নার্স হয়ে পরিচয় দেন ডাক্তার, বাসায় খুলেছেন ‘ভ্রূণ হত্যার ক্লিনিক’

Slider ফুলজান বিবির বাংলা


মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত সিনিয়র স্টাফ নার্স পারভীন আক্তার নিজেকে ডাক্তার বলে পরিচয় দেন। বাসায় খুলেছেন ‘ভ্রূণ হত্যার ক্লিনিক’, যেখানে অবৈধভাবে গর্ভপাত করান তিনি। বিষয়টি জানিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয়রা।

জানা গেছে, গত ১৮ আগস্ট শিবালয়ের কোখাদি গ্রামের এক নারী (১৯) অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। পরের দিন কর্তব্যরত চিকিৎসক তার উন্নত চিকিৎসার জন্য মানিকগঞ্জ কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে পাঠান। কিন্তু ১৯ আগস্ট রোগীকে কর্তব্যরত সিনিয়র স্টাফ নার্স পারভীন আক্তার ও তার সহযোগী তানজিয়া আক্তার ফুসলিয়ে নিজ বাসায় নিয়ে ২ হাজার ৫০০ টাকার বিনিময়ে অবৈধ গর্ভপাত করান।

নার্স পারভীনের এক প্রতিবেশী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পারভীনের বাসায় ‘ভ্রূণ হত্যার ক্লিনিক’ খোলা হয়েছে। সেখানে গর্ভপাত ও ভ্রূণ হত্যার রোগী নিয়মিত আসে। রোগীদের কম টাকায় গর্ভপাতের কথা বলে বাসায় এনে গর্ভপাত করিয়ে বেশি টাকাও আদায় করা হয়। তিনি নিজেকে সব জায়গায় ডাক্তার পরিচয় দেন। এ বিষয়ে এলাকাবাসীর পক্ষে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

ভ্রূণ হত্যা ও চিকিৎসক পরিচয় দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত সিনিয়র স্টাফ নার্স পারভীন আক্তার আমাদের সময়কে বলেন, ‘আমার বিভিন্ন ট্রেনিং করা আছে। দীর্ঘ দিন যেহেতু এই এলাকায় বাস করি, তাই আমার আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা আমার কাছে স্বাস্থ্য বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ নিতে আসে। আমি তাদের পরামর্শ দিয়ে থাকি।’

কোনো নার্স বাসায় এনে গর্ভপাত করতে পারে কি না—এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. ফজলে বারি আমাদের সময়কে বলেন, ‘কোনো নার্স বাসায় অবৈধভাবে ভ্রূণ-গর্ভপাত করতে পারে না। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্তকমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে ব্যবস্থা নেব।’

জানতে চাইলে মানিকগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন মো. মোয়াজ্জেম বলেন, ‘ভ্রূণ গর্ভপাত করার কোনো নিয়ম নাই, এটা আইনত অপরাধ।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *