কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে অনড় বিএনপি

Slider বাংলার মুখোমুখি


নয়াপল্টনের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে বিএনপি অনড় বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

শেষ পর্যন্ত কোথায় আপনারা সমাবেশ করবেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন,‘আমাদের সিদ্ধান্ত যেখানে নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে; সেখানে। আমাদের দলের পক্ষ থেকে ডিএমপি কার্যালয়ে প্রতিনিধি দল গিয়ে অন্য যেখানে সমাবেশের প্রস্তাব দিয়ে এসেছে সেটাও তো পুলিশ প্রশাসন শুনছেন না। তারা (পুলিশ প্রশাসন) বলছেন তারা নাকি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের বিষয়ে অনড়। পুলিশ প্রশাসন যদি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনড় থাকে আমরা এখানে (নয়াপল্টনে) সমাবেশের বিষয়ে অনড়।’

রিজভী বলেন,‘তারা হয়তো অনেকভাবে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করতে পারে আমাদের বিরুদ্ধে। কিন্তু আমরা মনে করি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নিরাপদ নয়।’

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ নিয়ে পুলিশের টানা হেঁচড়ায় দেশবাসী ক্ষুব্ধ। বিএনপির মতো একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের শান্তিপূর্ণ গণসমাবেশের কর্মসূচিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য এক পরিকল্পিত নীলনকশায় মেতেছে আওয়ামী সরকার। সমাবেশের ভেন্যু নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতার দোলাচল তৈরির পরিস্থিতি সরকারের অসৎ অনাচারের বহিঃপ্রকাশ।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘ঢাকার গণসমাবেশকে নিয়ে টালবাহানায় আবারো প্রমাণিত হলো অগণতান্ত্রিক শক্তির দোসররা কখনই গণতান্ত্রিক শক্তির মিত্র হতে পারে না। বিএনপির সাথে অবৈধ সরকার শত্রুতা করতে পারে, কিন্তু তাদেরকে মনে রাখতে হবে বিএনপির বন্ধুর সংখ্যা অসংখ্য। জনগণই বিএনপির সবচেয়ে বড় বন্ধু। এত ষড়যন্ত্র চক্রান্তের মাঝেও বিএনপি এখনো দেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি।’

রিজভী বলেন,‘বিএনপির গণসমাবেশকে নিয়ে সরকারের কপালে কেন এত দুশ্চিন্তার ভাঁজ? ওবায়দুল কাদের সাহেবরা কেন এত বিচলিত হয়ে পড়েছেন? আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র অভিলাষী নেতারা গণসমাবেশকে নিয়ে বানোয়াট গল্প প্রচারে নেমেছেন। আর এই বানোয়াট গল্পকে নিয়ে পুলিশ প্রশাসন অতি উৎসাহী হয়ে ঢাকা মহানগরসহ সারাদেশে ‘ক্র্যাকডাউন’ চালাচ্ছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি চলছে গ্রেফতার, গ্রেফতারের নামে পুলিশী তল্লাশী, আসবাবপত্র ভাংচুরসহ পরিবারের লোকজনের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ। এরা গণতন্ত্রকামী জনগণকে দাবিয়ে রাখার জন্য সরকারের রাষ্ট্রীয় দমনযন্ত্রকে ব্যবহার করছে বিএনপির ওপর।’

তিনি বলেন,‘পুলিশের কাছে এখন নিরপেক্ষতা কোনো বিবেচ্য বিষয় নয়। এদের বিবেচনাশক্তি থাকলে বিএনপির ঢাকার গণসমাবেশ নিয়ে বাড়াবাড়ি করত না। আজকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ চলছে বলেই রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গকে দলীয় চেতনায় সংগঠিত করা হয়েছে। বিচারব্যবস্থা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারছে না। দলীয়করণের রাজনীতি গণতান্ত্রিক রাজনীতি নয়। বিরোধী দল শত্রুদল নয়। বিএনপির রাজনীতি জনস্বার্থকেন্দ্রিক। জনসমাবেশে জনগণের পক্ষেই কথা বলা হবে।’

নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, ‘এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ৩০ নভেম্বর রাত থেকে ৪ ডিসেম্বর দুপুর পর্যন্ত ১০৩১ (প্রায়) জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৪ ডিসেম্বর দুপুর থেকে আজ ৫ ডিসেম্বর দুপুর পর্যন্ত ২৮৪ (প্রায়)। গত ৩০ নভেম্বর রাত থেকে আজ ৫ ডিসেম্বর দুপুর পর্যন্ত (৫ দিনে) ১৩১৫ (প্রায়)। ৫ ডিসেম্বর দুপুর থেকে ৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা পর্যন্ত ৮৫ জন। মোট ১৪০০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, যুববিষয়ক সহসম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *