মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে নড়াইলের লোহাগড়ায় যেমন খুশি তেমন সাজো প্রতিযোগিতায় এক ছাত্রী বিএনপির চেয়ারপার্সন ‘বেগম খালেদা জিয়া’ সাজায় ওই কিন্ডার গার্টেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে।
গত সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ডিসপ্লে প্রদর্শনের ব্যাখা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চিঠির জবাব দিতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে যেমন খুশি তেমন সাজো অনুষ্ঠানে দি লিটল সেইন্ট ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের এক ছাত্রী বিএনপির চেয়ারপার্সন ‘বেগম খালেদা জিয়া’ সেজে নিজেকে প্রদর্শন করে। ওই ছাত্রীর খালেদা জিয়া সাজার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এরপর শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। পক্ষে-বিপক্ষে চলছে মন্তব্য।
ফেসবুকে নড়াইল জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক স্বপ্নীল সিকদার নীল লিখেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তিনি এখনও এতিমের অর্থ আত্মসাৎ মামলায় সাজা ভোগ করছেন। একজন আসামিকে কুচকাওয়াজে প্রদর্শন করা অবশ্যই কুরুচিপূর্ণ উপস্থাপন। বাংলাদেশের জন্মলগ্নে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজে একজন দুর্নীতিগ্রস্ত মহিলাকে ভালো সাজানো হলে তখন সমাজের অবক্ষয় অবধারিত (আংশিক)’।
অপরদিকে, নড়াইল সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মশিয়ার খন্দকার একটি ছবি আপলোড করে লেখেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে লোহাগাড়া সেই মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে নড়াইল বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলামসহ নড়াইল জেলা সেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক খন্দকার ফশিয়ার রহমান ও সদস্য সচিব বাবুসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী যায়। যেকোনো পরিস্থিতিতে মেয়েটি ও তার পরিবারের পাশে থাকবে এই অঙ্গীকার জেলা বিএনপি দেয়। ধন্যবাদ দেশনায়ক জনাব তারেক রহমানকে (আংশিক)।’
এ ব্যাপারে দি লিটল সেইন্ট ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রধান শিক্ষক তসলিম উদ্দিন বলেন, ‘২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে যেমন খুশি তেমন সাজো অনুষ্ঠানে ডিসপ্লেতে আমাদের শিক্ষার্থীরা নারী জাগরণের বিষয়টি তুলে ধরতে চেয়েছিল। সেখানে বেগম রোকেয়া থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমে নারী জাগারণে যারা ভূমিকা রেখেছেন তাদের তুলে ধরা হয়। সেখানে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সাজেন একজন। এর মধ্যে এক শিক্ষার্থী বেগম খালেদা জিয়া সেজে ছিল। ডিসপ্লেটি স্বাধীনতা দিবেসের সঙ্গতিপূর্ণ না হওয়ায় শোকজ করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে ইউএনও মো. আজগর আলী বলেন, ‘মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত ডিসপ্লে প্রদর্শনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। নারী জাগরণের ডিসপ্লেটি নারী দিবস বা অন্য দিবস সম্পর্কিত বিষয় অনুকূল হলেও স্বাধীনতা দিবসের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। সেজন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।’