শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত বাচ্চাদের শারীরিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বৃদ্ধির প্রতি বিশেষ নজর দিতে হয়। ছোটবেলা থেকেই বিশেষ পরিচর্যা করলে শিশুর বুদ্ধির সঠিক বিকাশ হওয়া সম্ভব। সেজন্য প্রয়োজন অনুশীলন ও পরিচর্যা। তাকে সহজ কিছু অনুশীলনের মাধ্যমে শিখতে সাহায্য করা যেতে পারে। এসব শেখার ক্ষেত্রে সন্তানের সবচেয়ে ভালো শিক্ষক হতে পারেন আপনি নিজেই। তাই আসুন জেনে নেয়া যাক শিশুর বুদ্ধি বাড়িয়ে নেয়ার সহজ উপায়গুলো সম্পর্কে।
ভয় দেখিয়ে বা মারধর করে শিশুকে শেখাতে যাবেন না। এভাবে শেখাতে গেলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। ভাবনার জগতকে প্রসারিত করতে রচনা লেখা, মজার ছবি আঁকা বা হাতের কাজ দিতে পারেন। সন্তানের কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করলে তার মস্তিষ্কের যত্ন নেয়াটা সবচেয়ে জরুরি। সন্তানকে পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। দেশীয় সব ধরনের ফল সবজি আপনার শিশুর জন্য বরাদ্দ করুন যথেষ্ট পরিমানে।
স্কুলের শিক্ষকদের পড়ানোর পদ্ধতির খোঁজখবর নিন, প্রয়োজনে সক্রিয় হোন। শিশুকে পড়তে দিন ওর প্রবণতা অনুযায়ী। তবে পড়ার বিষয়গুলোকে মজার করে তুলতে আপনি নিজেও তার পাঠ্যবই পড়ুন। আগ্রহ দেখান অনেক বেশি, তাহলে সেও আগ্রহ পাবে।
শিশুকে যথাসম্ভব প্রকৃতির সান্নিধ্যে রাখুন। ঘাস, ফড়িং, ফুল, ফল, পাখি, গাছ, পাতা ও প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে শিশু অনেক কিছু শিখতে পারে। তার মনে সজিবতা বিরাজ করে। কৃত্রিমতা এড়িয়ে বাস্তবতা তাকে সঠিক জ্ঞান দিতে সক্ষম।
চাপ না দিয়ে শিশুর শেখার পরিবেশ হতে পারে হাসি আর খেলার মাঝে। শুধু পড়াশুনা নয়, শিশুর জন্য পর্যাপ্ত খেলার সুযোগও করে দিন। পড়া শেখার পাশে পাশে শিশুকে তার পছন্দের ছবি আঁকতে দিন। নাচ, কবিতা, আবৃতি বা গানও করতে দিতে পারেন।
অন্যের সন্তানের সঙ্গে নিজের সন্তানের তুলনা করে সব সময় ভৎর্সনা দেয়া ঠিক নয়। যখন তখন বকাবকি বা শাস্তি দেয়া নয়, তাকে বোঝার চেষ্টা করতে হবে।
ভালোভাবে শেখার জন্য যথেষ্ট প্রেরণা দিন, শিশুকে মাঝে মধ্যে ভালো কাজের জন্য পুরুস্কার দিলে আরও বেশি উৎসাহিত বোধ করে। তার সঙ্গে গল্প করতে হবে, এতে তার কল্পনা শক্তি বেড়ে যাবে অনেক বেশি।
টিভি দেখা থেকে হয়ত বিরত করা যাবে না, তবে শিশুকে বেশি টিভি দেখতে দেবেন না। কী অনুষ্ঠান কতক্ষণ দেখছে, অভিভাবকেরা সেদিকে অবশ্যই নজর দেবেন। শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান বেশি দেখার জন্য উৎসাহ দিন।
কম্পিউটার আজকের শিক্ষাব্যবস্থায় জরুরি। তবে চট করে ইন্টারনেট কানেকশন না দেয়াই ভালো। দিলেও সন্তান যেন আপনার উপস্তিতিতে ব্যাবহার করে সে দিকেও লক্ষ্য রাখবেন।
বাচ্চাকে ধর্মীয় গোড়ামি নয়, ধর্মের নীতি নৈতিকতার আলোকে একজন সৎ মানুষ হয়ে গড়ে ওঠার শিক্ষা দিতে হবে। পরিবারেই ধর্মের আধুনিক চর্চা থাকা জরুরি। বাবা-মায়ের আদর্শিক চলাফেরা বাচ্চার কোমলমতি মনকে ইতিবাচক প্রভাবিত করে।
স্বার্থপর হতে নয়, অন্যের আবেগকে জেনে বুঝে কাজ করতে শিক্ষা দিন। মানুষের পাশে থাকুন, আপনাকে দেখে সন্তানও শিখবে সামাজিক মানুষ হতে।