রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) আয়েন উদ্দিনের বাবা শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এই অভিযোগ করেন।
এ সময় তারা এমপি আয়েন উদ্দিন ও তার দুলাভাই মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস সালামকে ‘রাজাকারপুত্র’ বলে আখ্যা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে ‘একাত্তরে মোহনপুর’ নামের একটি বই বের করে দেখান অভিযোগকারীরা। বইয়ের একটি পাতায় দেওয়া আছে মোহনপুরের মহিষকুণ্ডি গ্রামের পিস কমিটির সদস্যদের তালিকা। তালিকার তিন নম্বরে লেখা নামটি হবির মণ্ডলের। পিতার নাম আন্দারু মণ্ডল। হবির মণ্ডল এমপি আয়েন উদ্দিনের বাবা। আর আন্দারু মণ্ডল দাদা। বইটি লিখেছেন মোহনপুরের আত্রাই অগ্রণী ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক মো. বাবলুর রহমান। এই বইটিতে রাজাকারের তালিকায় ৯ নম্বরে লেখা নামটি হলো-আবদুর রহমান মণ্ডল। তিনি মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুস সালামের বাবা বলে দাবি করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে তারা দাবি করেন, এমপি আয়েন আওয়ামী লীগের কর্মীদের বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে বিএনপি-জামায়াতের কর্মীদের চাকরি দিচ্ছেন। তার মাধ্যমে তারা নানাভাবে নির্যাতিত। মামলা-হামলা করে তাদের জীবন অতিষ্ঠ করে দিয়েছেন আয়েন। এমপি আয়েনের নানা অপকর্ম তুলে ধরে তারা কেন্দ্রে অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমপি আয়েনের কারণে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কোণঠাসা। এ ছাড়া জামায়াত নেতাদের সঙ্গে আয়েন উদ্দিনের সখ্যতা রয়েছে এমন কিছু ছবিও দেখানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
তারা আরও বলেন, আগামী ২৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহী আসছেন। সেদিন তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে নির্যাতনের ঘটনা জানাতে চান। তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছেই এমপি আয়েনের বিচার চান। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা রাজাকারপুত্রকে নৌকার প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান না।
রাজশাহীতে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ছবি: আমাদের সময়
এই সংবাদ সম্মেলনের অভিযোগ উড়িয়ে এমপি আয়েন উদ্দিন বলেন, ‘আগামী ২৯ তারিখে প্রধানমন্ত্রী রাজশাহীতে জনসভায় আসছেন। আমি এটা নিয়ে ব্যস্ত। এসব নিয়ে কথা বলতে চাই না। ওরা কেমন আওয়ামী লীগ করে, তা সবাই জানে।’
মোহনগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুস সালাম আমাদের সময়কে বলেন, ‘এগুলো মিথ্যে কথা। আমরা একই পরিবার থেকেই এমপি হয়েছি। উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছি এ জন্য তারা হিংসা করছে। আমাদের হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে। এরা সব বহিস্কৃত নেতা। এদের কথার ভিত্তি নাই।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি জমসেদ আলী, সাধারণ সম্পাদক মো. শামিম, মহিলা সম্পাদক শেখ হাবিবা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শ্রম বিষয়ক সম্পাদক সুরঞ্জিত সরকার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান আলী, সাবেক ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আজাহার আলী, ঘাসিগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবজাল হোসেন বকুল, উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মজিবর রহমান, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম মিলন, কৃষক লীগের রায়ঘাঁটি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সূর্যকান্ত হালদার।