পুলিশের ওপর দেশের জনগণের কোনো আস্থা নাই। পুলিশ জনগণের বন্ধু না, পুলিশ হলো সরকারের বন্ধু বলে মন্তব্য করেছেন দেশের আলোচিত-সমালোচিত ইউটিউবার হিরো আলম।
তিনি বলেন, ‘মারধরের পর অনেকেই বলতেছে- পুলিশের কাছে বিচার দাও, মামলা কর। মামলা করে কী করবেন? পুলিশ প্রশাসনের কাছ থেকে আমার আস্থা হারিয়ে গেছে। দেশের জনগণের পুলিশের ওপর কোনো আস্থা নাই।’
গতকাল সোমবার ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের দিন মারধরের পর হাসপাতালের বেডে শুয়েই আজ মঙ্গলবার বিকেলে ফেসবুক লাইভে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘অনেকেই বলতেছে, আপনি মামলা করছেন না কেন? আমার প্রশ্ন, মামলা করব কার কাছে, বলুন তো? পুলিশ প্রশাসনের কাছে? কালকে যখন কেন্দ্রে ঢুকি। ঢোকার পরে প্রথমে ওরা ধাক্কা মারে। ধাক্কা মারা পরে গিয়ে দেখি ওরা সিল মারতেছিল। পুলিশ বলছে, ডিবির প্রধান হারুন ভাইও (ডিএমপির ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ) বলেছেন দেখলাম, আমরা নাকি ৫০-৬০ জন ইউটিউবার নিয়ে কেন্দ্রে ঢুকেছি। আপনারা নিজেরাই তো দেখেছেন, ৫০-৬০ জন ইউটিউবার নিয়ে গেছি কি না।’
হিরো আলম বলেন, ‘এখন পুলিশের কাজ নিরাপত্তা দেওয়া। ইচ্ছা করে তখন আমার ওপর ধাক্কা মারল, আমি যখন বের হয়ে আসছিলাম। পুলিশ কী করত পারলে, আমার কিন্তু গাড়ি পর্যন্ত নিরাপত্তা দিয়ে পৌঁছে দেওয়া উচিত ছিল পুলিশের। পুলিশ কিন্তু আসে নাই আমার সাথে। যখন আমাকে মারধর করে, তখন বিজিবির গাড়ি ছিল, এক গাড়ি লোক (বিজিবি সদস্য) ছিল। আমি যখন বিজিবির কাছে যাই, বিজিবি তখন কি করছে, রক্ষা করেনি।’
লাইভে হিরো আলম আরও বলেন, ‘এই সরকারের অধীনে যেমন নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না, সেই রকম পুলিশ জনগণের বন্ধু হতে পারে না। পুলিশ জনগণের বন্ধু হলে আমার পাশে থাকত। পুলিশ কিন্তু আমার পাশে নাই, পুলিশ কিন্তু আমার পাশে ছিল না। যাই হোক, সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, সুস্থ হয়ে যাই যাতে।’
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলাকালে বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল ভোটকেন্দ্রের সামনে একদল যুবক প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলা চালায়। পরে হিরো আলমকে রামপুরায় বেটার লাইফ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় রাজধানীর বনানী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অজ্ঞাতপরিচয় ১৫/২০ জনকে আসামি করে মামলাটি করেছেন হিরো আলমের ব্যক্তিগত সহকারী সুজন রহমান শুভ (২৫)। মামলায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।