জয়ের সুবাস পাচ্ছে বাংলাদেশ

Slider খেলা

টেস্ট ক্রিকেটে এমন ‘সুন্দর’ দিন খুব কমই কাটিয়েছে বাংলাদেশ। দুই শতক ও দুই অর্ধশতকের পর বোলিং দাপটে ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিনটা নিজেদের করে নিয়েছে তারা। জিততে হলে রেকর্ড গড়তে হবে আফগানিস্তানকে। ৬৬২ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ১১ ওভারে ২ উইকেটে ৪৫ রান তুলে দিন শেষ করেছেন সফরকারীরা। এখনো ৬১৭ রানে পিছিয়ে তারা। তৃতীয় দিন শেষে জয়ের সুবাস পাচ্ছেন লিটন দাসরা।

তৃতীয় দিনে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কাছে মিরপুরের উইকেট যেন ‘ব্যাটিং স্বর্গে’ পরিণত হয়েছিল। সেখানে ব্যাট হাতে ফুল ফুটিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত-মুমিনুল হকরা। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ৪২৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেন স্বাগতিকরা। ২৩৬ রানে এগিয়ে থাকা টাইগাররা দুই ইনিংস মিলিয়ে লিড নেয় ৬৬১ রানে। টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে প্রতিপক্ষকে দেওয়া বাংলাদেশের সর্বোচ্চ লক্ষ্য এটি। এর আগে ২০২১ সালে জিম্বাবুয়েকে ৪৭৭ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল তারা। জয়ের জন্য আফগানদের দরকার ৬৬২ রান। পরিসংখ্যান বলছে, মিরপুরে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ ২০৯ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড আছে ইংল্যান্ডের। এই টেস্ট জিততে হলে ‘অতিমানবীয়’ কিছু করে দেখাতে হবে আফগান ব্যাটসম্যানদের।

টেস্টের যা গতিবিধি তাতে চতুর্থ দিনেই বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত! এখন আফগানদের বাঁচাতে পারে একমাত্র বৃষ্টি।

নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক দুজনেই টেস্টের তৃতীয় দিনকে রাঙিয়েছেন। দুজনেই তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়েছেন। ব্যাট হাতে শান্ত ‘অশান্ত’ হয়ে উঠেছেন! টানা দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করে তিনি মুমিনুলের কীর্তি ছুঁয়েছেন। আর মুমিনুল যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন। সাবেক অধিনায়কের জন্য রান পাওয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রথম ইনিংসে মলিন (১৫) মুমিনুল দ্বিতীয় ইনিংসে শতক হাঁকিয়ে স্বস্তির নিঃশ^াস ফেলতে পারবেন। ২৬ ইনিংস পর টেস্ট ক্যারিয়ারের ১২তম শতক তুলে নিয়েছেন তিনি। দুই শতকের সঙ্গে জাকির হাসান (৭১) ও লিটন দাসের (৬৬*) ফিফটিতে ৮০ ওভারে ৪২৫ রান তুলে বাংলাদেশ। তৃতীয় দিনের খেলা দেড় ঘণ্টা বাকি থাকার সময় ইনিংস ঘোষণা করেন স্বাগতিকরা। জবাবে খেলতে নেমে ইনিংস শুরুর প্রথম বলেই শরিফুলের শিকার ইব্রাহিম জাদরান। দ্বিতীয় ওভারে তাসকিন ফেরান আব্দুল মালিককে। ৭ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় সফরকারীরা। তাসকিনের বাউন্সারে অধিনায়ক হাশতমউল্লাহ শহিদি রিটায়ার হাট হয়ে মাঠ ছাড়েন। আলোক স্বল্পতার কারণে আধা ঘণ্টা আগেই দিনের খেলার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। এ সময় রহমত শাহ ১০ ও নাসির জামাল ৫ রানে অপরাজিত ছিলেন।

গতকাল ১ উইকেটে ১৩৪ রানে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে বাংলাদেশ। জাকির ও শান্ত দুজনেই ব্যক্তিগত ৫৪ রানে ব্যাটিংয়ে নামেন। দ্বিতীয় উইকেটে এ জুটি স্কোরকার্ডে ১৭৩ রান জমা করেন। জাকির ব্যক্তিগত ৭১ রানে আউট হলেও শান্ত ছিলেন অবিচল। টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ শতক তুলে নিয়ে তবেই ক্ষান্ত হন এই বাঁহাতি। ১৫১ বলে ব্যক্তিগত ১২৪ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন তিনি। তৃতীয় উইকেটে শান্ত ও মুমিনুল জুটি স্কোরকার্ডে জমা করেন ৮৩ রান। স্কোরকার্ডে ১০ রান জমা হতেই মুশফিকের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ২৮২ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর লিটনকে নিয়ে দলের রানের চাকা সচল রাখেন মুমিনুল। পঞ্চম উইকেটে তারা অবিচ্ছিন্ন ১৬০ বলে ১৪৩ রান স্কোরকার্ডে যোগ করেন। টেস্ট ক্যারিয়ারের ১২তম শতক তুলে নেওয়া মুমিনুল ১৪৫ বলে ১২১ রানে অপরাজিত ছিলেন। তাকে সঙ্গত দেওয়া লিটন ৮১ বলে ৬৬ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন। টেস্টে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের এটি ১৬তম অর্ধশতক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *