গ্রাম বাংলা টিম: ঈদকে নামনে রেখে ভাওয়ালের জঙ্গলে চলছে ঈদ উৎসব। ঈদের টাকা জোগাতে বেপরোয়া হয়ে উঠছে বনরক্ষকরা। একই সঙ্গে চাঙ্গাভাবে রয়েছেন ভূমি দস্যু সিন্ডিকেট।
শনিবার সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, ভাওয়াল গড়ের সর্বত্র গাছ কাটার ধুম পড়ে গেছে। সরকারী গাছ কাটা ও বনের জমি দখলের কাজ চলছে পুরোদমে। বিগত সময়ের তুলনায় ভাওয়াল গড় চুরির মাত্রা অনেকগুন বাড়িয়ে দিয়েছে ঈদের অজুহাত। চেক পোষ্ট গুলো প্রতি ট্রাকের জন্য সালামী ৪হাজার টাকা থেকে বেড়ে ৭হাজার টাকা করেছে। পুলিশের অংকটা ট্রাক প্রতি এক হাজার থেকে দুই হাজার টাকায় উন্নীত হয়েছে।
সূত্র বলছে, সরকারী বন ভূমিতে বাড়ি করার ক্ষেত্রে প্রতি শতাংশ জমির মূল্য ২০হাজার টাকা থেকে বেড়ে ৪০ হাজার টাকায় উন্নীত হয়েছে। প্রতিটি গাছ কর্তনের ক্ষেত্রে ১হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২হাজার টাকায় বাড়িয়ে দিয়েছে বন অফিস।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভূমিদস্যু সিন্ডিকেটের একজন সদস্য বলেছেন, বাড়তি টাকাটা ঈদের জন্য। ঈদ শেষে আবার আগের অংকে ফিরে যেতে হবে।
ঈদকে সামনে রখে এখন প্রতিরাতে পাচার হওয়া ট্রাকের সংখ্যাও বেড়ে গেছে। স্বাভাবিক নিয়মে প্রতি রাতে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল রুট দিয়ে ৮/১০টি বনজবৃক্ষ বোঝাই ট্রাক পাচার হতো। ঈদকে সামনে রেখে ওই সংখ্যা বেড়ে এখন দ্বিগুন হয়েছে।
বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের গোপন সূত্র বলছে, বনের জায়গার সাথে যে টুকু বনভূমি দখলের জন্য বন অফিসের সঙ্গে টানা পোড়েন চলছিলো এখন ঈদের কারণে অসমাপ্ত কাজ টুকু সমাধান করা হচ্ছে। রাতারাতি সীমানা বৃদ্ধি করে সম্প্রসারন করা হচ্ছে জবরদখলকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের পরিধি।
এদিকে বন বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তারা জবর দখলকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের নিকট ঈদের সালামীর জন্য যোগাযোগ শুরু করেছেন। গাজীপুর জেলায় ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় দুই শতাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে বন বিভাগকে ঈদের সালামী নিয়মিতভাবে দেয়া হয় বলে গোপন সূত্র নিশ্চিত করেছে।
গাজীপুর জেলায় অবস্থিত চন্দ্রা ফরেষ্ট বিট, সালনা ফরেষ্ট বিট, বাউপাড়া ফরেষ্ট বিট সবচেয়ে বেশী টাকা সালামী পায় বলে সুত্র জানিয়েছে। এছাড়া বনের জায়গায় অবৈধভাবে নির্মিত বাড়ি গুলোকেও ঈদের সালামী হিসেবে গুনতে হচ্ছে বড় অংকের টাকা। সব মিলিয়ে ভাওয়ালের জঙ্গলে এখন চলছে ঈদ উৎসব।
চোরের উপর ভাটপারী
ঈদকে সামনে রেখে বন বিভাগ সরকারী গাছ ও জমি বিক্রি করে যে টাকা আয় করছে তার কিছু অংশ চলে যাচ্ছে তদারকি সিন্ডিকেটের পকেটে। বন বিভাগের সূত্র বলছে, গাজীপুর জেলায় কর্মরত ৮/১০ জন সংবাদকর্মীকে বনবিভাগ মাসিক মাসোহারা দেয়। ঈদকে সামনে রেখে মাসোহারার পাশাপাশি বিশেষ সালামীও বরাদ্দ রয়েছে বলে সুত্রের দাবি। এছাড়া বছরের দুটি ঈদে বন বিভাগের উপরের কর্তা ব্যাক্তিদেরও দিতে হচ্ছে বড় অংকের সালামী।
আগামীকাল বৃক্ষমেলার তেলেসমাতি