‘পিস্তলের বাঁট দিয়ে আমার দাঁত ভেঙেছে এডিসি হারুন’

Slider বাংলার মুখোমুখি


পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদ পিস্তলের বাঁট দিয়ে মেরে ছাত্রলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন নাঈমের দাঁত ভেঙে দিয়েছেন। নির্যাতনের শিকার ছাত্রলীগ নেতা আজ রোববার সাংবাদমাধ্যমের কাছে এমনটাই দাবি করেছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আনোয়ার হোসেন নাঈম বলেন, ‘আমাকে ওসির কক্ষে নিয়ে মাটিতে ফেলে ১০-১৫ মিনিট ধরে মারধর করে। একপর্যায়ে পিস্তলের বাঁট দিয়ে হারুন (এডিসি হারুন) আমার মুখ থেঁতলে দেন, এতে আমার দাঁত ভেঙে যায়।’

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ছাত্রীলগের এই নেতা বলেন, ‘আমি এবং শহীদুল্লাহ হলের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহম্মেদ মুনীম শাহবাগ দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন বারডেম হাসপাতালের সামনে আমার এলাকার বড়ভাই রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি। তিনি জানালেন, তার সঙ্গে বারডেম হাসপাতালের চারতলায় পুরোনো দ্বন্দ্ব নিয়ে এডিসি হারুনের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পর এডিসি হারুন তার পুলিশ ফোর্স ডেকে আমার ওই বড় ভাই এবং শরীফ আহম্মেদ মুনীমকে (ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক) ডেকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যান। আমি উদ্বিগ্ন হয়ে কিছুক্ষণ পর থানায় যাই। এরপরই আমার ওপর চড়াও হন এডিসি হারুন ও তার পেটোয়া বাহিনী পুলিশ।’

গতকাল শনিবার রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈমকে শাহবাগ থানায় নিয়ে মারধর করেন পুলিশের এডিসি হারুন অর রশিদ। খবর পেয়ে ছাত্রলীগের নেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গিয়ে দুজনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। এরপর তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। নাঈম হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও অন্যজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন।

ছাত্রলীগ নেতাদের দাবি, এডিসি হারুন গতকাল বিকেলে ৩১তম বিসিএসের এক নারী পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় ওই নারী পুলিশ কর্মকর্তার স্বামী পরিচয় দেওয়া ৩১তম বিসিএসের প্রশাসন ক্যাডারের এক কর্মকর্তা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দুই নেতাকে নিয়ে সেখানে যান। একপর্যায়ে সেখানে এডিসি হারুনের সঙ্গে ওই কর্মকর্তার বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের আটক করে থানায় নিয়ে নির্মম নির্যাতন করে।

এ ঘটনায় এডিসি হারুনকে ডিএমপি থেকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এপিবিএন) বদলি করা হয়। আজ পুলিশ সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক প্রজ্ঞাপনে এই আদেশ দেওয়া হয়। এর আগে, ডিএমপির এক আদেশে এডিসি হারুনকে রমনা বিভাগ থেকে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) উত্তর বিভাগে বদলি করা হয়েছিল।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘গতকাল রাতে আমি থানায় ছিলাম না। তবে পরে শুনেছি, ঘটনাটি পরিদর্শকের (তদন্ত) কক্ষে ঘটেছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *