বান্দরবানের তিন উপজেলায় আবারও ভ্রমণ নিষিদ্ধ করলো জেলা প্রশাসন। বুধবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যায় বান্দরবান জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানান।
গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি উপজেলায় স্থানীয় ও বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হলো। তবে জেলার ৭ উপজেলার মধ্যে রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি উপজেলা ব্যাতীত অন্যান্য উপজেলায় পর্যটকরা ভ্রমণ করতে পারবে।
এদিকে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, যেহেতু বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ের কয়েকটি উপজেলায় সন্ত্রাসীদের ধরতে অভিযান পরিচালনা হচ্ছে তাই এই মুহূর্তে যাতে কোন পর্যটক কোথাও গিয়ে কোন বিপদের সম্মুখীন না হয় সেজন্য এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তবে পরিস্থিতি একটু ভালো হলে এই নির্দশনা আবার তুলে নেয়া হবে।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ে সম্প্রতি নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র বেশ কিছু সদস্য পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি ন্যাশনাল ফন্ট ( কেএনএফ) এর আস্তানায় লুকিয়ে থেকে সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে আর তাদের ধরতে যৌথবাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এর আগে বান্দরবান জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েক দফা গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে বিভিন্ন উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সাল থেকে পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টি বম সম্প্রদায়ের কিছু বিপথগামী যুবক কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামে একটি সশস্ত্র সংগঠন গড়ে তুলে আর পরবর্তীতে তাদের আশ্রয়ে সশস্ত্র প্রশিক্ষণে যুক্ত হয় সমতল থেকে আসা নব্য জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়ার বেশ কিছু সদস্য।
এদিকে তাদের নিমূলে ২০২২ সালের অক্টোবর মাস থেকে পাহাড়ে অভিযান চালাচ্ছে যৌথবাহিনীর বাহিনীর সদস্যরা আর সর্বশেষ ১৩ মার্চ (সোমবার) বান্দরবান সদর উপজেলা টংকাবতী ইউনিয়নে র্যাব অভিযান পরিচালনা করে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র ৯ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ দেশি- বিদেশি অস্ত্র, গোলাবারুদ উদ্ধার করে র্যাব।