রমজান আলী রুবেল, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ একজন স্বামীহারা গার্মেন্টস কর্মী, মাওনা ল্যাব এইড হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ক্লিনিকে ডাক্তার দেখাতে যান বছরখানেক আগে। বিভিন্ন পরীক্ষা করে ডাক্তার বলেন তার জরায়ু ক্যান্সার। অপারেশন লাগবে। অনেক কষ্টে টাকা পয়সা জোগাড় করে সে অপারেশনের খরচ জোগায়। যথা সময়ে অপারেশন হয়। কিন্তু কারখানা শ্রমিক জেসমিন সেই ক্লিনিকে জরায়ু অপারেশন করিয়ে এখন পঙ্গু হয়ে গেছেন, তার দেহে ধরেছে পচন।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ভিনটেজ গার্মেন্টসে ডেনিম এ হেলপার পদে ৮ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করতেন, জেসমিন আকতার তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার করিম গঞ্জের আসাদুজ্জামানের স্ত্রী, ২০০৫ সালে প্রেম করে বিয়ে হয় জেসমিন আকতারের বিয়ের এক বছরের মাথায় জেসমিন আক্তারের কুল জোরে একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তানের জন্ম হয়।
ছেলের বয়স যখন তিন বছর তখনই স্বামী তাকে ছেড়ে চলে যায় একমাত্র সন্তানকে বুকে আগলে ধরে রেখে শ্রীপুর উপজেলার ভিনটেজ কারখানায় চাকরি করতে থাকেন ভালোই কাটছিল মা ছেলের সংসার হঠাৎ শরীরে রোগ বাসা বাধলে সুচিকিৎসার জন্য শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তার মাওনা ল্যাব এইড হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ক্লিনিকে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে তার জীবনের কাল হয়ে আসলো, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ডাক্তারের অবহেলায় এখন সে মৃত্যু শয্যায়।
সার্জারী করতে গিয়ে অনভিজ্ঞ ডাক্তার পায়ুপথের সাথে প্রস্রাবের পথ এক করে ফেলেছেন। ভুল অপারেশন করার পরও এই রোগীকে সুস্থ করার নামে দীর্ঘদিন অপচিকিৎসা করেছেন, রোগী দিন দিন আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এখন অনবরত প্রস্রাব ঝরতে থাকে। কোনো কাজ করা তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না কর্মরত কারখানায় সহপাঠীদের সাথে কাজ করতে গেলে তার শরীর থেকে দুর্গন্ধ আসছে এমন অভিযোগ দিয়ে কারখানা থেকে বের করে দেয়, বর্তমানে দেহে পচন ধরা অবস্থায় মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালিয়ে মানবতার জীবন যাপন করছেন।
দশম শ্রেণীর পড়ুয়া একমাত্র ছেলে জাহিদুল ইসলাম জুবায়ের মায়ের দুঃখ-দুর্দশা সহ্য করতে না পেরে, গাজীপুরের শান্তি কন্যা অধ্যাপিকা রোমানা আলি টুসি প্রতিমন্ত্রী বরাবর ছেলের আবেগময় চিঠি।
প্রতিমন্ত্রী বরাবর চিঠিতে যা লেখা হয়েছে হোবাহো তুলে ধরা হলো। রুমানা আলী টুসি মাননীয় সং সংসদ সদস্য, গাজীপুর-৩, ‘আমার সা সালাম নিবেন। আশা করি মহান আল্লাহ রাবুল আলামীনের দয়ায় আপনি ভালো আছেন। আমি মোঃ জাহিদুল ইসলাম জুবায়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। আমার বাড়ি কেওয়া।
একটি কটি প্রয়োজনে আপনার কাছে এই চিঠি লিখছি। জানি না শেষ পর্যন্ত তবে বিশ্বাস ক আপনার কাছে চিঠিটা পৌঁছাবে কিনা। করি, এই চিঠি টি আপনি পেলে অব্যশই পড়বেন।
আমরা খুবই দরিদ্র মানুষ। আমার বয়স যখন তিন তখন আমার বাবা মার ডির্ভোস হয়ে পড়েছিল। তখন থেকেই আমার মা একটা গারমেন্টস ফ্যাক্টরিতে হেলপার পদে চাকরি করতেন। তাতেই আমাদের সংসার চলে। এক বছর আগে আমার মায়ের জরায়ুতে চিউমার ধরা পড়ে। মাওনা চৌরাস্তার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে অপারেশন করা হয়। অপারেশনের কয়েকদিন পরে সবাই বুঝতে পারে অপারেশনটি ভুল হয়েছিল। চিউমারের অপারেশন করতে গিয়ে তারা টিউমারের সাথে মুত্রথলী ও কেটে ফেলে। দ্বিতীয়বার অপারে রেশন করা হয়েছিল মগবাজারের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে। অপারেশনটি ও সফল হয়নি। আমার মার অবস্থা খুবই খারাপ। আগামী সপ্তাহ খানেক ষর মধ্যে অপারেশন করতে না পারলে আমার মাকে বাঁচানো যাবে না।
আপনার কাছে প্রার্থনা আমার মায়ের পাশে আপনি দাঁড়াবেন। আমাদের পরিবারে পাশে আপনাকে পাবো। আমি
এখন খুব ছোট। পরিবারের জন্য কিছুই করতে পারি না। একদিন বড় হয়ে আমি আমার মায়ের জন্য দেশের জন্য কিছু করব। আমি আমার মাকে এখনি হারাতে চাই না। প্লিজ আপনি আমার মায়ের জন্য এগিয়ে আসুন। আপনার সুস্থতা ও মঙ্গল কামনা করে শেষ করছি।
ইতি
মোঃ জাহিদুল ইসলাম জুবায়ের দশম শ্রেণি, ব্যবসায়িক শাখা
আবদুল মালেক মাস্টার কিন্ডারগার্টেন এন্ড
হাই স্কুল