ফাইনালে কি মেসি খেলবেন

Slider খেলা


এবারের বিশ্বকাপ যেন আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসির বিশ্বকাপ হয়ে উঠেছে। প্রতিটি ম্যাচেই দারুণ ফুটবল উপহার দিচ্ছেন এই আর্জেন্টাইন জাদুকর। ৬ ম্যাচের মধ্যে ৪টিতেই জিতে নিয়েছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। কিন্তু সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে দেখা গেছে খোঁড়াতে। হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিটা আবার জাগিয়ে উঠেছে। অন্যদিকে চোটের কারণে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যান ফ্রান্সের ফরোয়ার্ড করিম বেনজেমা। কোচ দিদিয়ের

দেশম বেনজেমার জায়গায় কোনো খেলোয়াড়ই নেননি। বেনজেমা ইতোমধ্যে সেরে উঠেছেন। আলোচনায় উঠে এসেছে তা হলে বেনজেমা কি ফাইনালে খেলবেন।

স্বপ্নপূরণের একেবারে দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে আর্জেন্টিনা এবং লিওনেল মেসি। আর মাত্র একটি ম্যাচ। আগামী রবিবার লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে ফ্রান্সকে হারাতে পারলেই ৩৬ বছরের অধরা বিশ্বকাপ ট্রফিটা উঠবে আর্জেন্টাইনদের হাতে। সবচেয়ে বড় কথা, অন্যতম বিশ্বসেরা ফুটবলার মেসির হাতে। কিন্তু প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ফাইনালে কি খেলতে পারবেন মেসি? বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন নম্বর মাঠে আর্জেন্টিনার অধিনায়ককে ছাড়াই লিওনেল

স্কালোনি ফাইনালের প্রস্তুতি শুরু করায় প্রশ্নটি সামনে চলে এসেছে। অনুশীলন করেননি ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম একাদশে খেলা অধিকাংশ ফুটবলারও। তা নিয়ে অবশ্য কারও মাথাব্যথা নেই। সবার চিন্তা মেসিকে নিয়েই।

ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে দেখা গিয়েছিল বাঁ-পায়ের হ্যামস্ট্রিংয়ে হাত দিয়ে বারবার দাঁড়িয়ে যাচ্ছিলেন মেসি। তখন থেকেই উদ্বেগ বাড়তে থাকে আর্জেন্টিনা শিবিরে। দলের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কিছু জানানো না হলেও আর্জেন্টাইন সাংবাদিকদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য ফুটবলারদের বুধবার বিশ্রাম দিয়েছিলেন স্কালোনি।

কিন্তু পরিবারের সঙ্গে নয়, মেসি দীর্ঘ সময় ছিলেন ফিজিওথেরাপিস্টের কাছে। বৃহস্পতিবার তিনি অনুশীলনে না নামায় রহস্য আরও ঘনীভূত হয়।

আর্জেন্টিনার টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে এদিনও দাবি করা হয়েছে, মেসি সম্পূর্ণ সুস্থই রয়েছেন। টানা ম্যাচ খেলে যেহেতু ক্লান্ত, তাই মাঠে নামেননি অনুশীলন করতে। কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমেই ফাইনালের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।

ভেতরের খবর হচ্ছে, হ্যামস্ট্রিংয়ে যেহেতু চোট রয়েছে, তাই মাঠে নেমে অনুশীলনের ঝুঁকি নিতে মেসিকে নিষেধ করে দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। তাদের মতে, আর্জেন্টিনা অধিনায়কের চোট গুরুতর নয় ঠিকই; কিন্তু অনুশীলন করতে গিয়ে ফের যদি আঘাত পান, সমস্যা বাড়বে।

সন্ধ্যায় মেসিকে নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়লেও বৃহস্পতিবার সকালে আর্জেন্টিনা শিবির ছিল ফুরফুরে মেজাজে। ফুটবলারদের সকালের নাশতার সময় দলের কিট ম্যানেজার ডাইনিংরুমে ঘোষণা করেন, ১৯৭৮ ও ১৯৮৬’র বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা যে ঐতিহ্যবাহী নীল-সাদা জার্সি পরে খেলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, রবিবার ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ফাইনালেও সেই জার্সি পরবেন মেসিরা। বিষয়টা জানিয়েছে ফিফা।

আর্জেন্টিনার সাংবাদিকদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী দলের সবাই এ খবর শুনে উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠলেও মেসি ও কোচ লিওনেল স্কালোনি নির্লিপ্ত ছিলেন। দুজনের কেউই কী জার্সি পরে ফাইনালে খেলবে আর্জেন্টিনা, তা নিয়ে আগ্রহী নন।

ফাইনালের জন্য মেসি কীভাবে নিজেকে প্রস্তুত করছেন, তা দেখতেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে সংবাদমাধ্যমের ভিড় উপচে পড়েছিল। অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া, লাউতারো মার্টিনেজরা একে একে মাঠে নামলেও সকলেই অপেক্ষা করছিলেন মেসিকে দেখার জন্যই।

শেষ পর্যন্ত সেই আশা অপূর্ণই থেকে গেল। আর্জেন্টিনার সাংবাদিকদের কেউ কেউ বললেন, ‘মনে হচ্ছে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা বেরিয়ে গেলে মেসি অনুশীলনে নামবেন। ফাইনালের আগে আর্জেন্টিনা অধিনায়ক নিজেকে গুটিয়ে রাখতে চান। তাই সকলের সামনে অনুশীলন করলেন না।’

বেনজেমা এরই মধ্যে নিজের ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ এবং প্যারিসে গিয়ে সুস্থতার জন্য লড়াই করেছেন এবং মোটামুটি সুস্থও হয়ে গেছেন। চাইলে এখন মাঠেও নামতে পারেন। রিয়াল মাদ্রিদও অনুমতি দিয়েছে বেনজেমাকে, যেন তিনি কাতার গিয়ে দলের সঙ্গে যোগ দিতে পারেন।

মরক্কোর বিপক্ষে সেমিফাইনালের পর সংবাদমাধ্যম ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশমকে করিম বেনজেমা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাও করা হয়েছিল। জবাবে কোনো উত্তর দেননি দেশম এবং খুব ঠা-া প্রতিক্রিয়া দেখান। এ থেকেই ধারণা করা হচ্ছে বেনজেমা ফাইনালে থাকতেও পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *