মোদি-খালেদার বৈঠক রবিবার ভারতের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নই বিএনপির লক্ষ্য

জাতীয় টপ নিউজ

গণতন্ত্র সুসংহত করতে ভারত সরকার বাংলাদশের মানুষের পক্ষে থাকবে এমনটাই প্রত্যাশা করছে বিএনপি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশের চলমান রাজনৈতিক সমস্যা তুলে ধরবেন। বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে ভারতের তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা তুলে ধরে বিএনপির আপাতত লক্ষ্য বিজেপি সরকারের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন।

দুই দিনের সফরে মোদি শনিবার সকালে ঢাকায় পৌঁছেছেন। সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে তাকে বহনকারী বিমানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে রবিবার বিকেল ৪টায় মোদির সঙ্গে খালেদা জিয়ার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

বৈঠকের বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদ গত শুক্রবার রাত ৮টার দিকে  বলেন, ‘রবিবার বিকেল ৪টায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।’

বিএনপি সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারত সরকারের সহযোগিতার আশা করে দলটি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ গণতন্ত্র সংসহত করতে মোদি সরকারের সহযোগিতা চাওয়া হবে। এ ছাড়া ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচন, সদ্য অনুষ্ঠিত ঢাকা সিটি নির্বাচনের বিভিন্ন অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে লিখিত ডকুমেন্ট তুলে দেওয়া হবে। পাশাপাশি ৫ জানুয়ারির ওই নির্বাচনে ভারতের তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা তুলে ধরা হবে।

দলীয় সূত্রে আরও জানা যায়, বর্তমান সরকার ভোটারবিহীন নির্বাচন করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেফতার-হয়রানি, গুম করা হচ্ছে- এ বিষয়গুলো মোদিকে অবহিত করে তার সহযোগিতা চাওয়া হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান  বলেন, ‘মোদির সফরে বাংলাদেশের গণতন্ত্র যাতে সুসংহত হয় সে ব্যাপারে তিনি সহযোগিতা করবেন।’

তিনি বলেন, ‘ভারতের গণতন্ত্রের চর্চা থেকে আমরা শিখতে চাই। মোদির সহযোগিতা চাই। দুই দেশের বর্ডার চুক্তি সাইন হয়েছে তাতে মোবারকবাদ জানাই।’

মোদি-খালেদার বৈঠক বিএনপির দাবি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আশা করি তিস্তার পানি চুক্তিটা করা উচিত। আমরা বলব, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক বৈষম্য কমিয়ে আনতে হবে। এ ছাড়া দুই দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা যাতে আরও বাড়ানো যায় সেই বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে।’

এদিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশে সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ বলেন, ‘মোদি সাহেব এসেছেন, তিনি গণতন্ত্রের একজন প্রবক্তাও বটে। বাংলাদেশে গণতন্ত্রের স্বার্থে উনার (মোদির) সাধ্যমত, শিষ্টাচারের মধ্যে থেকে যা যা করা প্রয়োজন তাই করবেন, এটাই প্রত্যাশা করি।’

হান্নান শাহ বলেন, ‘ভারত দাবি করে, তাদের দেশে সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম আছে। তাদের সংবিধানেও আছে, প্রয়োজনে অন্য দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুসংহত করতে কাজ করবে তারা। কিন্তু ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনে তারা (ভারত) এদেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাননি। উল্টো ভোটারবিহীন নির্বাচনের পক্ষে ছিলেন, যেখানে অর্ধেকের বেশী সংসদ সদস্য বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।’

দলটির একাধিক নেতাকর্মীর দাবি, দেশে রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে ভারতের নিরপেক্ষ ভূমিকা জরুরি। সেক্ষেত্রে তাদের প্রত্যাশা মোদি সরকার তাদের অবস্থান থেকে নিরপেক্ষ থাকবে। তারা কোনো দলের পক্ষে অবস্থান না নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করবে।

জানা গেছে, মোদির সঙ্গে সম্ভাব্য বৈঠকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে থাকতে পারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম, ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, শমসের মবিন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, রিয়াজ রহমান, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *