শিক্ষা বোর্ডে পাথর-লাঠি-কাঠ দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা

Slider শিক্ষা

সদ্য প্রকাশিত এইচএসসির ফল বাতিল করে নতুন করে মূল্যায়নের দাবিতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ঘেরাও করেছেন একদল শিক্ষার্থী। এসময় শিক্ষা বোর্ডের কর্মচারীদের হামলায় ৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

রোববার (২০ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়েছে।

আহতরা হলেন- সরকারি শাহবাজপুর কলেজের মো. সাগর (১৭), নারায়ণগঞ্জ কলেজের শাহরিয়ার (১৮), কিশোরগঞ্জের ওয়ালি নেওয়াজ খান কলেজের ওয়াহিদ (১৯), বাঘাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের ফাহমিদা হোসেন (১৭) ও গোপালগঞ্জের শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজের আশুতোষ (১৮)।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের প্রতি বৈষম্য করে রেজাল্ট প্রকাশ করেছে। আমাদের এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্টের মূল্যায়ন করে এইচএসসি রেজাল্ট দেওয়ার কথা। কিন্তু একজন শিক্ষার্থীর সব সাবজেক্টে এ+ পেয়েছে কিন্তু একটি সাবজেক্টে সে ডি গ্রেট পেয়েছে, এটা কেন করল? আমাদের কথা হচ্ছে যেহেতু আমাদের এসএসসি রেজাল্ট দেখে মূল্যায়ন করার কথা ছিল, সেটা বিবেচনা করে এইচএসসি রেজাল্ট প্রকাশ করা উচিত ছিল। কিন্তু আমাদের রেজাল্ট অনেক খারাপ হয়েছে। তাই আমরা শান্তিপূর্ণভাবে শিক্ষা বোর্ডের সামনে অবস্থান করছিলাম। কিন্তু শিক্ষা বোর্ডের কর্মচারী-কর্মকর্তারা ভেতর থেকে পাথর লাঠি দিয়ে, স্টিলের স্কেল দিয়ে আঘাত করে আমাদের রক্তাক্ত করে।

তিনি আরো জানান, আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে কেন শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হামলা করল, রক্তাক্ত করল এর বিচার চাই। আমরা তো তাদের সঙ্গে কোনো মারামারি বা কোনোকিছু করিনি। আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানের মাধ্যমে দাবিগুলো তাদের কাছে জানাচ্ছিলাম, এটাই আমাদের অপরাধ।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. ফারুক বলেন, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে আহত অবস্থায় ৫ শিক্ষার্থীকে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়েছে। বর্তমানে জরুরি বিভাগে তাদের চিকিৎসা চলছে।

এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় কয়েকশ শিক্ষার্থী ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের মূল ফটকে অবস্থান নেন। এরপর পৌনে ২টার দিকে তারা শিক্ষা বোর্ডের মূল ফটকের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, বাতিল ৬টি পরীক্ষা যে পদ্ধতিতে ম্যাপিং করে ফলাফল তৈরি করা হয়েছে তাতে চরম বৈষম্য তৈরি হয়েছে। সিলেট মাদ্রাসা বোর্ডের মাত্র ৩টি পরীক্ষা হয়েছে, কিন্তু তাদের সাবজেক্ট ম্যাপিং করায় রেজাল্ট ভালো হয়েছে। অথচ আমরা ভালো পরীক্ষা দিয়েও ফেল করেছি। এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান।

আন্দোলনে চট্টগ্রাম থেকে এসেছেন শাফিন মাহমুদ। তিনি জানান, এবার যে ফলাফলটা হয়েছে এটা চরম বৈষম্যের। এবার যত বেশি পরীক্ষা হয়েছে, যে বোর্ডের শিক্ষার্থীরা তত বেশি পরীক্ষা দিয়েছে, তারা তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোনো বোর্ডে ৬টি পরীক্ষা দিয়েছে কেউ ৩টি পরীক্ষা দিয়েছে। অথচ রেজাল্টের ক্ষেত্রে কম পরীক্ষা দেওয়া বোর্ডের রেজাল্ট ভালো হয়েছে। এই বৈষম্য আমরা মানি না।

অবিলম্বে ঘোষিত ফলাফল বাতিল করে নতুন পদ্ধতিতে রেজাল্ট প্রকাশের দাবি জানান তিনি।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর তপন কুমার সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, একদল শিক্ষার্থী পরীক্ষার ফল বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছে জানতে পারলাম। তাদের সঙ্গে কথা বলছি, আশা করি একটা সমাধান হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *