ঢাকা: মানাবপাচারের শিকার কোনো বাংলাদেশিই থাইল্যান্ডে থাকবে না বলে জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাঈদা মুনা তাসনিম।
তিনি বলেছেন, অবৈধভাবে সমুদ্র পথে পাচারের শিকার কোনো বাংলাদেশি যদি থাইল্যান্ড উপকূলে উদ্ধার হয়। আর তা যদি ব্যাংকস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস খোঁজ পায়-অবশ্যই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও নেবে।
মঙ্গলবার (২৩ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে সাঈদা মুনা তাসনিম এসব কথা বলেন।
২৪-২৫ জুন ঢাকায় অনুষ্ঠেয় ‘ফরেন অফিস কন্সালটেশন’ শীর্ষক দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিতে বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন তিনি।
বুধবার (২৪ জুন) শুরু হওয়া বৈঠকে থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রীর নেতৃত্বে নয় সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেবে। আর বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক।
সঙ্গে আলাপকালে রাষ্ট্রদূত মুনা জানান, ২০১৩ সালে তৎকালীন থাই প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার ঢাকা সফরকালে ‘ফরেন অফিস কন্সালটেশন’ সংক্রান্ত দুইদেশের মধ্যে একটি চুক্তি হয়।
‘এরপর চলতি বছরের ৫-৬ মে ঢাকায় এর বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই সময় নেপালে ভয়াবহ ভূমিকম্পে থাইল্যান্ডের ৬৫জন লোক আটকা পড়ে। একজনের মৃত্যুও হয়। এজন্য ওই সময় সূচি স্থগিত করে থাই কর্তৃপক্ষ,’ বলেন তিনি।
সাঈদা তাসনিম মুনা বলেন, গত ২৯ মে ব্যাংককে মানবপাচার বন্ধে করণীয় শীর্ষক বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হকের জোরদার ভূমিকায় থাই পররাষ্ট্র সচিব নতুন এ সময়সূচির কথা বাংলাদেশকে জানান।
তিনি বলেন, থাই উপকূলে কোনো অভিবাসী উদ্ধারের খবর পাওয়া মাত্রই তাদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুমুতি চাওয়া হয়। আর প্রতি সপ্তাহেই পাচারের শিকার লোকজনের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।
‘একজন বাংলাদেশিও এখানে (থাইল্যান্ড) থাকবে না। সবাইকে দেশে ফেরত আনা হবে,’ দূঢ়তার সঙ্গে বলেন বাংলাদেশের এই রাষ্ট্রদূত।
এক প্রশ্নর জবাবে তিনি জানান, এ পর্যন্ত ১৮১ জনের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে আরও ৪১ অভিবাসী বুধবার (২৪ জুন) দেশে ফিরছেন।
‘সরকার নিজ খরচে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনছে। ৩০ জুনের মধ্যে যারা দেশে আসতে চান তারা এ সুযোগ-সুবিধা পাবেন,’ যোগ করেন সাঈদা তাসনিম মুনা।
তিনি বলেন, পাচারের শিকার সব অভিবাসীকেই এক সঙ্গে ফেরত আনার সক্ষমতা বাংলাদেশের আছে। কিন্তু তারা থাইল্যান্ডের উপকূলীয় এলাকার বিভিন্ন শেল্টারে রয়েছেন।
‘একসঙ্গে ব্যাংকে এনে রাখা বেশ ব্যয় সাপেক্ষ। ব্যয় বাড়ার কারণে থাই সরকার তাদের একসঙ্গে ব্যাংককে আনতে পারছে না। তাই কিস্তি কিস্তি করে উদ্ধার অভিবাসীদের দেশে ফেরত আনা হচ্ছে।’
‘ফরেন অফিস কন্সালটেশন’ বৈঠকে অভিবাসন, পর্যটনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানান সাঈদা মুনা তাসনিম।