ধারাবাহিক প্রতিবেদন: ভাওয়াল গড়ের পাহাড়াদার এখন চোর! হাত নাড়লেই ২হাজার

Slider অর্থ ও বাণিজ্য জাতীয় ঢাকা নারী ও শিশু বাধ ভাঙ্গা মত রাজনীতি

DSC07044
গ্রাম বাংলা টিম:  বন রক্ষার দায়িত্বে থাকা ব্যাক্তিরা বন ধ্বংস করেন। বাগানের নামে সরকারী টাকা খরচ করে বাগান করে গাছ কাটা ও বনের জায়গা জবর দখলে সহযোগীতা করেন বনরক্ষকরা। বনের বাগান কেটে সাবার করে গাছ পাাচরকে একটি লাভ জনক ব্যবসায় পরিনত করেছেন বনকর্মীরা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভাওয়াল গড়ের জমি ও গাছ রক্ষায় দায়িত্ব প্রাপ্ত বনকর্মীরা নিজেরাই বন উজারের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। অবৈধভাবে ভাওয়ালের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কর্তন, পাচার করছেন স্বয়ং বনরক্ষকরাই। গাছ পাচারের কাজে রয়েছেন আন্তজেলা কাঠ চোরকারবারী দলের শক্তিশালী সিন্ডিকেট। বনকর্মীরা ওই সিন্ডিকেটের সাথে গোপন আতাঁত করে সাবার করে দিচ্ছেন ভাওয়াল গড়।

গোপন সূত্র মতে, কোন গাছ পাচার চক্র প্রথমে বনের লোক জনের সঙ্গে গোপন সভা করে। সভার মোটা অংকের অর্থ লেনদেন হয়। এই  চুক্তি মতে রাতের অন্ধকারে ট্রাক বোঝাই করে গাজারী গাছ পাচার করা হয়। মহাসড়ক দিয়ে চোরাই কাঠ বোঝাই ট্রাক যাওয়ার পূর্বে রাস্তার বন ও পুলিশ ফাঁড়ি গুলো সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

কাঠ পাচার ও বনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানায়, গজারী কাঠ বোঝাই একটি ট্রাক উৎপত্তিস্থল থেকে গন্তব্যে পৌঁছা পর্যন্ত ৬/৭০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। বন বিভাগ ও পুলিশের লোকজনকে ওই সব টাকা দেয়া লাগে। ভাওয়াল গড়ের উত্তর প্রান্ত থেকে একটি ট্রাক  গজারী কাঠ বোঝাই করে ঢাকায় যেতে রাস্তায় যে সব জায়গায় খরচ হয় তা নি¤œরুপ। মাওনা এলাকা থেকে একটি ট্রাক ঢাকায় যাওয়ার পথে মাওনা পুলিশ ফাঁড়িতে ৫হাজার, হোতাপাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে ৭হাজার টাকা, হোতপাড়া বিট অফিস ৩হাজার, সালনা ফরেষ্ট চেক স্টেশন ৭হাজার, চান্দনা চৌরস্তা হাইওয়ে পুলিশ ৫হাজার, ভোগড়া পুলিশ ফাঁড়ি ২হাজার ও টঙ্গী থানার সঙ্গে মাসিক চুক্তি রয়েছে।

সূত্র বলছে, রাস্তায় টহল পুলিশ সিগন্যাল দিলেই ২হাজার টাকা দিতে হয়। প্রতিদিনি নতুন অফিসার ডিউটিতে থাকায় এদের সঙ্গে স্থায়ী চুক্তি থাকেনা।

এছাড়া অবৈধ নয় এমন কাঠ যাতায়াতের ক্ষেত্রেও বনের লোক ও পুলিশকে টাকা দিতে হয়। বন ও পুলিশের প্রত্যেক ইউনিটকে ট্রাক প্রতি ১হাজার থেকে ২হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে বৈধ কাঠ গন্তব্যে নিতে হয়। ফলে সাধারন মানুষ আম জাম কাঠাল সহ নিজেদের সৃজিত গাছ পালা বিক্রি ও যাতায়াতের ক্ষেত্রে ঘুষ দিতে বাধ্য হয়।

এর ফলে সরকারী গাছ সংরক্ষনের দায়িত্বে থাকা বনকর্মীরা অবৈধভাবে কাঠ পাচার কাজে স্বক্রিয়ভাবে জড়িত থেকে আবার বৈধ কাঠ যাতায়াতের ক্ষেত্রেও ঘুষ নিচ্ছেন।

এ দিকে, ভাওয়াল গড় থেকে ঢাকার উত্তরাস্থ আব্দুল্লাহপুর, কামারপাড়া, দৌঁড় সেতু, বাসাবোর মাদারটেক ও চিটাগাং রোড অবৈধ গজারী কাঠের বিশাল বাজার। এই সব বাজারে থাকা কিছু গজারী কাঠের অনুমতি থাকলেও অধিকাংশ কাঠের সিল থাকে নকল।  কোন তদারকি দল ওই সকল বাজার পরিদর্শনে গেলে তারা দেখেন, প্রত্যেক কাঠের গোড়ায় সরকারী সিল দেয়া আছে। ফলে সরকারী ব্যবস্থাপনায় চলছে সরকারী সম্পদ ধ্বংসের উৎসব।

তথ্য রয়েছে, রাজধানী ঢাকার ওই সকল অভিজাত চোরাই কাঠের বাজার থেকে মোটা অংকের একটি অর্থ যায় আবার বন বিভাগের বড় কর্তাদের পকেটে। এছাড়াও পুলিশ ও নামধারী কিছু সাংবাদিক অবৈধ গজারী কাঠ পাচার ব্যবসা থেকে অনৈতিকভাবে লাভবান হয়ে থাকেন।

চলবে —-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *