গোপন থাকে না গোপনে

Slider বিনোদন ও মিডিয়া


তারকাদের কিছু গোপন থাকে না! কিন্তু তারকারা গোপন রাখতে চায়। এই চাওয়াটা শেষ পর্যন্ত প্রকাশ্যে আসে জল ঘোলা করে। গণমাধ্যমকে এড়িয়ে চলার চেষ্টায় তারা ব্যর্থ হয় বারবার। যদিও এখন সুবিধা একটাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। এখানে তারকারা তাদের ব্যক্তিজীবন নিয়ে কথা বলেন, পোস্ট করেন ব্যক্তিজীবনের অনেক সুখ-দুঃখের ছবি-গল্প। তা হলে কি তারা মুখোমুখি হতে পারেন সংবাদকর্মীদের? ২০১৮ সালের ২০ জুলাই গোপনে বিয়ে করেন শাকিব খান ও শবনম বুবলী। ২০২০ সালের ২১ মার্চ তাদের ঘর আলো করে আসে পুত্রসন্তান। নাম শেহজাদ খান বীর। এতদিন গোপন রাখলেও এসব বিষয় কি গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়নি? যদিও তারা সেটাকে ‘মিথ্যা অপবাদ’ বলে চালিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত? এ বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর বুবলী শাকিব খানের সঙ্গে বিয়ে ও সন্তানের খবর প্রকাশ্যে আনেন। বেছে নেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। তার পর প্রশ্ন আসে কবে, কখন, কোথায়, কত দেনমোহরে বিয়ে, সাক্ষী কারা ছিলেন এমন অনেক প্রশ্নের। যার উত্তর দেওয়ার জন্য পাওয়া যায়নি তাদের। আবার সেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকেই বেছে নিলেন বুবলী। সেখানে বলেছেন অনেক কিছুই। কিন্তু প্রশ্ন তো থেকেই যাচ্ছে। সব প্রশ্নের উত্তরই হয়তো পাওয়া যাবে। তার আগে জেনে নেওয়া যাক কী বলেছেন বুবলী।

তাহলে কী ভুল করেছেন বুবলী

কোনো একটা ঘটনায় কেউ শতভাগ ভুল আবার কেউ শতভাগ নির্ভুল- এটা কি কখনো হয়? শতভাগ নির্ভুল- আসলে কতটা হয় আমি জানি না। দীর্ঘদিন ধরেই সাংবাদিকরা আমার কাছে বিষয়গুলো নিয়ে জানতে চাচ্ছিলেন। তখন হয়তো অ্যাভয়েড করে গেছি কিন্তু ভুল উত্তর দিইনি। সন্তানের প্রসঙ্গে হ্যাঁ বা না উত্তর না দিয়ে তখনো কিন্তু বলেছি, সময় হলে জানাব। চেয়েছি, পারিবারিক বিষয়গুলো পারিবারিক বা ব্যক্তিগতভাবেই সমাধান করতে। আমারও তো পরিবার আছে, বাবা-মা আছে, মানসম্মান আছে। আমরা কেউই ভুলের ঊর্ধ্বে নই। আমার সন্তানের তো কোনো দোষ নেই। তিন বছর ধরেই আমি চাচ্ছিলাম আমরা একসঙ্গে ওর বিষয়টা সামনে আনতে। সুন্দর করে তুলে ধরতে। কিন্তু হচ্ছিল না। সে কারণেই এভাবে খবরটা প্রকাশ করা। কারণ ওর জায়গা থেকেই, ও হয়তো একদিন প্রশ্ন করবে মা তুমি তো কোনোদিন কথা বলোনি। সে কারণেই এ কথাগুলো বলছি।

প্রসঙ্গ যখন টাকা

অনেকেই বলে থাকেন আমি শাকিব খানের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে আর্থিক সুবিধা নিচ্ছি। এই ধারণাও সম্পূর্ণ ভুল। বিয়ের পর থেকে এমনকি আমার সন্তান জন্মের পর থেকে এখন পর্যন্ত কোনো আর্থিক সাপোর্ট আমি ওনার কাছ থেকে নিইনি। আমার সন্তানের বয়স প্রায় তিন বছরের কাছাকাছি, কিন্তু এযাবৎ পুরোটা খরচ আমি নিজেই বহন করেছি। আমেরিকাতে যখন বেবিকে নিয়ে সার্ভাইভ করেছি তখন ওখানে বড় অঙ্কের অর্থ খরচ করতে হয়েছে। প্রায় এক বছর সেখানে ছিলাম। তার মধ্যে ১৫ হাজার ডলার শাকিব আমাকে দিয়েছিলেন। বাকি ৩০ হাজার ডলার আমি নিজে বহন করেছি। গিফট করা বা শপিং করা সেগুলো আলাদা বিষয়। কিন্তু প্রতিনিয়ত আর্থিক সহায়তা আমি কখনো ওনার কাছ থেকে নিইনি।

শাকিব খানই চেয়েছিলেন

অপু বিশ্বাসের সঙ্গে যখন শাকিব খান সম্পর্কে ছিলেন তখন কিন্তু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আমি আসিও নাই। পরে যখন শাকিব খানের সঙ্গে ছবি করেছি তখন শাকিব খানের সঙ্গে অপু বিশ্বাসের দূরত্ব ছিল। শুরুতে শাকিব খানের সঙ্গে আমার সম্পর্ক প্রফেশনাল হলেও পরে শাকিব খান চাচ্ছিলেন সেটেল হতে। তো সেভাবেই সব হয়ে যায়। কিন্তু তখন আমি বা কেউই আসলে জানত না শাকিব-অপুর ব্যাপারটা। তাদের বেবি অ্যাবরশনসহ নানা ঘটনা ঘটেছে। এসবের মধ্যে তো আমি ছিলাম না। অপু বিশ্বাস নিজেও বলেছেন যে, তার সঙ্গে শাকিব খানের যোগাযোগ ছিল না দীর্ঘদিন। এসবের মধ্যে আমি না থাকলেও আমাকে জড়িয়ে অভিযোগ করেছেন অপু বিশ্বাস। আমাকে ফোন করে বাজে ভাষায় কথাও বলেছিলেন তিনি।

‘ইউ ডিজার্ভ ইট’

শাকিব খানের সঙ্গে আমার সম্পর্ক দেখে বা সংসারে নানা ঝামেলা দেখে তারা বলতে চেষ্টা করেন ‘ইউ ডিজার্ভ ইট’। কিন্তু না, আমি কারও সংসারের অশান্তির কারণ হইনি বা তিনি (অপু বিশ্বাস) যখন আত্মগোপনে ছিলেন তখনো কিন্তু আমি ছিলাম না। তারা দুজনেই ম্যাচিউর মানুষ। এখন কেউ যদি সম্পর্ক ভালো না হওয়ায় আগের সম্পর্ক গোপন রেখে অন্য আরেকটা সম্পর্ক করে বা বিয়ে করে সে ক্ষেত্রে যাকে বিয়ে করল- এটা কি তার দোষ হয়ে যায়? কেউ যদি একটা সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আরেকটা সম্পর্ক করতে চায়, তাহলে যার সঙ্গে সম্পর্ক করল এটা কি তার দোষ?

আরও অনেক গোপন আছে

শাকিব আমাকে পরে বলেছিলেন, আমি ওই সম্পর্কটা নিয়ে সুখী নই। উনি সে সময় অনেক কিছুই বলেছিলেন। কিন্তু সেসব কথা কারও কারও সম্মান রক্ষার্থে আগেও বলিনি, আজও বলব না। আর বিয়ের আগে আমি বারবার শাকিবকে বলেছি বিষয়টা। তিনি বলেছেন, এতদিন আমার আর অপুর মধ্যে এতকিছু হয়ে গেল তখন তো তুমি ছিলে না। তোমার কেন দোষ হবে? তো এই বিষয়গুলোতে তো আমার ইনভলবমেন্ট ছিল না।

সাংবাদিকদের মুখোমুখি না হয়ে ভিডিও বার্তা

এর আগেও অনেকে আমার শুটিং স্পটে এসেছিলেন আমার ইন্টারভিউ করতে। সবাইকে বলেছিলাম এ বিষয়ে পরে কথা বলব। এরপরও অনেকে নিউজ করেছেন আমি গণমাধ্যম এড়িয়ে চলছি। ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাই না। আমি আমার কাজ নিয়েই থাকতে চাই। আমার এই নীরবতা নিয়েই অনেক ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে। অনেকেই ভেবেছেন চুপ থাকা মানেই সম্মতির লক্ষণ। সেই জায়গা থেকেই আমার মনে হলো কথা বলা দরকার। আমি কখনো কাউকে ছোট করে কথা বলিনি, কারও বিরুদ্ধে কথা বলিনি। কাউকে অসম্মান করে, অশ্রদ্ধা করে কথা বলিনি। আমার মনে হয়েছে কিছু প্রশ্ন নিয়ে কথা বলা উচিত। যদি সাংবাদিকদের ডেকে কথা বলতাম, সে ক্ষেত্রে ওনাদের নানা ধরনের প্রশ্নের মুখে এক ইস্যু থেকে আরেক ইস্যুতে চলে যেতাম। আমি যেটা বলতে চাইছিলাম সেটা হয়তো বলা হতো না। তাই আমার কথাগুলো বলার জন্য, শেয়ার করার জন্যই সাংবাদিকদের মুখোমুখি না হয়ে ভিডিও বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *