আখেরি মুনাজাত : বাতিলের সকল চক্রান্ত নস্যাৎ কামনা

Slider জাতীয়


আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে প্রথম ধাপের বিশ্ব ইজতেমা শেষ হয়েছে। এতে বাতিলের সকল চক্রান্ত নস্যাৎ কামনা করে বিশেষ দুআ করা হয়।

জানা গেছে, এ ধাপে ইজতেমার আয়োজক ছিলেন তাবলিগের আ’লমী শূরা (যোবায়েরপন্থী)। আগামী ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপের আয়োজনে থাকছেন মাওলানা সাদপন্থী তাবলিগ অনুসারীরা।

আজ প্রথম ধাপের আখেরি মোনাজাতকে কেন্দ্র করে শিল্প নগরী টঙ্গী ও আশপাশের এলাকা ধর্মীয় উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়। মন্ত্রী পরিষদের সদস্যগণ, পদস্থ সামরিক বেসামরিক কর্মকর্তারা এবং বিভিন্ন মুসলিম দেশের কুটনীতিকরা আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন।

সকাল ৯টা ৫৭ মিনিট থেকে ১০টা ২০মিনিট পর্যন্ত প্রায় ২৩ মিনিট স্থায়ী মোনাজাত চলাকালে ইজতেমার মূল ময়দান ও আশপাশের এলাকায় পিন পতন নীরবতা নেমে আসে। থেমে থেমে এই নীরবতা ভঙ্গ করে আমিন, ছুম্মা আমিন, আল্লাহুম্মা আমিন ধ্বনিতে মুখরিত প্রকম্পিত হয়ে উঠে ইজতেমা ময়দান।

পবিত্র কুরআনের বেশ কিছু প্রার্থনামূলক আয়াত হুবহু উচ্চারণের মাধ্যমে ইজতেমার আখেরি মোনাজাতের সূচনা করেন তাবলীগ জামাতের রাজধানীর কাকরাইল মারকাজ (কেন্দ্রীয়) মসজিদের খতিব শীর্ষ মুরব্বী মাওলানা ক্বারী জোবায়ের। মোনাজাতের প্রথমাংশে মহান আল্লাহ্’র শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরা হয়।

এর পর মোনাজাতে বাতিলের সকল চক্রান্ত নস্যাতের আকুতি জানিয়ে উম্মতে মুহাম্মদীর মাগফিরাত, দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ, জাহান্নাম থেকে মুক্তিলাভ, নবী-রাসুল-সত্যবাদীদের সাথে হাশর নশর ও কায়মনোবাক্যে জান্নাত কামনা করা হয়। এছাড়া দেশের হেফাজত, মুসলিম জাহানের মজবুতি ইমান, দ্বীনের মেহনত, সুন্নতি জিন্দিগী, নামাজে খুশু-খুজু পয়দা, দ্বীন ইসলামের হেফাজত ও ইজতেমাকে কবুলসহ দুনিয়া ও আখেরাতের যাবতীয় অকল্যাণ থেকে হেফাজত ও কল্যাণ কামনা করা হয়।

আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে শনিবার রাত থেকেই আশপাশের জেলা থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা বাস, ট্রেন, ট্রাক ও ট্রলারসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে ইজতেমাস্থলে আসতে থাকেন। শনিবার রাতে এসব মুসল্লি কনকনে শীতকে উপেক্ষা করে রেল স্টেশন, হাসপাতাল ও বিভিন্ন বিপনী বিতানের বারান্দায়, নির্মাণাধীন ও পরিত্যক্ত বিভিন্ন ভবনে অবস্থান নেন।

রোববার ভোর থেকে নারায়ণগঞ্জ, রাজধানী ঢাকা,আশুলিয়া, সাভার ও গাজীপুরের প্রত্যন্ত এলাকার মুসল্লিরা দলে দলে ইজতেমা অভিমুখী রওনা হন। ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, টঙ্গী-আশুলিয়া সড়ক, টঙ্গী-কালিগঞ্জ-নরসিংদী সড়কে যানজটের পরিবর্তে জনজটে রূপ নেয়।

এদিকে ভোর থেকেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উত্তরে ভোগড়া চৌরাস্তা, দক্ষিণে কুড়িল বিশ্বরোড, টঙ্গী-আশুলিয়া সড়কের পশ্চিমে ধউর মোড় এবং টঙ্গী-কালিগঞ্জ সড়কের পূর্বে করমতলা পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। ফলে আখেরি মোনাজাতকে কেন্দ্র করে ইজতেমা ময়দান যেন সব পথের মোহনায় পরিণত হয়। মোনাজাত শেষে এসব সড়কে বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ারের মত মুসল্লিদের স্রোত শুরু হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *