রাজধানীর গুলশানে আগুন লাগা ভবনের সাত তলা থেকে লাফিয়ে পড়ে মারা যাওয়া সেই যুবকের পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহতের নাম আনোয়ার হোসেন (৩০)। গতকাল রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে নিহতের মরদেহ শনাক্ত করেন তার বড় বোন বিলকিস বেগম ও ছোট ভাই জুলহাস হোসেন।
আনোয়ার হোসেন ভোলার দৌলতখানের দিদারুল্লা গ্রামের মো. নুর ইসলামের ছেলে। পাঁচ ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। আনোয়ার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক ফাহিম সিনহার বাসায় বাবুর্চি হিসেবে কাজ করতেন।
নিহতের ভাই জুলহাস হোসেন বলেন, ‘আগুন লাগার পর আমার ভাই ওই ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে নিহত হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। পরে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে এসে ভাইয়ের মরদেহ শনাক্ত করি। তিনি ওই ভবনের বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক ফাহিম সিনহার বাসায় বাবুর্চি হিসেবে কাজ করতেন।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাবলুর রহমান বলেন, ভবনে আগুন লাগার পর সেখান থেকে লাফিয়ে পড়ে গিয়ে আনোয়ারের মৃত্যু হয়। পরিবারের লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিনা ময়নাতদন্তে মৃতদেহটি স্বজনদের কাছে রাতেই হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে বিসিবির পরিচালক ফাহিম সিনহার স্ত্রী সায়মা রহমান সিনহা ১২তলার ছাদ থেকে লাফ দিয়ে সুইমিং পুলে পড়েন। তিনি আহত হয়ে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি আছেন। সায়মা রহমান সিনহাসহ তিনজন শেখ হাসিনা বার্নে চিকিৎসাধীন।
উল্লেখ্য, রোববার সন্ধ্যা ৬টা ৫৯ মিনিটের দিকে গুলশান-২ নম্বরের ১০৪ নম্বর রোডের বহুতল ভবনে আগুন লাগে। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যান ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে ক্রমান্বয়ে তা বাড়তে থাকে। সর্বশেষ ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
আগুন নিয়ন্ত্রণ ও উদ্ধারে যোগ দেন সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও স্বেচ্ছাসেবক সদস্যরাও। দীর্ঘ চার ঘণ্টা পর রাত ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। এ ঘটনায় ২২ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে পুরুষ ৯, নারী ১২ ও এক নবজাতক।