ফের ব্যাটিং ব্যর্থতা, সুপার ফোরে পরাজয়ের বৃত্তে বাংলাদেশ

Slider খেলা


চলমান এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাদে প্রত্যেক ম্যাচেই ১০০ করার আগেই কমপক্ষে ৪ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। গ্রুপপর্বে শ্রীলংকা, এরপর সুপার ফোরে পাকিস্তান ও শ্রীলংকা; টপ অর্ডারের ব্যর্থতার এই বৃত্ত থেকে বের হতে পারেনি বাংলাদেশ। মাঝে দুয়েকটা ভালো ইনিংস কিংবা জুটি দাঁড়ালেও লোয়ার অর্ডারে আবার ধস। ব্যর্থতার একই গল্পে ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশ। ফলে পরাজয়ের বৃত্ত থেকেও বের হওয়া যাচ্ছে না।

সুপার ফোরে ডু অর ডাই ম্যাচে এদিন টস জিতে প্রথমে শ্রীলংকাকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। সাদিরা সামারাবিক্রামার ৯৩ রানের দুর্দান্ত একটি ইনিংসে ২৫৭ রান করে লংকানরা। ২৫৮ রানের জবাব দিতে নেমে ১১ বল বাকি থাকতেই ২৩৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। হার দেখতে হয় ২১ রানের।

২৫৮ রান তাড়ায় এদিন প্রথম পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে করে ৪৭ রান। পাওয়ার প্লে’র পরপরই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে টাইগার ইনিংস। ৫৫ রানে মেহেদী হাসান মিরাজ ও ৬০ রানে নাঈম শেখকে বিদায় করেন লংকান অধিনায়ক দাসুন শানাকা। এরপর ৭০ রানের মাথায় সাকিব আল হাসানকে ফেরান মাথিশা পাথিরানা। আর ৮৩ রানের মাথায় দুনিথ ভালালাগের বলে লিটন কট বিহাইন্ড হলে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। এরপরই জুটি বাঁধেন মুশফিকুর রহিম ও তাওহীদ হৃদয়। ১৫৫ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ২৯ রান করে ফেরেন মুশফিক। আর ১৮১ রানের মাথায় ফেরেন শামীম। ১৯৭ রানের মাথায় ফেরেন বাংলাদেশের হয়ে একাই ব্যাট হাতে লড়াই করা হৃদয় ফিরলে ফিকে হয়ে আসে জয়ের ক্ষীণ আশা। হৃদয়ের ফেরার পর ৩ রান যোগ হতেই ফেরেন তাসকিন আহমেদ। বাংলাদেশের নবম উইকেটের পতন ঘটে ২১৬ রানের মাথায়, শরিফুল ফিরলে। শেষ উইকেটে দারুণ কিছু শটে গ্যালারি মাতালেও তা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। শেষ পর্যন্ত ২৩৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের ইনিংসে এদিন প্রথম ধ্বংসযজ্ঞ চালান লংকান অধিনায়ক দাসুন শানাকা। দুই ওপেনার ও মুশফিককে ফিরিয়ে কাজের কাজটি করেন তিনিই। শেষ পর্যন্ত তার বোলিং ফিগার, ৯-০২৮-৩। মাঝের ওভারগুলোতে দুর্দান্ত ছিলেন দুনিথ ভালালাগেও। ১০ ওভারে মাত্র ২৬ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন তিনি। ৩টি করে উইকেট নেন মাথিশা পাথিরান ও মহেশ থিকসানা।

এর আগে, প্রথমে ব্যাট করে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৫৭ রান করে শ্রীলংকা। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে লংকানদের প্রথম উইকেট নেন হাসান মাহমুদ। তবে ৩৪ রানে প্রথম ব্যাটার হিসেবে দিমুথ করুনারত্নের ফেরার পর উইকেটে জমে গিয়েছিলেন পাথুম নিশাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস। এই জুটিতে ৭৪ রান আসার পর অবশেষে সেটি ভাঙে পেসার শরিফুল ইসলামের আঘাতে। ১০৮ রানে নিশাঙ্কাকে (৪০) ফেরানোর পর ১১৭ রানে ফেরান মেন্ডিসকেও (৫০)। শ্রীলংকা তাদের চতুর্থ উইকেট হারায় ১৪৪ রানের মাথায়। তাসকিনের বলে সাকিবের হাতে ক্যাচ উঠিয়ে দেন আগের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলা চারিথ আসালঙ্কা। দলের সঙ্গে আর ২০ রান যোগ হতে ফেরেন ধনাঞ্জায়া ডি সিলভাও। হাসানের বলে উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ দেন তিনি।

ষষ্ঠ উইকেটে ৬০ রান যোগ করেন দারুণ ব্যাট করতে থাকা সামারাবিক্রামা এবং অধিনায়ক দাসুন শানাকা। শানাকাকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন হাসান। তবে শানাকা ফেরার পর আরও দুই উইকেট হারালেও বিধ্বংসী ব্যাট চালিয়ে যান সামারাবিক্রামা। এক পর্যায়ে জাগিয়েছিলেন সেঞ্চুরি সম্ভাবনাও। শেষ পর্যন্ত মাইলফলকের দেখা না পেলেও ৯৩ রান করে দলকে নিয়ে যান ২৫৭ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহে।

এদিন বাংলাদেশের পেসাররা একটি রান আউট ছাড়া সব উইকেট নিলেও রান দেওয়ায় স্পিনাররা ছিলেন ভীষণ কৃপণ। হাসান মাহমুদ ৩টি, তাসকিন আহমেদ ৩টি ও শরিফুল ইসলাম নেন ২টি উইকেট। তবে তাদের সবার ইকোনমিই ছিল ছয় কিংবা তার বেশি। আর ১০ ওভার করা নাসুম মাত্র ৩১ রান দিয়েছেন ১ মেডেনসহ। সমান ওভার করে সাকিব দিয়েছেন ৪৪ রান। আর ৩ ওভারে মিরাজ দিয়েছে ১৪ রান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *