সংসদীয় রাষ্ট্রের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার যথাযথভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রত্যক্ষ ভোটের বিকল্প নেই। সাংবিধানিক সেই বাধ্যবাধকতার কারণে আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে পৌর নির্বাচন। রাজনৈতিক দলগুলো এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করছে। অতীতের বর্জন মানষিকতা ছেড়ে প্রায় সকল দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এটি গনতন্ত্রের জন্য শুভ লক্ষ্যন।
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষনে দেখা যায়, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় দুই দলেই বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা আছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে জনগন প্রথম দলীয় প্রতীকে ভোট দিচ্ছেন। ফলে বিগত সকল সময়ের চেয়ে এবার ভোটের আমেজ আলাদা। এছাড়া গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রয়োগের ক্ষেত্র তৈরী না হওয়ায় ভোট পাগল মানুষ ভোট দেবেন স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে এটাই বাস্তব।
সাধারণ মানুষের নিকট একটি প্রশ্ন পরিস্কার। ভোটের পরিবেশ কেমন হবে? ভোট দেয়া যাবে কি না? গোলমাল হবে কি না? নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকবে কি না? এসব প্রশ্নই আসছে তৃনমূল থেকে।
ভোট দিবে জনগন। পরিবেশ সৃষ্টি করবে সরকার। সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠান করবে নির্বাচন কমিশন। ৩০ ডিসেম্বর যত কাছে আসছে পরিবেশ পরিস্থিতি ততই পরিস্কার হচ্ছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার পর সরকার যদি বাতিল করতে পারে তবে ভোটের প্রতিফলন হয় না। ভোটের সময় সকল দল ও প্রার্থীদের নিরাপত্তার বিয়টি আইনীভাবে নির্বাচন কমিশন দেখভাল করলেও মূলত দায়িত্ব পালন করে সরকার। এ ক্ষেত্রে দলীয়করণ হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের একটি কাজকে অনেকেই ব্যাঙের আবার সর্দি বলে অভিহিত করছেন। সুষ্ঠুভোটে অক্ষম নির্বাচন কমিশন ক্ষমতাসীন দল সহ দুটি দলের প্রস্তাবকে নাকচ করে দিয়েছেন। সরকারী দলের দাবি ছিল জনপ্রতিনিধিদের প্রচারণায় সূযোগ দেয়া। বিএনপি বলেছিল নির্বাচন পিছিয়ে দেয়া। নির্বাচন কমিশন দাবি দুটি সাহসিকতার সাথে প্রত্যাখান করে আবার কাপুরুষের মত অতীতের অক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ ঘটালো। মানে হল দলীয় প্রধানদের প্রচারণায় বিধি নিষেধ। এটি কেন করা হয়েছে তা সকলেই জানে। এটি না করে বরং বেগম জিয়ার প্রচারণায় বিধি নিষেধ আরোপ করলেই ভাল হত। কারণ ওই ঘোষনা দেয়ার কারণে ক্ষমতাসীন দলের এরশাদ সহ একাধিক মন্ত্রী বা মন্ত্রীর পদমর্যাদার নেতারা মাঠে যেতে পারবেন না।
সকলেই বলাবলি করছেন যে. বিএনপি একটি প্রধান দাবি না করে নির্বাচন পিছানোর দাবি করেছে। তাদের নেতা-কর্মীদের কারাবাস ও গ্রেফতারের বিষয়ে কোন নিশ্চয়তা না চেয়ে নির্বাচন পিছানোর দাবি করেছে। এই দাবি করায় মনে হয় বিএনপি নিরাপদে আছে যা বাস্তব নয়। এখানে নেতা-কর্মীদের চিন্তা না করে রাজনৈতিক স্ট্যান্ডবাজির চিন্তা করেছে বিএনপি। উপরে ফিটফাট ভেতরে সদর ঘাটের মত অবস্থা হচ্ছে বিএনপির। বলা যায় এ ক্ষেত্রে ব্যাঙের আবার সর্দি।
তবে ফলাফল যাই হউক, জাতীয় নির্বাচনে তেমনভাবে ভোট দিতে না পেরে স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে ভোট দেয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হওয়ায় ভোটের মালিক জনগনের মনে একটি ক্ষীন আশার আলো উকি মারছে এটা সঠিক। এতে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ জনগনের ভোটের চাহিদা পূরন করার চেষ্টা করছে। আর বিএনপি ভোটের আদলে দলকে চাঙা করার চেষ্টা করছে।
এছাড়া আগামী জাতীয় নির্বাচন বিএনপি আওয়ামীলীগের অধীন করতে পারে বলেও সম্ভাবনা সৃষ্টি হতে পারে। দাবি থাকবে পৌর নির্বাচনে ভোটের পরিবেশ ও ফলাফল যদি গ্রহনযোগ্য হয়।