মির্জা ফখরুলের কাছে এবারের ঈদ যে কারণে ‘বেদনাদায়ক’

Slider সারাদেশ

এবারের ঈদ ‘অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও কষ্টকর’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর পেছনে কয়েকটি কারণের কথা উল্লেখ করেছেন তিনি।

আজ শনিবার ঈদের নামাজ শেষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা ও প্রয়াত নেতার কবর জিয়ারতের পর এই মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।

খালেদা জিয়া যখন মুক্ত ছিলেন, তখন প্রতিবছর ঈদের দিন দলের প্রতিষ্ঠাতার কবর জিয়ারত করতেন। দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালে সাজা নিয়ে কারাগারে যাওয়ার পর দলের মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে প্রতি ঈদে দলের প্রতিষ্ঠাতার কবরে শ্রদ্ধা জানিয়ে আসছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এবার ঈদ ছিল আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং কষ্টকর। একদিকে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী কারাগারে রয়েছেন। তারা পরিবারের সঙ্গে শরিক হতে পারেননি। অন্যদিকে সাধারণ মানুষ, তারা চাল-ডাল-তেল-লবণ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের যে অস্বাভাবিক নজিরবিহীন মূল্যবৃদ্ধি, তাতে করে এই ঈদের আনন্দকে উপভোগ করার জন্য যেটুকু ন্যূনতম সামগ্রী কেনা দরকার, তারা সেটা ক্রয় করতে পারেনি। দুঃখ-কষ্টে কাটছে তাদের।’

তিনি আরও বলেন, ‘এমন কী, আপনারা যদি লক্ষ্য করেন যে, এবারকার ঈদের বাজার—সেটাও কিন্তু একেবারে কোনো রকমের জমে উঠতে পারেনি। কারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা একেবারেই কমে গেছে। সেক্ষেত্রে জিনিসপত্রের দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।’

দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দেশবাসীকে ‘ঈদ মোবারক’ জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘মানুষ সত্যিকার অর্থে অর্থনৈতিকভাবে এই সরকারের মিথ্যা প্রচারণার মধ্য দিয়ে, একটা মানুষকে ভুল বুঝানোর মধ্য দিয়ে বুঝাতে চায়, বিশেষ করে মিডিয়ার সাহায্য দিয়ে দেশ খুব ভালো আছে, অর্থনীতি ভালো আছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দেশে আজকে একটা নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে, প্রকৃতপক্ষে দেশে অর্থনৈতিক চরম সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এই সংকটের কারণে দেশ অতি দ্রুত ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের দিকে যাবে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন। একটা মিথ্যা কথা বলে, প্রচারণা করে এই সরকার ক্ষমতায় টিকে আছে জোর করে।’

এই অবস্থার পরিবর্তনে মানুষেকে জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশকে মুক্ত করতে মানু্ষকে জেগে উঠতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের জনগণ সবসময় সংগ্রামের মধ্য দিয়ে, আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাদের অধিকারকে ফিরিয়ে এনেছে। এবারও তারা সংগ্রাম-আন্দোলনের মধ্য দিয়েই তাদের অধিকারকে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে।’

এই অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ কী, এমন প্রশ্নের উত্তরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একমাত্র উত্তরণের পথ হচ্ছে সরকারের পদত্যাগ। এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সাথে যাদের সম্পর্ক আছে, যারা জনগণের প্রতি জবাবদিহিতা থাকবে, জনগণের প্রতি ভালোবাসা থাকবে—সেই ধরনের সরকার গঠন করতে হবে।’

বেলা ১১টায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খানকে সঙ্গে নিয়ে মহাসচিব শেরে বাংলা নগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে ফাতেহা পাঠ করে পুস্পস্তবক অর্পণ। তারা প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন হাবিব উন নবী খান সোহেল, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আবদুল বারী ড্যানী, সালাহউদ্দিন ভুঁইয়া শিশির, আবু সাঈদ, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি, মহানগর আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, ইশরাক হোসেন, যুব দলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মজিবুর রহমানসহ মহানগরসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *