অ্যাকুস্টিক যন্ত্রের অভাবে গানের আবেদন কমে যাচ্ছে’

Slider বিনোদন ও মিডিয়া

 

 

 97533_shahnaz-belly-1

জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী শাহনাজ বেলী। ফোক গানে অনেক আগেই নিজের একটি অবস্থান তৈরি করেছেন। বিভিন্ন অ্যালবামের মাধ্যমে উপহার দিয়েছেন বেশ কিছু জনপ্রিয় গান। বিভিন্ন আঙ্গিকের ফোক গানের বাইরে লালনের গানেও সমান জনপ্রিয়তা তার। লালনের অনেক নতুন গান তার কণ্ঠে শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে। এরই মধ্যে প্রায় একশ’ অ্যালবাম প্রকাশ হয়েছে শাহনাজ বেলীর। পাশাপাশি শুরু থেকেই দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্টেজ শোতেও রয়েছে তার ব্যাপক কদর। বর্তমান ব্যস্ততা ও গানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আজকের ‘আলাপন’-এ কথা বলেছেন শাহনাজ বেলী। তার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ফয়সাল রাব্বিকীন

কেমন আছেন?
সবার দোয়ায় ভাল আছি।
ব্যস্ততা কি নিয়ে?
কিছুদিন আগেই দেশের বাইরে শো করে ফিরেছি। এখন সময় সুযোগ মিললে টিভি লাইভগুলো করছি। আর দেশের ভেতরে বিভিন্ন স্থানে শো করছি। সামনেই হয়তো আবারও দেশের বাইরে শো করতে যাবো।
কোথায় যাচ্ছেন? প্রবাসীদের সামনে গান করতে কেমন লাগে?
নভেম্বরে লন্ডনে যাওয়ার কথা রয়েছে। আমি বিভিন্ন দেশে শো করেছি। প্রবাসীরা বোধহয় ফোক গান ও এ গানের শিল্পীদের বেশি পছন্দ করেন। কারণ আমি যখন গান করি তারা আবেগআপ্লুত হয়ে পড়ে। এরকম ঘটনা অনেকবার দেখেছি। ফোক শুনলে বোধ হয় তারা বাংলাদেশটাকেই কাছে পায়, তাদের আচরণে আমার এমনই মনে হয়েছে। আর আমাদের বাংলা ফোক গান কিন্তু এখন সারা বিশ্বে জনপ্রিয়। কলকাতার বিভিন্ন চ্যানেলে এখন আমাদের ফোক গান, লালনের গান, শাহ আবদুল করিমের গান গাওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের একজন ফোকশিল্পী হিসেবে তাই আমি সব সময় গর্ববোধ করি।
নতুন অ্যালবাম করছেন?
আমি শাহ আব্দুল করিমের গান নিয়ে একটি অ্যালবাম করছি। এছাড়া রাধা রমনের গান নিয়েও অ্যালবাম করছি। এ দুটো অ্যালবাম খুব শিগগিরই শ্রোতাদের হাতে তুলে দিতে চাই। এর বাইরে সামনে লালনের গানের একটি অ্যালবামের কাজ শুরু করবো।
এ প্রজন্মে যারা ফোক গান গাইছে তারা কেমন করছে বলে মনে হয় আপনার?
তরুণ প্রজন্ম অনেক ভাল গান করছে। তবে তরুণ প্রজন্মের শিল্পীদের নিজস্ব কোন ফোক গান নেই। তারা অন্যের গানই বেশি গাইছে। দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তারা মমতাজ আপা, বারী সিদ্দিকী ভাই অথবা আমার গান গাইছে। কিন্তু তরুণ প্রজন্মের শিল্পীরা গীতিকার-সুরকার ও শিল্পীর নাম বলে না। দেখা গেল আমি লালনের একটি নতুন গান করেছি। সেটা আমার কণ্ঠেই জনপ্রিয়তা পেল। কিন্তু এ প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা গাওয়ার সময় মূল শিল্পীর নাম বলে না। দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন অ্যালবাম থেকে সংগ্রহ করেই তারা এসব গান প্র্যাকটিস করছে ও গাইছে। কিন্তু আমি মনে করি সম্মান দিলে তার সম্মান আরও বাড়ে। সুতরাং এই বিষয়গুলোতে তরুণ প্রজন্মের আরও সচেতন হওয়া উচিত।
এখন অডিও ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা কেমন মনে হচ্ছে আপনার?
এখন মনে হচ্ছে খানিক ভাল। তবে আসল বিষয়টি আমরা হারাতে বসেছি। আর সেটা হলো এখন গানে অ্যাকুস্টিক এর ব্যবহার কমে গেছে। অ্যাকুস্টিক যন্ত্রের অভাবে গানের আবেদন কমে যাচ্ছে। দোতরা, বাঁশী, বেহালার মাধ্যমে গান করতে আমার বেশি ভাল লাগে। গানের মূল আবেদনটা এসব বাদ্যযন্ত্রের মাধ্যমে পাওয়া যায়। অনেকে ফোক গান ফিউশন করছেন। আমি এই ফিউশনের পক্ষে নই। কারণ এটা করতে গিয়ে গান তার ধারা হারাচ্ছে। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে গেলে দেখা যায় অতি প্রযুক্তির মাধ্যমে গাইতে হচ্ছে। সেটা আসলে মনের বিরুদ্ধে করতে হচ্ছে আমাদের। কিন্তু আমি ব্যাক্তিগতভাবে চাই অ্যাকুস্টিক যন্ত্রের মাধ্যমে গান করতে। তরুণ প্রজন্মের উচিত অ্যাকুস্টিক যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ানো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *