ঐশীর ভাগ্য নির্ধারণ আজ

Slider নারী ও শিশু

 

2015_11_12_01_37_12_X26HnVUA6h4YtKmiwenSWqdOiNyHji_original

 

 

 

 

ঢাকা : পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা মামলায় দায়ের করা মামলার রায় আজ বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে। এ মামলায় তাদের একমাত্র মেয়ে ঐশী রহমান এবং তার দুই বন্ধুর সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে রায় হবে।

গত ৪ নভেম্বর মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদ রায়ের জন্য এ দিন নির্ধারণ করেন।

ঐশী ছাড়াও এ মামলায় অপর দুই আসামি হলেন- ঐশীর বন্ধু আসাদুজ্জামান জনি (কারাগারে আটক) ও মিজানুর রহমান রনি (বর্তমানে জামিনে রয়েছে)।

অপর আসামি গৃহকর্মী খাদিজা আক্তার সুমি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার মামলাটির বিচার চলছে শিশু আদালতে। গত বছরের ২০ মে সুমির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে সুমিকে জামিন দেন শিশু আদালতের বিচারক জাকিয়া পারভিন। গত বছরের ১ জুন গাজীপুরের কিশোর সংশোধন কেন্দ্র থেকে মা সালমা বেগমের জিম্মায় জামিনে মুক্তি পেয়েছে সে।

গত ২০ অক্টোবর ও ৪ নভেম্বর পক্ষে-বিপক্ষে আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন উভয়পক্ষের আইনজীবীরা। রাষ্ট্রপক্ষে  স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মাহবুবুর রহমান ও আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট ফারুক আহমেদ ও মাহবুবুর রহমান রানা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।

এ মামলায় ৫৭ সাক্ষীর মধ্যে বাদী ঐশীর চাচা মো. মশিহুর রহমান রুবেলসহ ৩৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।

গত ১৩ অক্টোবর মামলাটির প্রধান আসামি ঐশীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেন আদালত। আত্মপক্ষ সমর্থনকালে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে তার বক্তব্য লিখিতভাবে আদালতে দাখিল করেন ঐশী। অন্য দুই আসামি জনি ও রনিও নিজেদের নিদোর্ষ বলে দাবি করে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন।

বয়সের সমর্থনে একটি সনদপত্র আদালতে দাখিল করে ঐশী দাবি করেন, ঘটনার সময় তিনি অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন। পুলিশ নির্যাতন করে তার স্বীকারোক্তি আদায় করে। তার বাবা-মা যখন খুন হন তখন তিনি বাসায় ছিলেন না। বন্ধুর বাসায় হুইস্কি খেয়ে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিলেন। তার বাবা-মাকে কে বা কারা খুন করেন তাও তিনি জানেন না।

এদিকে অ্যাডভোকেট মো. জসীম উদ্দিন, অ্যাডভোকেট সাহাবুদ্দিন আহমেদ, অ্যাডভোকেট ফারুক আহমেদ, অ্যাডভোকেট তুহিন হাওলাদার আসামিদের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ মামলায় আনীত অভিযোগ প্রমাণে সর্বতোভাবে ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে আসামিদের বেকসুর খালাস চান তারা।

সর্বশেষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করতে পেরেছেন এবং সমাজে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করবেন আদালত।

 

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজেদের বাসা থেকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (পলিটিক্যাল শাখা) ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পরদিন ঐশী গৃহকর্মী সুমীকে নিয়ে রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করে। পরে গ্রেপ্তার করা হয় অন্য দুই আসামি রনি ও জনিকে। এর মধ্যে গত ৩১ মার্চ আসামি রনির জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।

মামলাটিতে ২০১৪ সালের ৯ মার্চ ডিবির ইন্সপেক্টর মো. আবুয়াল খায়ের মাতুব্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। গত বছরের ৬ মে ঐশীসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন মহানগর দায়রা জজ আদালত।

২০১৩ সালের ২৪ আগস্ট আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন ঐশী। পরে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে স্বীকারোক্তি নেয়া হয়েছিল দাবি করে ৫ সেপ্টেম্বর স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়। আদালত তা নথিভূক্ত রাখার নির্দেশ দেন।

ঐশীদের মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হলে গত বছরের ৩০ নভেম্বর নতুন করে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার প্রায় ১ বছর পর এ রায় ঘোষণা করা হবে।

বাংলামেইল২৪ডটকম/ পিএলএস/ এস/ জেএ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *