প্রধানমন্ত্রীকে চেয়ারপারসন করে পিপিপি বিল চূড়ান্ত

জাতীয়

NP_184978424
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রীকে গভর্নিং বডির চেয়ারপারসন করে ‘সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) বিল-২০১৫ প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

সংসদের আসছে সপ্তম অধিবেশনের প্রথম কার্য দিবসেই প্রতিবেদন উত্থাপন কর‍া হবে বলে জানিয়েছেন কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।

রোববার (২৩ আগস্ট) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির ১৮তম বৈঠকে এ প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়।

গত ১ফেব্রুয়ারি বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন সংসদ কাজে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।

বিলটি উত্থাপনের দিন ২ সপ্তাহের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য খসড়া আইনটি সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। পরে সংসদের কাছ থেকে সময় বাড়িয়ে নেয় কমিটি।

বিলটি পরীক্ষা করতে একটি উপ-কমিটিও গঠন করে সংসদীয় কমিটি। দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, বৃটেন এবং ফিলিপাইনের এ সংক্রান্ত আইন পর্যালোচনা করতে এসব দেশ সফর করে উপ-কমিটি।

বৈঠক শেষে সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিলটিতে কিছু আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে এখানে বোর্ড অব গভর্নরস এর চেয়ারপারসন করা হয়েছে।’

আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমাতেই এটি করা হয়েছে জানিয়ে সুরঞ্জিত বলেন, ওই বিলে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। কমিটি উপদেষ্টা পরিষদের জায়গায় বোর্ড অব গভর্নরস বিধান রাখার সুপারিশ করেছে।

সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে বিলটি আনা হয়েছে বলে জানান তিনি।

সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা যাতে তাদের অর্থের নিশ্চয়তা পান, সে বিধান রাখা হয়েছে বিলে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিনোয়োগকারীদের বিষয়টি চিন্তা করেই বিলটি তৈরি করা হয়েছে।

‘বিলটি পাস হলে যে কেউ কোনো প্রজেক্টে বিনিয়োগ করতে পারবেন। আবার সময় মতো মুনাফা তুলে নিতে পারবেন। একই সঙ্গে প্রয়োজনে বিনিয়োগ করা অর্থ তুলে নেওয়াও যাবে,’ বলেন তিনি।

সাংবাদিকদের সুরঞ্জিত বলেন, পরিকল্পনা কমিশন থেকে অনুমোদনপ্রাপ্ত প্রকল্পগুলোতেই বিনিয়োগ করা যাবে। যখন যে মন্ত্রণালয়ের কাজ হবে তখন ওই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী পরিচালনা কমিটির সদস্য হবেন। আর প্রধানমন্ত্রী হবেন গভর্নিং বডির চেয়ারপারসন।

কমিটির পর্যালোচনার পর বিলটি ‘আধুনিক’, ‘টেকসই’, ‘বিশ্বমানের’ হয়েছে বলে দাবি করেন কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত।

বৈঠকে কমিটির সদস্য আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, তাজুল ইসলাম চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, মো. শামসুল হক টুকু, তালুকদার মো. ইউনুস, জিয়াউল হক মৃধা ও সফুরা বেগম উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া বিশেষ আমন্ত্রণে বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মূখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।

প্রস্তাবিত বিলে বলা হয়েছে, পিপিপি কার্যক্রমের পর্যালোচনা, তত্ত্বাবধান, প্রকল্পের অগ্রগতিসহ সার্বিক বিষয়ে দিক-নির্দেশনা দিতে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি বোর্ড অব গভর্নরস থাকবে। অর্থমন্ত্রী এই বোর্ডের সহ-সভাপতি এবং সদস্য সচিব হবেন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব।

পিপিপি প্রকল্পে বেসরকারি বিনিয়োগ উৎসাহিত করার জন্য সরকারের অর্থ বিভাগ মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে সরকারি গেজেটে সাধারণ বা বিশেষ আদেশের মাধ্যমে প্রণোদনা ঘোষণা করতে পারবে।

এছাড়া আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার বা জনসাধারণের বড় ধরনের কোনো দুর্ভোগ দ্রুত নিরসনের প্রয়োজনে সরকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও মন্ত্রিসভার অনুমোদন সাপেক্ষে যে কোনো প্রকল্পকে ‘জাতীয় অগ্রাধিকার প্রকল্প’ ঘোষণা করতে পারবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *