গাজীপুরে বর্ষবরণে শহুরে মানুষের উপচে পড়া ভীড় নিভৃত পল্লীতে

Slider গ্রাম বাংলা


মো: জাকারিয়া/ ওয়াসিফ আহমেদ কিশোর, গাজীপুর:: কাল বৈশাখী ঝড়ে মানুষ যেখানে ঘরমুখো হয়, ঠিক তেমনি আজকের বর্ষবরণে মানুষ গ্রামমূখী হয়েছে। দিনের বেলায় শহরে বর্ষবরণের উৎসব। বিকেল থেকে গ্রামমুখী শহুরে মানুষ। বিভিন্ন বাহনে করে শত শত মানুষ অসংখ্য গ্রামে গড়ে উঠা ডেরায় ডেরায় রেস্টুরেন্টে চলে গেছে পরিবার পরিজন নিয়ে। নিভৃত পল্লীতে প্রকৃতিঘেরা রেস্টুরেন্টগুলো জমে উঠেছে উৎসব আর আমেজে।

জানা যায়, গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার ৭ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা। টঙ্গীতে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ১৫ টি ওয়ার্ডে এখন উৎসবের আমেজ। দিনের বেলায় সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে বর্ষবরণ করে বিকেল থেকেই শহরমুখী হয়ে গেছে মানুষ। টঙ্গী সাতাইশ, বনমালা রেলক্রসিং, হায়দরাবাদ, গুটিয়া, কালিগঞ্জের জামালপুর, বক্তারপুর, দালান বাজার, জাঙালিয়া, আজমতপুর সহ অসংখ্য গ্রামে গড়ে উঠা শত শত রেস্টুরেন্টে এখন মানুষের উপচে পড়া ভীড়। একই সাথে পুবাইল, কানাইয়া, কয়েড় ও আমতলী সহ আশপাশ এলাকার গ্রামগুলেতে গড়ে উঠা অরণ্যের ভেতরে শত শত রেস্টুরেন্টে এখন বসার জায়গা নেই।

একই অবস্থা গাজীপুর সদর, শ্রীপুর, কাপাসিযা, কালিয়াকৈর সহ পুরো জেলায়। গ্রামের রেষ্টুরেন্টের পাশাপাশি শীতলক্ষা ও তুরাগ নদীর তীর ও বিভিন্ন সেতুতে ছিল উপচে পড়া মানুষের ভীড়। শ্রীপুরের বরামা সেতুতে ছিল সবচেয়ে বেশী উপচে পড়া ভীড়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, পহেলা বৈশাখ ও ঈদুল ফিতরের ছুটিতে একাকার উৎসবপ্রেমী মানুষের বর্ষবরণের আনন্দ উচ্ছাসে পরিণত হয়েছে। বাঁধভাঙা উচ্ছাস শহর ছাপিয়ে চলে গেছে বিভিন্ন গ্রামের অসংখ্য ডেরায় গড়ে উঠা ছোট ছোট রেস্টুরেন্টে। সন্ধ্যার পর বিনোদন এলাকা গাজীপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে শত শত রেস্টুরেন্ট গুলোতে উপচে পড়া ভীড় পড়েছে। আলো আর আঁধারে চলা রেস্টুরেন্ট গুলো এখন বর্ষবরণের প্রাকৃতিক ভ্যানুতে পরিনত হয়েছে।

টঙ্গীর বনমালা রেলক্রসিং এ পরিবার পরিজন নিয়ে বর্ষবরণ করতে আসা মোস্তফা কামাল বলেন, প্রচন্ড গরমে দিনে বের হইনি, তাই বিকেলে পরিবার নিয়ে আসলাম একটু আনন্দ বিনোদন করার জন্য।
জাঙ্গালিয়া এলাকায় শীতলক্ষ্যার তীরে রেস্টুরেন্টে পরিবার পরিজন নিয়ে বর্ষবরণ করতে আসা তৈয়বুর রহমান বলেন, শহরে ভালো লাগে না, গ্রামে নদীর পাড়ে এসেছি বিনোদনের জন্য।
কালিগঞ্জের ছৈলাদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আমরা উৎসবমুখর পরিবেশে বর্ষবরণ উদযাপন করেছি।
বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ডাঃ বোরহান উদ্দিন অরণ্য বলেন, শহরে বিনোদনের জন্য পর্যাপ্ত ভ্যানু না থাকায় মানুষ এখন গ্রামমুখী। বিশেষ করে নদী কেন্দ্রীক গ্রামের প্রকৃতি ঘেরা পরিবেশে সময়ের তাগিদে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ডেরায় শত শত রেস্টুরেন্ট। মানুষ ছুটির দিনে বা বিশেষ দিবসে শহর ছাপিয়ে গ্রামের প্রকৃতি পল্লীতে গড়ে উঠা রেস্টুরেন্টে পরিবার পরিজন নিয়ে চলে যায় একটু বিনোদনের জন্য। বিনোদনের জন্য তিনি প্রয়োজনীয় বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলার দাবী জানান।

এদিকে গাজীপুরের কালীগঞ্জে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলা নববর্ষকে বরণ উৎসব করেছে কালিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন।

দিবসটি উপলক্ষে আজ রবিবার সকালে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত সার্বজনীন মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। পরে উপজেলা শহীদ ময়েজউদ্দিন অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূরী তাসমিন উর্মি। পরে জাতীয় সঙ্গীত ও ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’ গানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *