কেন্দ্রীয় নেতারা যে সিদ্ধান্ত দেবেন আমরা তা মেনেই দল পরিচালনা করব—–আজমত উল্লাহ খান

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত হাজারও নেতাকর্মীর পদচারণায় মুখর থাকত গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক লাগোয়া বাড়িটি। আর তা হবে না কেন! বাড়ির মালিক জাহাঙ্গীর আলম যে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

তবে নেতাকর্মীর পদচারণায় মুখর বাড়িটি আকস্মিক পরিণত হয় ‘ভুতুড়ে’ বাড়িতে। প্রায় এক বছর ধরে বাড়িটিতে কমে যায় নেতাকর্মীর পদচারণা। কোণঠাসা হয়ে পড়ে তার কর্মী-সমর্থকরা। কর্মীবান্ধব নেতা জাহাঙ্গীর হয়ে পড়েন একাকি একজন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে একটি মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে গত বছরের ২৫ নভেম্বর গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হন জাহাঙ্গীর। আর এর ছয়দিন আগে হারান মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদও।
চলতি বছরের ১৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনিবাহী সভায় দলের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত শতাধিক নেতাকে ক্ষমা ঘোষণা করা হয়। এরপরই যেন প্রাণ ফিরে আসে জাহাঙ্গীর সমর্থকদের মধ্যে। কয়েকদিন ধরেই তার বাড়িতে মানুষের আনাগোনা বেড়েছে। জাহাঙ্গীর যেখানেই যাচ্ছেন, সেখানেই বাড়ছে লোকসমাগম। অথচ গত এক বছর ধরে সামাজিক অনুষ্ঠান ছাড়া অনেকটাই একঘরে ছিলেন তিনি।

গত বছর জাহাঙ্গীরকে দল থেকে বহিষ্কারের সময় বিতর্কিত মন্তব্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। তবে মেয়র পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সময় তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অভিযোগ আনা হয়। এ সময় তার বিরুদ্ধে পঞ্চগড়, রাজবাড়ী, গাজীপুর, নওগাঁ, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ জেলায় সাতটি মামলা হয়। প্রতিটি মামলায় বর্তমানে তিনি জামিনে আছেন।
 জাহাঙ্গীর আলম

এদিকে ক্ষমা পাওয়া নেতাকর্মীদের মধ্যে জাহাঙ্গীর ছিলেন কি না তা নিয়ে তৈরি হয়েছিল ধোঁয়াশা। পরে ২০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিষয়টি পরিস্কার করেন। আর এরপর থেকেই জাহাঙ্গীরের বাড়িতে যেন ভিড় লেগেই আছে।

গত বুধবার গাজীপুরের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম। এ সময় জাহাঙ্গীরের মেয়র পদ ফিরে পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যেসব অভিযোগে তাকে (জাহাঙ্গীরকে) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল এর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’ মন্ত্রীর এই বক্তব্যকে অনেকে গ্রিন সিগন্যাল হিসেবে দেখছেন।

গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা কোনো মন্তব্য করতে রাজি নই। কেন্দ্রীয় নেতারা যে সিদ্ধান্ত দেবেন আমরা তা মেনেই দল পরিচালনা করব।’

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাময়িক বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি আমার দলে ফিরতে পেরেছি এটাই বড় পাওয়া। আমার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র হয়েছে, সেটা প্রমাণিত হয়েছে। দলে ফিরিয়ে নেওয়ায় আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা।’ তবে মেয়র পদে ফেরার বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

২০১৮ সালে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়ে দায়িত্ব নেন জাহাঙ্গীর আলম। আগামী বছর এই সিটি করপোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *