ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে রাজধানী ছেড়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫ মিলিয়নের বেশি মানুষ। ফলে ঢাকা এখন প্রায় ফাঁকা। এই ফাঁকা ঢাকাকে নিরাপত্তা দিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় চলছে পুলিশের টহল। গুরুত্বপূর্ণ সড়কে বসেছে চেকপোস্ট। কাউকে সন্দেহজনক মনে হলেই পুলিশ তাকে তল্লাশি করছে।
বুধবার (১০ এপ্রিল) রাজধানীর বাড্ডা, গুলশান, হাতিরঝিল ও রামপুরা এলাকা ঘুরে পুলিশের এমন তৎপরতা দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, এসব এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। চেকপোস্টে আসা গাড়ি ও মানুষকে সন্দেহজনক মনে হলে তল্লাশি করা হচ্ছে। প্রধান সড়কের পাশাপাশি অলিগলিতেও টহল জোরদার করেছে পুলিশ। কিছুক্ষণ পরপর এসব এলাকায় পুলিশের টহল গাড়ি সাইরেন বাজিয়ে যাতায়াত করছে। এসময় রাস্তায় সন্দেহজনক কিছু দেখলে তল্লাশিসহ জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
যেকোনো মিষ্টি খাবারের রেসিপিতে থাক, প্রাকৃতিক ও নিরাপদ জিরোক্যাল-এর মিষ্টি স্বাদ
মাঠ পর্যায়ে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফাঁকা ঢাকার নিরাপত্তা দিতে গতকাল (মঙ্গলবার) থেকে পুলিশের চেকপোস্ট ও টহল জোরদার করা হয়েছে। ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত পুলিশের চেকপোস্ট ও টহল জোরদার থাকবে। দিনরাত ২৪ ঘণ্টা এই চেকপোস্ট ও টহল থাকবে পুলিশের। বিশেষ করে রাতে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি প্রতিরোধে পুলিশের স্পেশাল টিম মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। ঈদের ছুটিতে কোনো ধরনের অপরাধ যেন সংঘটিত হতে না পারে, সেই জন্য তৎপর রয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ
ঈদের ছুটিতে রাজধানীর গুলশান এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে ডিএমপির গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ শাহিনুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার আগে থেকেই আমরা গুলশানের নিরাপত্তা জোরদার করেছি। প্রতিনিয়ত গুলশান এলাকায় আমাদের টহল টিম কাজ করে যাচ্ছে। এ ছাড়া গুলশানের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। ঈদের ছুটিতে যেন গুলশান এলাকায় কোনো ধরনের অপরাধ সংঘটিত হতে না পারে সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
ঈদের ছুটিতে রাজধানীর হাতিরঝিল ও আশপাশের এলাকার নিরাপত্তার নিয়ে ডিএমপির হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মো. আওলাদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফাঁকা ঢাকার নিরাপত্তার বিষয়ে ডিএমপি সদর দপ্তর থেকে বিশেষ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ফাঁকা ঢাকার নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য অন্য সময়ের তুলনায় আমাদের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির মতো ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য আমাদের পেট্রোলিং চেকপোস্ট ব্যবস্থা ইতোমধ্যেই জোরদার করা হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার (৫ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ঢাকা ছাড়ার আগে নগরবাসীকে বেশ কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেগুলো মধ্যে রয়েছে–
১। গ্যাসের ও পানির লাইনসহ সব ধরনের লাইট, ফ্যানের সুইচ, বৈদ্যুতিক প্লাগ বন্ধ করে বাসা থেকে বের হবেন। বাসা বাড়িতে অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে ছুটি শেষে বাড়ি থেকে ফিরে এসে দরজা-জানালা খুলবেন। ঘরে জমে থাকা গ্যাস বের না হওয়া পর্যন্ত কোনো অবস্থাতেই গ্যাসের চুলা জ্বালানো কিংবা বৈদ্যুতিক সুইচ অন করবেন না।
২। বাসাবাড়িতে সিসি ক্যামেরা বসাতে হবে। পূর্বে বসানো সিসি ক্যামেরা সচল আছে কি না পরীক্ষা করতে হবে।
৩। বাসার চারপাশে বৈদ্যুতিক আলোর ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৪। নগদ টাকা কিংবা স্বর্ণালংকার ব্যাংক কিংবা নিকটাত্মীয়দের কাছে নিরাপদে রেখে যাবেন।
৫। রাতে কিংবা দিনে একসঙ্গে মুখে মাস্ক এবং মাথায় ক্যাপ পরিহিত অপরিচিত সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের গতিবিধি নজরদারি করতে হবে। প্রয়োজনে ৯৯৯ ফোন দিতে হবে।
৬। মোটরসাইকেল চুরি রোধে অ্যালার্ম লাগাতে হবে। এতে কেউ মোটরসাইকেল স্পর্শ করলেই অ্যালার্ম বেজে উঠবে। লক করার কাজে স্টিলের তৈরি মেরিন অ্যাংকর চেইন ব্যবহার করতে হবে। মোটরসাইকেলে জিপিএস ট্র্যাকার লাগাতে হবে এবং চাকাতে উন্নত মানের ডিস্ক লক ব্যবহার করতে হবে।