অবশেষে জয়ের দেখা

খেলা

 

untitled-5_174417

 

 

 

 

কলম্বিয়ার বারানকিইয়ার মেট্রোপলিটন স্টেডিয়ামটি আর্জেন্টিনার জন্য পরিচিত। চার বছর আগের স্মৃতিটা কখনও ভুলবে না আর্জেন্টিনার সমর্থকরা। ব্রাজিল বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে হঠাৎই ছন্দপতন ঘটেছিল আর্জেন্টিনার। এই মাঠেই কলম্বিয়াকে হারিয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল আলবেকেসেলিস্তেরা। এবারও ছন্দহীন জেরার্ডো মার্টিনোর দল কক্ষপথে ফিরল কলম্বিয়াকে হারিয়ে। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে মঙ্গলবার রাতে কলম্বিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে তিন ম্যাচ পর প্রথম জয় পেল আর্জেন্টিনা। গুরুত্বপূর্ণ এই জয়ে হাসি ফুটল কোচ মার্টিনোর মুখে। আগের তিন ম্যাচে জয়হীন থাকায় আর্জেন্টিনার কোচ হিসেবে মার্টিনোর ভবিষ্যৎ পড়ে অনিশ্চয়তায়। চার ম্যাচে আর্জেন্টিনার পয়েন্ট হলো ৫ ; কলম্বিয়ার ৪ পয়েন্টই থাকল।

নিজেদের সর্বশেষ ম্যাচে আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়া ড্র করেছিল। কলম্বিয়া তো একটি জয়ও পেয়েছিল। কিন্তু আলবেকেসেণিস্তেরা ছিল জয়হীন। সুপার ক্ল্যাসিকোতে ব্রাজিলের বিপক্ষে জয় না পাওয়া কেঁদেছিলেন মার্কোস রোহোর মতো তরুণ ফুটবলাররা। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে এত বাজে যে কখনও শুরু করেনি সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। তাই লিওনেল মেসি, সার্জিও আগুয়েরো ও কার্লোস তেভেজের মতো সেরা তারকাবিহীন আর্জেন্টিনার জন্য এ ম্যাচটি ছিল অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মাস্ট উইন এ ম্যাচের নায়ক লুকাস বিগলিয়া। তার গোলই যে ছন্দে ফিরল দু’বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
ঘরের মাঠে ম্যাচ বলে পরিষ্কার ফেভারিট ছিল কলম্বিয়া। কিন্তু পুরো ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছেন অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া-এজেকুয়েল লাভেজ্জিরা। একটি জয়ের নেশায় থাকা আর্জেন্টিনা একের পর এক আক্রমণ শানাতে থাকে কলম্বিয়ার রক্ষণভাগে। তবু স্বাগতিকদের রক্ষণ দেয়াল ভেদ করতে পারেননি তারা। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের বয়স যখন ২০, তখনই কলম্বিয়ানদের হতাশ করে উচ্ছ্বাসে ভেসে যান আর্জেন্টাইনরা। লুকাস বিগলিয়ার গোলে উল্লাসে মেতে ওঠে তারা। ডি-বক্সে ঢুকে পড়ে ডান দিক থেকে লাভেজ্জি বল বাড়িয়েছিলেন মাঝে। গোলরক্ষক ডেভিড অসপিনা আর সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার ক্রিশ্চিয়ান সাপাতাকে ফাঁকি দিয়ে বল এসে পড়ে লুকাস বিগলিয়ার পায়ে। ফাঁকা জালে বল ঢোকাতে কোনো ভুল করেননি লাৎসিওর এ মিডফিল্ডার। জাতীয় দলের হয়ে এটাই বিগলিয়ার প্রথম গোল।
এগিয়ে যাওয়ার পর কিছুটা মিইয়ে যায় আর্জেন্টিনা। সে সুযোগে আক্রমণের ধার বাড়াতে থাকে কলম্বিয়া। ম্যাচের ৩৪ মিনিটে তো গোলটা প্রায় পরিশোধই করে ফেলেছিল কলম্বিয়া। মোরির ভুলে ডি-বক্সে বল পেয়ে গিয়েছিলেন কলম্বিয়ার স্ট্রাইকার কার্লোস বাক্কা। বল আয়ত্তে নিয়ে আর্জেন্টিনাকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরো। এদিন আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগ ছিল বেশ গোছানো। কলম্বিয়ার সেরা তারকা হামেশ রদ্রিগেজকে নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে দেননি অতিথি দলের খেলোয়াড়রা; বরং রক্ষণ অটুট রেখে মাঝেমধ্যে পাল্টা আক্রমণে গিয়ে স্বাগতিক রক্ষণ দুর্গে হামলা চালায়। সে রকমই একটি আক্রমণে বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। গঞ্জালো হিগুয়াইনের বাড়ানো বল পেয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন ডি মারিয়া। কিন্তু গোলরক্ষকে একা পেয়ে ডান পোস্টেও বাইরে দিয়ে বল মেরে দারুণ সুযোগ নষ্ট করেন পিএসজির এ মিডফিল্ডার।
প্রথমার্ধে কলম্বিয়ার একটি পেনাল্টি আবেদন নাকচ করে দেন রেফারি। ডি-বক্সের ভেতরে কলম্বিয়ার তিওপিলো গুতিরেজকে ফেলে দেন আর্জেন্টিনার র‌্যামিরো ফিউনেস মোরি। তবে তা রেফারির চোখ এড়িয়ে গেলে হতাশা নেমে আসে হোসে পেকারমেনের দলের মাঝে। অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধে দু’দলই গোলের জন্য মরিয়া আক্রমণ চালায়। তবে কোনো দলই গোলের পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। ম্যাচের ৯০ মিনিটে আর্জেন্টিনার বদলি হিসেবে মাঠে নামা পাবলো দিবালার শট পোস্টে লেগে ফিরে এলে হতাশ হতে হয় আর্জেন্টিনাকে। যোগ করা সময়ে আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরোর ভুলে সমতায় ফেরার সুবর্ণ এক সুযোগ পেয়েছিল কলম্বিয়া। রোমেরো গোলপোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এলে ফাঁকা পোস্টে শট নিতে ব্যর্থ হন জেসন মুরিলো। ফলে ঘরের মাঠে ১-০ গোলের হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় কলম্বিয়াকে। আর স্বস্তির জয়ে মাঠ ছাড়ে জেরার্ডো মার্টিনোর দল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *