসেনের অবহেলায় আগুন লেগে ১২৪ জন শ্রমিক নিহত হন। যাদের ক্ষতিপূরণও দেননি তিনি। তিনি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
বাড্ডায় দেলোয়ার হোসেনের তুবা গ্রুপের অধীনে মোট পাঁচটি পোশাক কারখানা রয়েছে। এগুলো হলো : তুবা ফ্যাশান, তুবা টেক্সটাইল, তুবা বুকশান, মিতা ডিজাইন ও টাইপ ডিজাইন। এই পাঁচটি কারখানায় মোট ১,৬০০ শ্রমিক কাজ করেন।
শ্রমিকরা গত তিন মাস ধরে কোনো বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। আশা ছিল ঈদের আগে বেতন-ভাতা পাবেন৷ মালিক প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি।
শ্রমিকরা তাদের মালিকের টালবাহানা বুঝতে পেরে আগেই বিজিএমইএকে জানিয়েছিল। ঘেরাও করেছিল মালিককে। তাতেও কাজ না হওয়ায় তারা ঈদের আগের দিন থেকেই অনশন শুরু করে। মঙ্গলবার ঈদের দিনও তাদের কেটেছে কারখানার সামনে অনশনে।
অনশনরত তুবা ফ্যাশনের শ্রমিক হানিফ ডয়চে ভেলকে বলেন, ‘আমরা তিন মাস ধরে বেতন না পেলেও আমাদের আশা ছিল ঈদের সময় অন্তত বোনাস পাবো। কিন্তু আমাদের কিছুই হলো না।’
কারখানা তালা লাগানো। তাই শ্রমিকরা কারখানা ভবনের সামনে এবং পাশের একটি সাততলা ভবনের ছাদে একত্রিত হয়ে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন৷ তাদের চোখে মুখে কান্না আর তীব্র হতাশা। তাদের সান্ত্বনা বা আশ্বাস দেয়ারও কেউ নেই।
শ্রমিকরা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, সবাই যেখানে পরিবার-পরিজন নিয়ে খুশিতে ঈদ উদযাপন করছে সেখানে আমরা বেতন বোনাস না পেয়ে অনশন করছি। এটা কিসের ঈদ? কিসের সাম্য।
তারা বলেন, এই হাত দিয়েই আমরা ব্রাজিল বিশ্বকাপের জার্সি বানিয়েছি। আমাদের হাতে তৈরি হওয়া জার্সি পরে খেলেছেন ব্রাজিলের খেলোয়াড়রা। মালিক টাকা কামিয়েছেন। অথচ আমরাই আজ নিগৃহীত। আমাদের গায়েই ঈদের পোশাক নেই।
তারা বলেন, আমাদের দেখার কেউ নেই। আমরা তো সাহায্য চাচ্ছি না। আমরা আমাদের পরিশ্রমের মজুরি নিতে চাচ্ছি। তবুও কেনো আমরা তা পাবো না?
এদিকে বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম এ জলিল ডয়চে ভেলকে জানান, শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবেই অনশন পালন করছেন। তবুও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা এড়াতে।
তিনি জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে তুবা গ্রুপ কর্তৃপক্ষ এবং বিজিএমইএ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *