শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের দাপুটে জয়

Slider খেলা


অন্য সবার জন্য যদিও নিছকই প্রস্তুতি ম্যাচ, গা গরমের সুযোগ। তবে বাংলাদেশের জন্যে উপলক্ষটা ছিল বেশ বড়। ছিল মাঠ কিংবা মাঠের বাইরের সব আলোচনা-সমালোচনা দূরে ঠেলে আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করার শেষ সুযোগ। যা হাতছাড়া করেনি টাইগাররা, উপলক্ষটা উপভোগ্য করে তুলেছে তারা। লঙ্কানদের দেয়া ২৬৪ রানের লক্ষ্য পেরিয়ে গেছে ৪৮ বল হাতে রেখেই।

গত কয়েক দিন ধরে দেশের ক্রিকেটে যা চলছে, তা থামাতে মাঠের ক্রিকেটে সাফল্যের বিকল্প ছিল না। প্রথম সুযোগেই তাই নিজেদের সবটা ঢেলে দেয় পুরো দল। সুবাদে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে ৭ উইকেটের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

বল হাতে বোলাররা নিজেদের শক্তিমত্তা প্রদর্শনের পর ব্যাট হাতেও সফল বাংলাদেশের ব্যাটাররা। দীর্ঘ সময় ধরে যে রান খরা চলছিল, গুরুত্বপূর্ণ সময়ে যে কেটে উঠলো তা। টপ অর্ডার রান পেয়েছে, উদ্বোধনী জুটিও মুগ্ধ করেছে। ফিফটি এসেছে তিন তিনটে। সব মিলিয়ে ব্যাটে-বলে ভালো একটা দিন কাটিয়েছে বাংলাদেশ।

তামিম ইকবাল ছাড়া বিশ্বকাপে কেমন করবে বাংলাদেশ? এমন একটা প্রশ্ন ছিল সমর্থকদের মাঝে। যার উত্তর খানিকটা হলেও মিলেছে আজ। তানজিদ তামিম আর লিটন দাস জুটি বিশ্বকাপে ভালো কিছুর আশা দেখাচ্ছে। গোয়াহাটিতে চললো যেন তার প্রদর্শনী, শতরান ছুঁয়েছে উদ্বোধনী জুটি। ১৪ ওভারেই দলকে পৌঁছে দেন তিন অংকের ঘরে।

শুরুটা করেছিলেন জুনিয়র তামিম। দারুণ ব্যাট করছিলেন শুরু থেকেই। পরে লিটন অবশ্য ছাপিয়ে যান তামিমকে। তাকে অপেক্ষায় রেখে তুলে নেন অর্ধশতক। এরপর অবশ্য অর্ধশতক তুলে নেন তামিমও। জাতীয় দলের জার্সিতে যা প্রথম। যদিও তা স্থান পাবে না রেকর্ডে, কেন না এটা প্রস্তুতি ম্যাচে।

লিটন অবশ্য ইনিংসটা বড় করতে পারেননি, ৫৬ বলে ৬১ করে থামেন তিনি। ২১তম ওভারে হেমান্থাকে ছক্কা হাকাতে গিয়ে ধরা পড়েন বাউন্ডারি লাইনে। তাতে ভাঙে ১৩১ রানের উদ্বোধনী জুটি। তবে শতকের দিকে এগিয়ে চলছিলেন জুনিয়র তামিম। কাছেও পৌঁছে গিয়েছিলেন, তবে তা আর হয়নি। ১০ চার ২ ছক্কায় ৮৮ বলে ৮৪ করে লাহিরু কুমারার শিকার হন তিনি।

তবে হঠাৎ তিনে নেমে চমকে দেয়া মেহেদী মিরাজ তার ছন্দ ধরে রাখেন। সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাট হাতে ভালো করা এই অলরাউন্ডার, আজো জ্বলে উঠেন। দলের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন তিনি, তুলে নেন ফিফটি। খেলেন অধিনায়কোচিত ইনিংস। কেন না গোয়াহাটিতে আজ দলের নেতৃত্ব ছিল তার হাতেই।

মিরাজ শেষ পর্যন্ত ৬৪ বলে খেলেন অপরাজির ৬৭ রানের ইনিংস। তার সাথী ছিলেন মুশফিক। দু’জনে গড়েন ৮২ বলে ৭৬ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি। মুশফিক অপরাজিত ছিলেন ৪৩ বলে ৩৫ রানে। বাংলাদেশ জয় নিশ্চিত করে ৪২ ওভারেই।

এর আগে টসে জিতে আগে ব্যাট করা শ্রীলঙ্কাকে ২৬৩ রানেই আটকে দেয় বাংলাদেশ। ভালো শুরুর পরও টাইগার বোলারদের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনে ইনিংসটা বেশিদূর টানতে পারেনি লঙ্কানরা। ৪৯.১ ওভারেই থামে তাদের ইনিংস। যেখানে গোয়াহাটিতে এর আগে প্রথম ইনিংসের সর্বনিম্ন রান ছিল ৩১৮।

অবশ্য প্রথম ১৪ ওভারে বিনা উইকেটেই তুলে ফেলে ১০৩ রান। যদিও মাঝে ৩৪ রান করে রিটায়ার্ট হার্ড হয়ে ফেরেন কুশল পেরেরা। বাংলাদেশ দল প্রথম উইকেট তুলে নেয় ১৫তম ওভারে। কুশাল মেন্ডিসকে (২২) ফিরিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম উইকেটের স্বাদ এনে দেন নাসুম আহমেদ।

নতুন ব্যাটার সাদিরা সামারাবিক্রমাকে উইকেটে থিতু হতে দেননি শেখ মেহেদী (২)। এর মাঝেই ৫২ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন পাথুম নিশাঙ্কা। এই লঙ্কান ব্যাটারকেও সাজঘরে ফিরিয়েছেন মেহেদী। ২০তম ওভারে ৬৪ বলে ৬৮ করে ফেরেন নিশাঙ্কা। এরপর ফিরিয়েছেন চারিথা আসালাঙ্কাকেও (২২)।

দিনের প্রথম পেসার হিসেবে ৩৩.৫ ওভারে এসে প্রথম উইকেট তুলে নেন শরিফুল ইসলাম। ফেরান লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকাকে। ১৭৭ রানে ৬ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। তবে এরপর একপ্রান্ত আগলে রেখে শ্রীলঙ্কার রান বাড়িয়েছেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। ৪৬তম ওভারে এসে আউট হন ৭৯ বলে ৫৫ রান করে।

শেষ চার ব্যাটারের সবাই ছুঁয়েছেন দুই অংকের ঘর। যার ফলে লঙ্কানদের ইনিংস আড়াইশো পারি দেয়। ৪৯.১ ওভারে তানজিম সাকিব হেমান্থাকে আউট করলে শেষ হয় ইনিংস। শেখ মেহেদী ৩টি ও একটি করে উইকেট নেন মিরাজ, নাসুম, শরিফুল ও তানজিম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *