সাম্প্রতিক বিস্ফোরণের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে দুর্ভাগ্য আমাদের। এই সরকারের ব্যর্থতার কারণে ঢাকা মহানগরী একটি বিস্ফোরণের নগরীতে পরিণত হয়েছে। বিপজ্জনক নগরীতে পরিণত হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে শুধু বিস্ফোরণ হচ্ছে।
বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক র্যালির আগে দেয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল এই র্যালির আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, যে ভবনে বিস্ফোরণ হচ্ছে সেই ভবনের নির্মাণ কাজ, রক্ষণাবেক্ষণ তদারকি করা হয়নি। গ্যাস জমে থেকে সাইন্স ল্যাবে বিস্ফোরণের তিনজন লোক মারা গেলেন। গতকাল ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়েছে। একটি বাণিজ্যিক ভবনে বিস্ফোরণের ফলে ১৭ জন মানুষ মারা গেছেন। যাদের মধ্যে দু’জন নারী রয়েছেন। এর আগে চট্টগ্রামে বিস্ফোরণ হলো সেখানে সাতজন মারা গেলেন। কেন হচ্ছে এসব?
তিনি বলেন, সরকারের যে ডিপার্টমেন্টগুলো রয়েছে যাদের এগুলো দেখার কথা, নজরদারীতে রাখার কথা, তারা কোনো কাজ করে না, সব দুর্নীতির সাথে জড়িত। যার কারণে এই ভবনগুলোতে কোনো নিরাপত্তা নেই, বিস্ফোরণ প্রতিরোধ করার, আগুনকে প্রতিরোধ করার কোনো ব্যবস্থা না থাকার কারণে আজকে এভাবে মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। ঢাকা মহানগর সবচেয়ে বিপদজনক একটি নগরে পরিণত হয়েছে।
‘শুধু তাই নয় ঢাকা মহানগরের যে বাতাস সেটাকে বলা হচ্ছে পৃথিবীর সবচাইতে দূষিত বাতাস। মজার ব্যাপার হচ্ছে ইংল্যান্ডে প্রকাশিত ইকোনোমিক্স পত্রিকা; তারা বলছে দূষিত মহানগরকে ছাড়িয়ে দুর্নীতির বাতাস এখন বাংলাদেশকে পুরোপুরি গ্রাস করে ফেলছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে আওয়ামী লীগের আমলে নারীরা যেভাবে নির্যাতিত হচ্ছেন অতীতে কখনো এরকম নির্যাতন হয়েছে বলে আমার জানা নেই।
মহিলা দলের নেত্রীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, বোনেরা আপনাদের আরো বেশি করে সোচ্চার হতে হবে। আরো বেশি করে সংগঠিত হতে হবে। দেশের মানুষ, বিশেষ করে নারীদের সংগঠিত করতে হবে।
ফখরুল বলেন, এদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়া। আর সম্ভবত নারীদের মধ্যেও তিনি সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী। আমি যেখানে যাই, বয়স্ক মহিলারা জিজ্ঞেস করেন, বেগম জিয়া কেমন আছেন? তিনি ওনাদের বুকের মধ্যেই রয়েছেন। আজকে তারাই বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য বড় আন্দোলন করে তুলবেন। চলমান আন্দোলনের তারা আরো বেশি করে শরিক হবেন।
তিনি বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে এই জগদ্দল পাথরকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। এটাই হচ্ছে আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মেয়েদের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে, এগুলো কারা করছে সরকারি দলের লোকেরাই করছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন শিক্ষার্থীর ওপর নির্যাতন করা হয়, তখন নারীদের একটি সংগঠনও প্রতিবাদের জন্য এগিয়ে আসেনি, দুঃখ হয়। আপনাদের (নারীদের) বেরিয়ে আসতে হবে, প্রতিবাদ করতে হবে। প্রতিবাদ না করে কিভাবে আমরা আমাদের অধিকার আদায় করব। কিভাবে আমাদের ন্যায্য দাবি আদায় করব। আপনারা নিজেদের অধিকারের জন্য রাস্তা নামেন এবং আপনারা সফল হন এই প্রত্যাশা করছি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক নায়েবা ইউসুফ, দক্ষিণের আহ্বায়ক রুমা আক্তার প্রমুখ।