বরগুনায় ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ, তবুও দাম চড়া

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি


বরগুনা পৌর মাছ বাজারে ২ কেজি ১২ গ্রাম ওজনের একটি ইলিশের দাম ৯ হাজার টাকা হাঁকা হলেও পরে সেটি ৩৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মাছটি বরগুনার স্থানীয় বিষখালী নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়ে। গত শনিবার বিশখালী নদীর ঢলুয়া ইউনিয়নের চলাভাঙ্গা এলাকার জেলে মাসুদ আহম্মেদের বৈধ জালে ইলিশটি ধরা পড়েছে বলে জানান আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা।

এ দিকে বরগুনায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। ট্রলারবোঝাই মাছ নিয়ে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ফিরছেন জেলেরা। তবে এসব ইলিশ সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। পাথরঘাটা ঘাটে একের পর এক ট্রলার ভিড়তে দেখা যাচ্ছে। ট্রলারের খোন্দল (ইলিশ সংরক্ষণের কোটর) থেকে ঝাঁপি বোঝাই করে ইলিশ বিক্রির জন্য অবতরণ কেন্দ্রে স্তূপ করে রাখছেন ঘাটশ্রমিকেরা।

জেলেরা জানান, নিষেধাজ্ঞার পরপরই সাগরে ইলিশ ধরা পড়ায় দারুণ খুশি তারা। আর অবতরণ কেন্দ্রে ইলিশ দেখে স্বস্তি ফিরেছে মৎস্য ব্যবসায়ীদের।
বিএফডিসি পাথরঘাটা অবতরণ কেন্দ্রের তথ্য মতে, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে পরবর্তী এক সপ্তাহে পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে প্রায় ১০০ টন সামুদ্রিক মাছ বিক্রি হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ৭০ টনই ইলিশ।
ক্রেতা অমল চন্দ্র জানান, নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর বেশ ভালোই মাছ পাওয়া যাচ্ছে বলে কিনতে এসেছি। কিন্তু এখানে এসে ইলিশে হাত দেয়া যাচ্ছে না। এক কেজি বা তার বেশি ওজনের ইলিশের দাম চায় ১ হাজার ৮০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ টাকা। ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম নিচ্ছে এক হাজার টাকা। একটু ছোট ইলিশের দাম চায় কেজিপ্রতি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। কিভাবে ইলিশ কিনবো ?

মাঝি মনির হোসেন বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে মধ্যরাতে সাগরে মাছ শিকারে যাই। কিন্তু গভীর সাগরে না গিয়ে মাত্র চার ঘণ্টা ট্রলার চালিয়ে জাল ফেলতে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়েছে ইলিশ। তাও আবার আকারে অনেক বড়। কয়েক ঘণ্টা মাছ শিকারের পর পাঁচ হাজার ইলিশ নিয়ে দ্রুত ঘাটে ফিরেছি।

মৎস্য ব্যবসায়ী শুক্কুর বলেন, ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায় ইলিশের চাহিদা রয়েছে। তাই বাড়তি দামে ইলিশ কিনে দ্রুত তা প্যাকেটজাত করে গাড়িতে তুলে দিচ্ছি। আশা করি ভালো একটা দাম পাব।

বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, আমরা কষ্ট করে নিষেধাজ্ঞা পালন করলেও এখন সুফল ভোগ করছি সবাই মিলে। এ রকম ইলিশ পেলে আমরা ক্ষতি কাটাতে সমর্থ হবো।

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে জেলেরা সাগরে কম মাছ ধরলেও নদীতে মাঝে মাঝে বড় সাইজের ইলিশ ধরা পড়ছে। গত বছরের তুলনায় ইলিশ উৎপাদন বেড়েছে। জেলেদের জীবনমানের উন্নতি হচ্ছে। ইলিশ মাছের ব্যাপক চাহিদা থাকায় দাম তুলনামূলক ভালো। মাছের দাম বেশি থাকায় জেলেরা মোটামুটি লাভবান হচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *