ধারাবাহিক প্রতিবেদন গাজীপুর-৫ ভেজাল কাগজে বড় লোকের লাইন

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ বাংলার মুখোমুখি বাধ ভাঙ্গা মত

DSC07149

গ্রাম বাংলা টিম: ভূমি দস্যু সিন্ডিকেট ভূমি অফিসের সাথে যোগশাযশ করে দখল করে নিচ্ছেন সরকারী বনভূমি।  তথাকথিত শিল্পপতিরা একটু জমি কিনে বন কর্মচারীদের সাথে গোপন সম্পর্ক স্থাপন করে রাতারাতি দখল করছে বন বিভাগের কোটি কোটি টাকার জমি। ৬৯ বিশেষ ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও প্রায় ৫০ হাজার ব্যক্তি ঢাকা বিভাগের ১১ হাজার ৬৩৯ একর বনভূমি জবর দখল করেছে। সারাদেশের প্রায় আড়াই লাখ একর বনভূমি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান জবর দখল করে আছে।

জনসংবাদের অনুসন্ধানে জানা যায়, গাজীপুর জেলায় প্রায় দুই হাজার শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে অসংখ্য শিল্প প্রতিষ্ঠান সরকারী বনভূমি জবর দখল করেছেন মর্মে অভিযোগ রয়েছে। ভেজাল কাগজপত্র তৈরী রাতারাতি সীমানা প্রাচীর সম্প্রসারণের রীতি এখন সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে।

গোপন সূত্র বলছে, কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রথমে গাজীপুর জেলার সংশ্লিষ্ট সহকারী ভূমি কমিশনারের সাথে বৈঠক করেন। এই বৈঠকের পর তারা পছন্দমত জায়গার বন বিট অফিসের সাথে বৈঠক করেন। পরে ওই বন অফিস বন বিভাগের উপরের সকল স্তর ম্যানেজ করেন।

বন বিভাগ, ভূমি অফিস, পুলিশ ও কতিপয় সাংবাদিক সহ সংশ্লিষ্টদের যোগশাযশে জবর দখল হয় সরকারী বনভূমি। প্রথমে গাছ কেটে পড়ে জমি দখল করে শিল্প প্রতিষ্ঠান তৈরীর হিড়িক গাজীপুরে নতুন নয়।

বাংলাদেশ বন বিভাগের দায়িত্বশীল সুত্র জানায়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত বন সচিবের দেয়া তালিকায় ৬৯ বিশেষ ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও প্রায় ৫০ হাজার ব্যক্তি ঢাকা বিভাগের ১১ হাজার ৬৩৯ একর বনভূমি জবর দখল করেছে। সারাদেশের প্রায় আড়াই লাখ একর বনভূমি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান জবর দখল করে আছে।

সূত্রমতে, বিশেষ ৬৯ ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান গাজীপুরের প্রায় ৯০ একর বনভূমি জবর দখল করেছে। তাদের মধ্যে কার কার সঙ্গে সরকারের মামলা চলছে এই সংক্রান্ত সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে সচিব বলেছেন, তথ্যটি জানা নেই।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বন সচিব বলেছেন, ৬৯ ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান গাজীপুরের প্রায় ৯০ একর বনভূমি জবর দখল করেছেন। তাদের মধ্যে ২২টি প্রতিষ্ঠান হলো, রোশেয়া স্পিনিং মিলস, পৃথি পোল্ট্রি, আর কে সিরামিকস ও ফার্মাসিউটিক্যালস, রাজ্জাকুল হায়দার অরণ্য কুটির, ইকো কটন মিলস, অটো স্পিনিং মিলস, মেসার্স হংকং মানজালা টেক্সটাইল, জয়নাল আবেদীন টিটু কমপ্লেক্স, ভাওয়াল ইন্ডাস্ট্রিজ, জেসন এগ্রোভেট, হোতাপাড়া গার্মেন্টস, সানপাওয়ার সিরামিক্স, করোনি কম্পোজিট, শামসুদ্দিন স্পিনিং মিলস, রহমত টেক্সটাইল মিলস, হাইড্রো-অক্সাইড, হামিদ স্পিনিং মিলস, এন এম টেক্সটাইল মিলস, কোকোলা ফুড প্রডাক্টস, সোলার সিরামিক্স, হাজী ইসলাম উদ্দিন স্পিনিং মিলস, রয়েল গ্রীন প্রডাক্টস।

বন সচিবের বরাত দিয়ে আরো বলা হয়েছে, জবর দখল করা ৪৭ জন ব্যক্তি হলেন, মো. নুরুল হুদা, আঃ আজিজ, সিরাজ মিয়া, ইয়াসিন মিয়া, সাহাব উদ্দিন, আফজাল হোসেন, আমিনুল, জসিম উদ্দিন, মহর আলী, আব্দুল লতিফ, কাসেম, মনতাজ আলী, আ. শুকুর আলী, মো. ফারুক, চৌধুরী মনোয়ার উদ্দিন সিদ্দিকী, আ. মান্নান, মো. আজিজ, আলিম, মোজাম্মেল, জহুরা বেগম, মঙ্গল চন্দ্র বর্মন, অজিত চন্দ্র বর্মন, রঞ্জিত চন্দ্র বর্মন, আলাউদ্দিন, ইব্রাহিম, আবুল হোসেন, ফালো মিয়া, ইদ্দিছ আলী, আব্দুর রশিদ, অহিদ আলী, নূর মোহাম্মদ আলী, ইসলামইল বেপারী, আফসার উদ্দিন, মোছলেম উদ্দিন, নুরুল ইসলাম, জনাব আলী, মো. পরান, করম আলী, মো. শামীম, ধনু মিয়া, আলহাজ সোহরাব, আনছার আলী, আব্দুর রহিম, লাল মিয়া, আবুল হোসেন, এম এন নুরুল ইসলাম (যমুনা গ্র“প) এবং আব্দুল মামুন গং।

সরকারী সূত্র বলছে, এই সকল বনভূমি উদ্ধারে সরকারী নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *