কিন্ডারগার্টেন স্কুল নিয়ন্ত্রণে আসছে নতুন বিধিমালা

Slider শিক্ষা


অন্যান্য বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো কিন্ডারগার্টেন স্কুল পরিচালনায় থাকতে হবে ব্যবস্থাপনা কমিটি। মনগড়া ফি নির্ধারণ করতে পারবে না। শিক্ষকদেরও থাকতে হবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা। এমন বিধান রেখে নতুন বিধিমালা প্রণয়ন করছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিধিমালা অনুযায়ী বিদ্যমান সব কিন্ডারগার্টেন স্কুল নিবন্ধন করতে হবে।

প্রস্তাবিত বিধিমালার আওতায় পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদানকারী নার্সারি, কেজি ও প্রিপারেটরি স্কুল এবং অন্যান্য বেসরকারি বিদ্যালয় পরিচালনা করতে হবে। উপজেলা/থানা শিক্ষা কর্মকর্তার (টিইও) মাধ্যমে নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে আবেদন করতে হবে। তিনি যাচাই শেষে আবেদন পাঠাবেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার (ডিপিইও) কাছে। তিনিই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন। তবে আবেদনের ৬০ দিনের মধ্যে সব প্রক্রিয়া শেষ করে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিতে হবে। প্রাথমিক অনুমতির মেয়াদ হবে সনদ দেওয়ার পর থেকে এক বছর। এই মেয়াদ শেষ হলে নবায়নের আবেদন ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। আর পূর্ব তদন্ত ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠান নবায়ন করা যাবে না।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ জানান, কিন্ডারগার্টেনসহ (কেজি) বেসরকারি বিভিন্ন স্কুল তত্ত্বাবধানের জন্য থাকা ২০১১ সালের বিধিমালাটি যুগোপযোগিতা হারিয়েছে। ফলে অধিভুক্তি আর রেজিস্ট্রেশন সহজ করতে এবার বিধিমালা তৈরি করা হচ্ছে। এই বিধিমালা মানা না হলে আইনের আওতায় আনা হবে।

প্রস্তাবিত নতুন বিধিমালায় বলা হয়েছে, প্রত্যেক স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে প্রধান শিক্ষক, একজন শিক্ষক প্রতিনিধি, একজন অভিভাবক প্রতিনিধি, উদ্যোক্তা বা প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে দুজন থাকবেন। প্রতিষ্ঠাতা পাওয়া না গেলে ইউএনও বা ডিসির দুজন প্রতিনিধি থাকবেন। এছাড়া থাকবেন নিকটতম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষক। ব্যবস্থাপনা কমিটির মেয়াদ হবে ৩ বছর। তারাই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করবেন।

প্রত্যেক বিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত হবে ৩০:১। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা যাবে। তবে কমপক্ষে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান থাকতেই হবে। একাধিক ক্যাম্পাস খোলা যাবে না। ইচ্ছেমতো টিউশন ফি নির্ধারণ করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে উপজেলা/থানা/মহানগর শিক্ষা কমিটির সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। পুনঃভর্তি বা নবায়নের নামে শিক্ষার্থীদের

কাছ থেকে অনুদান আদায় করা যাবে না। পঞ্চম শ্রেণির বিদ্যালয়ে কমপক্ষে ৬ জন শিক্ষক থাকতে হবে। শিক্ষকের বেতন-ভাতাদি এসব বিদ্যালয় বহন করবে, সরকার নয়।

অবকাঠামো বিষয়ে বলা হয়েছে, বিদ্যালয় ভাড়া কিংবা স্থায়ী বাড়িতে হোক, মেট্রোপলিটন এলাকায় অন্যূন দশমিক ৮ একর, পৌরসভায় দশমিক ১২ এবং অন্য এলাকায় দশমিক ৩০ একর ভূমিতে হতে হবে। ভবন ও ভূমি ভাড়া নেওয়া যাবে। তবে এ বিধিমালার আগে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ের ভূমির পরিমাণ কম হলে সে ক্ষেত্রে কার্যকর হবে না। বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ, প্রধান শিক্ষকের কক্ষ এবং শিক্ষকদের কক্ষ থাকতে হবে।

বিদ্যালয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) পাঠ্যবই অবশ্যই পড়াতে হবে। সহশিক্ষা কার্যক্রম থাকতে হবে। ১৯৮৯ সালের জাতিসংঘ শিশু সনদের আলোকে শিশুর অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানে গ্রন্থাগার, বিশুদ্ধ পানি ও টয়লেট থাকতে হবে। শিক্ষা সফর, চিকিৎসা, খেলার ব্যবস্থা থাকতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *