সাজেকে রুম না পেয়ে পর্যটকদের রাত কাটছে স্কুল-স্থানীয়দের বাড়িতে

Slider জাতীয়


দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র মেঘের রাজ্য খ্যাত সাজেক ভ্যালিতে রিসোর্টে রুম না পেয়ে পর্যটকদের থাকতে হচ্ছে স্থানীয়দের বাড়িতে, রিসোর্টের বারান্দায়। অনেকে সেটাও না পেয় রাস্তায় কাটাতে হচ্ছে রাত। এছাড়া রুম না পেয়ে অনেকেই বাধ্য হয়ে ফিরে গেছেন।

শুক্রবার, শনিবার ও রোববার টানা তিনদিনের বন্ধে রিসোর্টের ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত পর্যটক সাজেকে ভ্রমণে যাওয়া ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে পর্যটকদের। সাজেকে ১১২টি কটেজের ধারণ ক্ষমতা তিন থেকে সাড়ে তিন হাজারের মতো। কিন্তু রুইলুই পর্যটনকেন্দ্রের তথ্যমতে শুক্রবার প্রায় ৫ হাজারের মতো পর্যটক সাজেক
গেছেন।

সাজেক জিপ সমিতির লাইনম্যান ইয়াসিন আরাফাত বলেন, শুক্রবার প্রায় ৩৫০টির মতো জিপগাড়ি, প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেলসহ আরও ৭০০ গাড়ি সাজেকে প্রবেশ করেছে।

সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি জয় মারমা বলেন, আমাদের ১১২টি কটেজের সবগুলো রুম বুকিং রোববার পর্যন্ত। যারা রুম বুকিং না নিয়ে এসেছেন তারাই বিপদে পড়ছেন। তবে যারা রাতে ছিল তাদের জন্য স্থানীয়দের ঘরে, স্কুলে ও কমিউনিটি ক্লাবে রাতে থাকার ব্যবস্থা করি।

তিনি আরও জানান, আমরা সকল রিসোর্ট মালিকদের বলেছি বাড়তি ভাড়া নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

সাজেক রুইলুই পর্যটনকেন্দ্র সূত্র থেকে জানা যায়, রুম খালি না পেয়ে অনেকেই বিকেলে ফেরত চলে যান। যারা রয়ে গিয়েছিলেন তারা সন্ধ্যা পর্যন্ত কোথাও রুম না পেয়ে রাস্তায় ঘুরাঘুরি করতে থাকেন। পরবর্তীতে সাজেক রুইলুই পর্যটনকেন্দ্র রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির পক্ষ থেকে মাইকিং করে পর্যটকদের লুসাই ক্লাব ঘরে যেতে বলা হয়। সেখান কিছু পর্যটকের থাকার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। এরপরেও যাদের থাকার ব্যবস্থা হয়নি তারা পাশের ত্রিপুরাদের স্থানীদের বাসাবাড়িতে আশ্রয় নেয়।

অবকাশ রিসোর্টের ম্যানেজার নাজমুল হাসান জানান, রুমের জন্য অনেকে এসেছিল, আমাদের রুমগুলো আরও আগে বুকিং থাকায় নতুন কাউকে রুম দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

সাজেক হিলভিউ রিসোর্টের সত্ত্বাধিকারী ইন্দ্রজিৎ চাকমা বলেন, আমাদের রিসোর্টগুলো অনেক আগে থেকেই বুকিং হয়ে আছে এবং আগামী ২৮ তারিখ পর্যন্ত
বুকিং আছে।

তিনি আরও জানান, যারা রুম পায়নি রিসোর্ট মালিক সমিতির পক্ষ থেকে কিছু পর্যটকের থাকার ব্যবস্থা করা হলেও অনেকেই বাইরে গাড়িতে এবং কটেজগুলোর বারান্দায় রাত কাটাতে হয়েছে। বন্ধের দিনগুলোতে সাজেক আসতে হলে অগ্রিম বুকিং না দিয়ে সাজেক না আসার পরামর্শ দেন তিনি।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আক্তার বলেন, আমার কিছু অতিথি আসাও আমিও সাজেক ছিলাম। অনেককে দেখেছি রুম না পেয়ে পথে পথে ঘুরতে। আমিও কয়েকজনকে স্কুলে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। অনেকে এই সুযোগ বাড়তি ভাড়াও নিয়েছে বলে অভিযোগ পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, মানুষকে সচেতন হতে হবে। রুম বুকিং না দিয়ে এসব স্থানে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এই ধরনের ছুটিতে প্রতিবার এই সমস্যা সৃষ্টি হয়। এই বিষয়ে জেলা প্রশাসক সঙ্গে আলোচনা করে আগামীতে যে একই সমস্যা না হয় সেই বিষয়ে সমাধান বের করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *