উৎসবের আবহ আছে ক্ষোভও

Slider সারাদেশ

untitled-17_177403

 

 

 

 

 

সারাদেশের ২৩৪টি পৌরসভায় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উৎসবের আবহ বিরাজ করছে। সারাদেশেই আনন্দমুখর পরিবেশে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিচ্ছেন মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীরা। কোথায় কে কোন দল থেকে প্রার্থী হচ্ছেন, কারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন কিংবা কার কোথায় জয়লাভের সম্ভাবনা_ এসব নিয়েও চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। অবশ্য উৎসবের পাশাপাশি কিছু কিছু পৌরসভায় ক্ষোভ-বিক্ষোভের খবরও পাওয়া গেছে। এর আগে নির্বাচন কমিশন থেকে ৩০ ডিসেম্বর দেশের ২৩৬টি পৌরসভায় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে সীমানা নির্ধারণ জটিলতায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে খুলনার মংলা পোর্ট ও মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে

প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতেই এ ক্ষোভ ও অসন্তোষের মাত্রা বেশি। দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করার বেলায় তৃণমূলের মতামত উপেক্ষার অভিযোগ এনে দুই দলের মনোনয়নবঞ্চিত অনেক প্রার্থীই ক্ষুব্ধ
হয়েছেন। তাদের কেউ কেউ স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হচ্ছেন। আবার মনোনয়ন পাওয়া ও বঞ্চিত প্রার্থীসহ তাদের সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-ফ্যাসাদও প্রকট হয়ে উঠছে। কোথাও কোথাও সংঘর্ষেও জড়িয়ে পড়ছেন তারা। এই ক্ষোভ-অসন্তোষের জের ধরে বরগুনার বেতাগীতে গতকাল বুধবার হরতাল পালন করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগের বিক্ষুব্ধ একটি অংশ।

আজ বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে আজ নির্বাচনী পরিবেশ আরও জমজমাট হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে নির্বাচনী বিধান অনুযায়ী এখনই প্রচারে নামতে পারছেন না প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। এ জন্য ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাদের। নির্বাচন কমিশনের বিধিবিধান অনুযায়ী নির্বাচনে ভোট গ্রহণের ২১ দিনের আগে প্রচার শুরু করা যাবে না।
আওয়ামী লীগে ক্ষোভ-অসন্তোষ :পৌর মেয়র প্রার্থী নিয়ে আওয়ামী লীগেই এই ক্ষোভ-অসন্তোষ বেশি। তৃণমূল পর্যায়ে বিশাল সংগঠন ও ক্ষমতাসীন দল হিসেবে এমনিতেই দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীর সংখ্যাও ছিল বেশি। ফলে একক প্রার্থী বাছাই করতে গিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতাদের রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়। অনেক জায়গায় গোপন ব্যালটের মাধ্যমে একক প্রার্থী বাছাই করতে হয়েছে। তবে বেশ কিছু পৌরসভায় সমঝোতায় ব্যর্থ হয়ে একাধিক প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠিয়ে মনোনয়ন বোর্ডের ওপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ভার ছেড়ে দেওয়া হয়। সর্বোচ্চ ১০ প্রার্থীর নামে সুপারিশও এসেছে ঢাকায়।

 
এদিকে, কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী তৃণমূল থেকে প্রার্থী মনোনয়নের বেলায় স্থানীয় কয়েকজন এমপির অযাচিত হস্তক্ষেপও অসন্তোষের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব ক্ষেত্রে এমপি কিংবা প্রভাবশালী নেতারা নিজেদের ঘনিষ্ঠদের মনোনয়ন দিয়ে কেন্দ্রে নাম পাঠিয়েছিলেন। অবশ্য কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে চুলচেরা বিশ্লেষণের পর কয়েকটি পৌরসভায় ওই সব প্রার্থীকে বাদ দিয়ে যোগ্য ও জয়লাভের সম্ভাবনা আছে, এমন প্রার্থীদের চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে এলাকাভিত্তিক জনমত জরিপকে প্রাধান্য দিয়েছেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা।
নারায়ণগঞ্জের তারাবতে মনোনয়ন পেয়েছেন স্থানীয় এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী এমপির স্ত্রী হাসিনা গাজী। রূপগঞ্জ উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি হাসিনা গাজীর এই মনোনয়ন মানতে পারছেন না অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশী রমজান সাউদের সমর্থকরা।

তৃণমূল থেকে নাটোর সদরে সাজেদুল আলম খান চৌধুরী বুড়া ও লালপুরে সদ্য আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া স্থানীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আলম হকের নাম একক প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল প্রভাব খাটান বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ড এ দু’জনকে বাদ দিয়ে নাটোর সদরে সাবেক এমপি ও গভর্নর প্রয়াত শঙ্কর গোবিন্দ চৌধুরীর মেয়ে উমা চৌধুরী ডলি এবং লালপুরে পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি রুখসানা মর্তুজা লিলিকে মনোনয়ন দিয়েছে। এর আগে দলীয় সিদ্ধান্ত ছিল, ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগে যারা যোগ দিয়েছেন, তারা মনোনয়ন পাওয়ার যোগ্য বিবেচিত হবেন না।

 
পাবনা সদরে তৃণমূল থেকে পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট তছলিম হাসান সুমনসহ চারজনের নাম পাঠানো হয়েছিল। তবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের বেয়াই হওয়ার কারণে দলীয় মনোনয়ন পাননি অ্যাডভোকেট তছলিম হাসান সুমন। এখানে মনোনয়ন পেয়েছেন আবদুর রাকিব টিপু।
বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি জানান, দলের উপজেলা সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এ বি এম গোলাম কবির দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় তার সমর্থকরা গতকাল বুধবার সেখানে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করেছেন। দল মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র আলতাফ হোসেনের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে এই হরতালকালে উপজেলা নির্বাচন অফিস ঘেরাও ও বিক্ষোভ হয়েছে। প্রার্থী পরিবর্তন না হলে লাগাতার হরতালের ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে। এর আগে আলতাফ হোসেনের মনোনয়ন পাওয়ার খবরে মঙ্গলবার গভীর রাতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভার পাশাপাশি উপজেলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিলবোর্ড ভাংচুরের ঘটনাও ঘটে। গোলাম কবির স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে জমা দেওয়ার প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছেন।

 
গোলাম কবির অভিযোগ করেন, তৃণমূল থেকে তার নামই দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্র থেকে আলতাফ হোসেন বিশ্বাসকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তার মতে, তিনি দলীয় লোক নন এবং চার বছর আগেই দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন।
আলতাফ হোসেন বিশ্বাস অবশ্য নিজেকে আওয়ামী লীগের লোক দাবি করে বলেছেন, বহিষ্কারের অজুহাত তুলে একটি মহল তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এলাকার মানুষ অন্যায়কারীদের প্রশ্রয় দেবে না এবং জান দিলেও আপস করবে না।

 
অবশ্য গতকাল রাতেই কেন্দ্র থেকে আলতাফ হোসেন বিশ্বাসের মনোনয়ন বাতিল করে এ বি এম গোলাম কবিরকে বেতাগীতে দলীয় প্রার্থী করা হয়েছে।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীর পুঠিয়ায় উপজেলা যুবলীগ সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি দলীয় মনোনয়ন পেলেও তার বিরোধিতা করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জি এম হীরা বাচ্চু। তার দাবি, রবি এমপি আবদুল ওয়াদুদ দারার ব্যক্তিগত মনোনীত ও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের প্রার্থী। তৃণমূলের মতামত নেওয়া হলে দলীয় প্রার্থী হিসেবে তার নামই কেন্দ্র থেকে পাঠানো হতো। এলাকার জনগণের চাপ ও ইচ্ছায়ই তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। মনোনয়নবঞ্চিত অন্য প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক বলেন, দল মনোনীত প্রার্থী একেবারেই নবীন। তার কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা ও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই। এই ত্রুটিযুক্ত মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করা দলের পক্ষে সম্ভব হবে না বলেও তার দাবি।

 
মুক্তাগাছা প্রতিনিধি জানান, তৃণমূল থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন সরকারের নাম পাঠানো হলেও কেন্দ্র থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান মেয়র আ. হাই আকন্দ। তার এই মনোনয়নের বিরোধিতা করে দলের সাবেক উপজেলা সভাপতি আ. সামাদ মাস্টার সমকালকে বলেছেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কয়েকবারই দল থেকে বহিষ্কার হয়েছেন আ. হাই আকন্দ। দলের সদস্যপদ পর্যন্ত হারিয়েছেন তিনি। তার পক্ষে কীভাবে নৌকার ভোট চাইব? উপজেলা সহসভাপতি সিদ্দিকুজ্জামান বলেন, কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে হতাশ হয়েছেন তারা।

 
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি জানান, গোয়ালন্দে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম মণ্ডল মনোনয়ন পেলেও মনোনয়নবঞ্চিত সাবেক মেয়র শেখ মো. নিজাম, শফিকুল ইসলাম সুজ্জল ও বাদল চৌধুরী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। শফিকুল ইসলাম সুজ্জল বলেছেন, নজরুল ইসলাম মণ্ডল গোয়ালন্দের বাসিন্দা না হলেও কেবল নির্বাচন করার জন্যই দৌলতদিয়া ইউনিয়ন থেকে এসে পৌরসভার ভোটার হয়েছেন। এ অবস্থায় পৌরবাসীর চাপে তিনি (সুজ্জল) প্রার্থী হতে বাধ্য হয়েছেন। তবে নজরুল ইসলাম মণ্ডলের দাবি, নির্বাচনের জন্য দুই বছর ধরে পৌরবাসীর সুখ-দুঃখে পাশে থেকে কাজ করেছেন। এখন তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী। তার জয়-পরাজয়ের ওপর নির্ভর করছে দলের সম্মান।

বিএনপিতেও ক্ষোভ-অসন্তোষ : বিএনপিতেও মেয়র পদে মনোনয়নকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ-অসন্তোষ কম নয়। বিভিন্ন জেলায় একাধিক প্রার্থী দলের মনোনয়ন দাবিতে অনড় থাকায় কেন্দ্রীয় নেতারাও সংকটে পড়েছেন। এ কারণে কঠোর গোপনীয়তার মাধ্যমে মনোনয়নের প্রত্যয়নপত্র প্রার্থীদের হাতে দেওয়া হয়েছে। প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে এই নির্বাচনে সারাদেশেই ক্ষোভের বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছে বিএনপি হাইকমান্ড। এজন্য মনোনয়নবঞ্চিতদের ক্ষোভ প্রশমন করে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তৃণমূলে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। চিঠিতে তিনি দলের দুঃসময়ে ঐক্যবদ্ধ থাকতে সবার প্রতি আহ্বান জানাবেন বলে জানা গেছে।
বিগত সময়ে আন্দোলনে নিজ নিজ এলাকায় ‘জীবনবাজি’ রেখে মাঠে ছিলেন_ দাবি করে মনোনয়নবঞ্চিত অনেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। অনেকেই মনোনয়ন নিয়ে বাণিজ্য করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার রাতে গুলশান কার্যালয়ে বিভিন্ন জেলার মনোনয়নপত্র দেওয়ার সময় কার্যালয়ের বাইরে থেমে থেমে নেতাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। ক্ষুব্ধ একজন হুমকি দিয়ে বলেন, ‘দলের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। মনোনয়ন নিয়ে নাটক করলে এলাকায় রক্তের বন্যা বয়ে যাবে।’ তিনি কোন পৌরসভা থেকে এসেছেন কিংবা নিজেই প্রার্থী কি-না তা জানাতে অস্বীকার করেন।

 

রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীর কয়েকটি পৌরসভায় মনোনয়ন নিয়ে বিএনপিতে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এরমধ্যে তাহেরপুরে পৌর বিএনপি সভাপতি সাবেক মেয়র শামসুর রহমান মিন্টুর মনোনয়নের বিরোধিতা করছে একটি অংশ। গতকাল বুধবার রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দলীয় প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাখ্যান করেছেন তাহেরপুর পৌর ছাত্রদল সভাপতি এসএম আরিফুল ইসলাম। পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

 

কাটাখালীতে পৌর ছাত্রদল সভাপতি মাসুদ রানাকে মনোনয়ন দেওয়ার বিরোধিতা করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন পৌর বিএনপি সভাপতি সিরাজুল ইসলাম। আড়ানীতে দলের পৌর আহ্বায়ক ও বর্তমান মেয়র নজরুল ইসলাম দলের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এই পৌরসভায় দলের বহিষ্কৃত সাবেক সভাপতি তোজাম্মেল হককে এবার মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। এই মনোনয়ন প্রত্যাখ্যান করে বুধবার বিকেলে আড়ানীতে সংবাদ সম্মেলন করেন নজরুল ইসলাম। একইভাবে নওহাটায় মকবুল হোসেনের মনোনয়ন প্রত্যাখ্যান করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন পৌর বিএনপি সভাপতি রফিকুল ইসলাম।

 

শিবচর প্রতিনিধি জানান, মাদারীপুরের শিবচরে মনোনয়ন পেয়েছেন জাহাঙ্গীর কামাল। ২০০১ সালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার খুলনা সফরের পথে কাওড়াকান্দি ফেরিঘাটে তার গাড়িবহরে হামলা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি এই এই জাহাঙ্গীর কামাল। এই নেতার মনোনয়নে ক্ষুব্ধ মাদারীপুর জেলা ও শিবচর বিএনপির একটি বড় অংশ। মেয়র পদে জেলা বিএনপি নেতাদের সমর্থন পেয়েছিলেন পৌর বিএনপির সভাপতি শফিকুল ইসলাম শফিক। জেলা বিএনপি সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক আবু মুন্সী জানান, শিবচরে পৌর বিএনপির সভাপতি শফিকুল ইসলামকেই সমর্থন দিয়েছিলেন তারা। তবে কেন্দ্র থেকে জাহাঙ্গীর কামালের মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়। অবশ্য জাহাঙ্গীর কামাল দলীয় প্রধানের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় কোনোভাবেই জড়িত ছিলেন না দাবি করে বলেছেন, মামলার বাদী আবদুল মান্নান খানের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধের কারণেই তাকে আসামি করা হয়েছিল।
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, কুষ্টিয়া সদরে শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিনকে মনোনয়ন দেওয়া নিয়ে দলে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। মনোনয়নবঞ্চিত তিন নেতা কুতুব উদ্দিনসহ তার পক্ষের নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরে বিবৃতি দিয়েছেন। পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্র্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দলের সদর থানা সহসভাপতি বশিরুল আলম চাঁদ।

 
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে নেতাদের মধ্যে বিভক্তি ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। গতকাল মনোনীতদের হাতে প্রত্যয়নপত্র তুলে দেওয়ার অনুষ্ঠানে পৌর বিএনপির আহ্বায়কসহ দলের একাংশের নেতাকর্মীরা অনুপস্থিত ছিলেন। পৌর বিএনপির আহ্বায়ক রেজাউল হক বলেন, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক হলেও দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন বিষয়ে তার মতামত নেওয়া হয়নি, এ জন্যই নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নিজেকে যুক্ত করতে চান না তিনি।
কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, দাউদকান্দিতে কে এম আই খলিল বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন। তার বিরোধিতা করে নাঈম সরকার স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *