বিআরটিএ চেয়ারম্যানকে একহাত নিলেন ওবায়দুল কাদের

Slider ফুলজান বিবির বাংলা


৪৩ বছরের পুরনো গাড়ি সড়কে চলার ঘটনায় বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদারকে একহাত নিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, সড়কে ৪৩ বছরের পুরনো গাড়ি কি করে চলে? এতদিন কি তাহলে বিআরটিএ ঘুমিয়ে ছিল?

বুধবার (১৫ মে) বনানীতে বিআরটিএর সদর কার্যালয়ে আয়োজিত সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা পরিষদের সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

গত ২২ এপ্রিল মোটরসাইকেলে ঘুরতে বের হয়ে বেলা সাড়ে তিনটায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার জিয়ানগর এলাকায় বাসের ধাক্কায় প্রাণ হারান চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের দুই শিক্ষার্থী। পরে জানা গেছে, ওই বাসটি ছিল ৪৩ বছরের পুরোনো। লক্করঝক্কর বাসটি রাস্তায় চলছিল ফিটনেস ছাড়াই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘৪৩ বছরের পুরনো গাড়ি কীভাবে রাস্তায় চলে? এতদিন বিআরটিএ কি নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়ে ছিল?’

এমন সময় কথা বলার চেষ্টা করেন বিআরটিএর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার।

তখন ওবায়দুল কাদের আরও উচ্চস্বরে বলেন, ‘৪৩ বছর, ফোর্টিথ্রি ইয়ার্স। চট্টগ্রামে যে গাড়ি এক্সিডেন্ট করেছে, তার বয়স ৪৩ বছর। সেটা কি আপনাদের নজরে আসে না?’

তিনি বলেন, এই শহরের গাড়িগুলোর দিকে তাকানো যায় না। আমি টেলিভিশনের লক্ষ্য করি, আফ্রিকার ছোট ছোট দেশগুলোর রাজধানীতেও গাড়ি চলে। এরকম লক্করঝক্কর, এরকম গরিব গরিব চেহারার গাড়ি নেই। এর চেয়ে মফস্বলের গাড়িগুলো বেটার। এই কথাটা আমি কত যে বললাম! আপনারা একটা কারণে ব্যবস্থা নিতে পারছেন না, সেটা হলো ডাম্পিং করার জায়গা নাই। আজকে ডাম্পিং করলে পরের দিন দেখা যাবে ওই সমস্ত গাড়ি রাস্তায় নাই। যারা এবার এই সমস্ত কথা বলেন, তারাই পরের দিন বলেন জনদুর্ভোগ হচ্ছে। বিআরটিএর অনেক প্রোগ্রাম, অনেক প্ল্যান তারপর রেজাল্টটা কী?

সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, আমি রেজাল্ট চাই তিনটা। একটা হচ্ছে যানজটমুক্ত, আরেকটা হচ্ছে দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ এবং সড়কে পরিবহনের শৃঙ্খলা ফেরানো।

বিআরটিএর চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রতিনিয়ত আমাকে এগুলোর জন্য কথা শুনতে হয়। গত ঈদে আগের চেয়ে ঈদের পরে দুর্ঘটনা বেশি এবং সবচেয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এগুলো তো মন্ত্রী হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবেই আমার কাছে কষ্ট লাগে। এই বছরের চাইতে আগামী বছর দুর্ঘটনা কম হবে, এটাই তো হওয়া উচিত। না হলে আমরা টিম হিসেবে কাজ করছি কেন। আপনারা ডিজিটালাইজেশন করেছেন, নানা কিছু করে ফেলেছেন। আসলে এগুলোর তো রেজাল্ট কোনো কিছু পাচ্ছি না। রেজাল্ট না পেলে এগুলো করে কী লাভ? কথা তো শুনতে হয় আমাকে। বিআরটিএ-এর চেয়ারম্যানকে তো কেউ কিছু বলে না।

সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, সড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপস, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *