বগুড়ায় ইজিবাইক ছিনতাই করতে বন্ধুকে হত্যা: গ্রেপ্তার ৬

Slider রাজশাহী


মাসুদ রানা সরকার, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি ঃ দুই বন্ধুর পরিকল্পনাতে হত্যাকাণ্ডের স্বীকার হয়েছিলো ইজিবাইক চালক মুকুল হোসেন। নারী সঙ্গের প্রলোভন দেখিয়ে বন্ধু এমদাদুল হক মিলন ও আনোয়র হোসেন তাকে ডেকে নেন। পরে যৌন উত্তেজক পানীয়র সাথে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে খাইয়ে মুকুলকে শ্বাসরোধে হত্যা পর ইজিবাইক ছিনতাই করা হয়।এই ঘটনায় জড়িত এমদাদুল হক মিলন ও আনোয়র হোসেনসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তারের পর রোববার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে করাগারে পাঠানো হয়েছে।এর আগে শনিবার দিবাগত রাতে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ বগুড়া, পাশ্ববর্তী নাটোর ও রাজশাহী জেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। এ সময় ছিনতাই হওয়া ইজিবাইকটি উদ্ধার করা হয়।গ্রেপ্তার অন্য চারজন হলেন, নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার আব্দুল জলিল সবুজ, সুবহান আলী, রাজশাহীর চারঘাটের ঝন্টু ওরফে বেলাল ও নাজিরুল ইসলাম।

গত রবিবার,২৪ সেপ্টেম্বর /২৩ বিকেলে বগুড়ার অতিরিক্তি পুলিশ সুপার (প্রশাসন) স্নিগ্ধ আখতার পিপিএম এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানান।জেলা পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, বিগত শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর/২৩ বিকেলে বগুড়ার শেরপুরের হাটদিঘী গ্রামের বাসীন্দা মুকুল হোসেন ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। সেদিন রাতে মুকুল বাড়ি না ফেরায় ও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় স্বজনরা তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেন। পরের দিন বিগত শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর/২৩ বগুড়ার নন্দীগ্রামের চকলমা গ্রামে সড়কের পাশে ধান ক্ষেত থেকে মুকুলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় বিগত রোববার, ১৭ সেপ্টেম্বর/২৩ নিহতের স্ত্রী মরিয়ম বেগম নন্দীগ্রাম থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।পরে তদন্তে নেমে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় শনিবার রাতভর অভিযান চালিয়ে জড়িত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা মুকুলকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।স্নিগ্ধ আখতার বলেন, গ্রেপ্তার এমদাদুল ওআনোয়র নিহত মুকুলের পূর্ব পরিচিত ও ঘনিষ্ট বন্ধু। ১৫ সেপ্টেম্বর তারা মুকুলকে শেরপুর উপজেলার ধুনট মোড়ে নারী সঙ্গের প্রলোভনদেখিয়ে ডেকে নেন। সেখান থেকে মুকুলের ইজিবাইকে চড়ে এমদাদুল ও আনোয়ার শুভগাছা বাজার হয়ে বগুড়ার নন্দীগ্রামের চকলমাগ্রামে একটি ধান ক্ষেতের পাশে এসে দাঁড়ায়। পথে যৌন উত্তেজক পানীয়র সাথে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে মুকুলকে খাইয়ে দেওয়া হয়। গল্পের ছলে মুকুল জ্ঞান হারালে এমদাদুল ও আনোয়ার ধানক্ষেতের আইলের পানিতে মুকলের মাথা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ধান ক্ষেতে মুকুলের মরদেহ ফেলে রেখে তারা ইজিবাইকটি নিয়ে নন্দীগ্রামের রনবাঘাতে যায়। সেখানে তাদের আরেক সহযোগী জলিল একটি সিএনজি ভাড়া করে রশির সাথে ইজিবাইক বেঁধে নাটোরের সিংড়াতে নিয়ে যায়। পরে সেখানে অপর আরও দুই সহযোগী সুবহান আলী ও ঝন্টুর সহযোগীতায় ইজিবাইকটি ১৫ হাজার টাকায় নজরুলের কাছে বিক্রি করে।স্নিগ্ধ আখতার বলেন, ঘটনার পরপরই জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ চক্রবর্তীর নির্দেশনায় নিবিড় তদন্ত শেষে এই ঘটনায় জড়িত সব আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মূলত দুই বন্ধুর পরিকল্পনাতেই অটোচালক মুকুল খুন হোন। ইজিবাইক ছিনতাইয়ের জন্য এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *