নাশকতা এড়াতে রাতে চলছে গণপরিবহন

Slider ফুলজান বিবির বাংলা


বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও জামায়াতে ইসলামীর ডাকা টানা তিন দিনের অবরোধে চলছে। বুধবার (১ নভেম্বর) ছিল অবরোধের দ্বিতীয় দিন। অবরোধের প্রথম দিন মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর বিভিন্ন বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে গেছে একাধিক দূরপাল্লার গণপরিবহন। দিনের বেলায় আতঙ্ক, শঙ্কা বা ঝুঁকি নিয়ে দূরপাল্লার গণপরিবহন ছাড়ছে না কোনও কোম্পানি। সেই কারণেই অবরোধের মধ্যে দূরপাল্লার গণপরিবহন চলাচলের জন্য রাতের সড়কেই বেছে নিয়েছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। তবে এরপরও নাকশতার শিকারে পরিণত হওয়ার শঙ্কা কাটছে না।

বুধবার রাজধানীর মহাখালী, গাবতলী, সায়েদাবাদ এলাকার টার্মিনালগুলোতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সকাল থেকে দূরপাল্লার কোনও পরিবহন ছেড়ে যায়নি। যদিও বিভিন্ন কোম্পানির বাসের কাউন্টারগুলো বাস টার্মিনাল ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সেসব কাউন্টারে খোঁজ নিয়েও জানা গেছে, যেসব গন্তব্যে তাদের গণপরিবহন যাচ্ছে তারা নিরাপত্তার কারণে দিনের বেলা গণপরিবহন ছাড়ছে না। গন্তব্যে যেতে চাইলে রাতের টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। আর রাতের টিকেটের চাহিদাও বেশি। তাই আগে ভাগেই টিকিট সংগ্রহ করতে বলা হচ্ছে বিভিন্ন কাউন্টার থেকে।

গাবতলী বাস টার্মিনালঅবরোধের কারণে গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে দিনের বেলায় ছাড়ছে না কোনও বাস (ছবি: ফোকাস বাংলা)

ফায়ার সার্ভিসের তথ্য বলছে, অবরোধ শুরুতে ৩১ অক্টোবর সকাল ৬টা থেকে বুধবার ১ নভেম্বর সকাল ৯টা পর্যন্ত রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাস, প্রাইভেটকার, ট্রাক, পিকআপ, পুলিশ বক্স এবং বাণিজ্যিক পণ্যের শোরুমে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। বুধবার দেশের বিভিন্ন স্থানে এক ডজনের বেশি যানবাহনে অগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

ঢাকা থেকে বরিশালগামী সাকুরা পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার সিদ্দিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, দিনের বেলা কোনও গাড়ি চলছে না অবরোধের মধ্যে। গতকাল আমাদের দু একটি গাড়ি রাতের বেলা ছেড়েছি, কোনও সমস্যা হয়নি। তারপরও গাড়ি ছাড়ার আগে সব কিছু চিন্তা-ভাবনা করে ছাড়তে হয়।

রাজধানীর আরামবাগে গ্রীন লাইন কাউন্টারের ম্যানেজার এরশাদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, কোনও কোম্পানির গাড়ি দিনের বেলা ছাড়ছে না। যেতে চাইলে রাতের টিকেট সংগ্রহ করতে হবে। তারপরেও রাতে দুই থেকে তিনটি বাস ছাড়া হচ্ছে। আপনি যদি টিকেট সংগ্রহ করতে চান তাহলে তাড়াতাড়ি সংগ্রহ করতে হবে। না হলে পরে আর টিকেট দেওয়া সম্ভব নয়।

দিনের বেলা গাড়ি চলাচল করছে না কেন এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব এনায়েত উল্লাহ খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, অবরোধের মধ্যে কিছু গাড়ি চলাচল করছে। তবে যাত্রী না থাকার কারণে কোনও গাড়ি বিভিন্ন টার্মিনাল থেকে ছাড়তে পারছে না। যাত্রী সংকটের কারণ দেখিয়ে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে।

এদিকে পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ বিভাগ বলছে, অবরোধকে কেন্দ্র করে কোনও ধরনের নাশকতা বা অপতৎপরতার তথ্য পেলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে অবহিত করার জন্য। দ্রুত পুলিশী সহায়তার জন্য ট্রিপল নাইনে (৯৯৯) ফোন করতে দেশবাসী এবং যাত্রীদের কাছে সহায়তা চাওয়া হয়েছে।

ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বুধবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, কর্মসূচি পালন করা যেমন মানুষের অধিকার, সাধারণ মানুষেরও স্বাভাবিকভাবে রাস্তায় চলাচল করার অধিকার রয়েছে। এই স্বাভাবিক চলাচলে বাধাগ্রস্ত করলে তাদের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংঘটিত প্রতিটি ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *