আজ পয়লা বৈশাখ, শুরু হলো বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ এর পথচলা। নতুন স্বপ্ন আর আশার নতুন বছর, বিদায়ী বছরের যা কিছু অপূর্ণতা তা পূরণ হবে, যে শূণ্যতা তার অনেক কিছুই হয়তো পূর্ণ হওয়ার নয়। তারপরও জীবনে পূর্ণতা আসবে এই প্রত্যাশা নিয়ে নতুন বছরকে বরণ করছে দেশের মানুষ। বর্ণিল আয়োজনে দেশজুড়ে উদযাপন হয়েছে বাংলা নববর্ষ ১৪৩০।
আজ সকাল সাড়ে ৯টায় সিলেট জেলা প্রশাসন প্রাঙ্গন থেকে কড়া নিরাপত্তায় মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্যদিয়ে শুরু হয় নববর্ষের আনুষ্ঠানিকতা। এতে উপস্থিত ছিলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এ সময় তিনি সম্প্রীতি এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রত্যাশা করেছেন। এছাড়া, নতুন বছর হবে সম্প্রীতির ও সহিষ্ণুতার। কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করে সুন্দর একটি দেশ হবে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
চট্টগ্রামে নানান আয়োজন পালিত হয়েছে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব। সকাল থেকে নগরীর ডিসি হিল, সিআরবিসহ বেশ কয়েকটি স্থানে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উদযাপিত হচ্ছে পয়লা বৈশাখ।
‘নতুন দিনের নতুন আলো নতুন জীবন গড়ি, জরাজীর্ণ সাম্প্রদায়িকতা ভুলে সম্প্রীতির হাত ধরি’ এই স্লোগানে বগুড়ায় বরণ করা হলো বাংলা নববর্ষ ১৪৩০। আজ সকালে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রায় অংশ নেন জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম, জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. শফিউল আজমসহ আরও অনেকে। শোভাযাত্রায় আবহমান বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্যের নানা বিষয় স্থান পায়। বগুড়ার বাসিন্দারা মঙ্গল শোভাযাত্রায় বাঘ, সিংহ, সাপ, হাতপাখা, একতারার ফেস্টুন নিয়ে অংশ নেন। তরুণীরা নববর্ষের সাজে ফুল, কুলা নিয়ে নেমে পড়েন রাস্তায়।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের উদ্যোগে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন।
দিবসটি উপলক্ষে শোভাযাত্রা বের হয়েছে ময়মনসিংহ এবং বরিশালেও। রংপুরেও নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে পালিত হয়েছে বাংলা নববর্ষ ১৪৩০। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সকালে স্থানীয় পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে মঙ্গল শোভাযাত্রা ও দুই দিনব্যাপী লোকজ মেলার উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আবু জাফর।
বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা আর আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ পালিত হয়েছে। আজ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা শহরের লোকনাথ ট্যাংকের পাড় ময়দান থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। এতে অংশ নেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. শাহগীর আলম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াতসহ আরও অনেকে।
‘মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা’ গান গাইতে গাইতে মঙ্গল শোভাযাত্রা ও নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে মুন্সীগঞ্জে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিয়েছে সর্বস্তরের মানুষ। আজ সকাল সাড়ে ৮টায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে কালেক্টরেট মাঠ থেকে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি জেলা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় কালেক্টরেট মাঠে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
এছাড়াও নাটোর, সাতক্ষীরা, মাগুরা, নড়াইল, হবিগঞ্জ, কুমিল্লা, বাগেরহাট, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারিসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ উদযাপিত হয়েছে।