শেষ ষোলোতে যেতে জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না বেলজিয়ামের। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছেন কেভিন ডি ব্রুইনা। কিন্তু সতীর্থরা তাকে বার বারই হতাশ করেছে। শেষ পর্যন্ত ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ড্র করে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে দ্বিতীয় সেরা দল বিদায় নিয়েছে কাতার বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই।
আহমদ বিন আলী স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) বেলজিয়াম ও ক্রোয়েশিয়ার মধ্যকার ম্যাচটি গোলশূন্য ড্রয়ে শেষ হয়েছে।
মরক্কোর বিপক্ষে হেরে বেশ চাপে ছিল বেলজিয়াম। বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা দলটির সামনে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না। কারণ হার এড়িয়ে ড্র করতে পারলেও শেষ ষোলোর টিকিট নিশ্চিত করতো ক্রোয়েশিয়া। অন্যদিকে বেলজিয়ামের ড্রয়ের বিপরীতে মরক্কো শেষ ম্যাচে কানাডার বিপক্ষে হারলেও উঠে যেতে শেষ ষোলোয়। কারণ তারা গোল ব্যবধানে এগিয়ে ছিল।
বাঁচামরার এমন সমীকরণে কেভিন ডি ব্রুনাই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একাধিক সুযোগ তৈরি করেছেন। কিন্তু তার ক্রসগুলো মিস করে বারবারই বেলজিয়ামকে হতাশ করেছেন বেলজিয়ামের ফরোয়ার্ডরা। সবচেয়ে বেশি হতাশ করেছেন রোমেলু লুকাকু। গোলবারের সামনে ফাঁকায় বল পেয়েও তিনি দলকে গোল উপহার দিতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত তাই গোলশূন্য ড্রয়ে থেকে কান্না চোখে বিদায় নিতে হয়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা দলটিকে।
এর আগে আহমদ বিন আলী স্টেডিয়ামে গোলের উদ্দেশে ১৬টি শট নেয় বেলজিয়াম। যার মধ্যে ৩টি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে ক্রোয়েশিয়ার ১১ শটের ৪টি ছিল লক্ষ্য বরাবর।
ম্যাচের প্রথমার্ধে কেউই তেমন আক্রমণে দ্যুতি ছড়াতে পারেনি। কেভিন ডি ব্রুইনা ও লুকা মদ্রিচের লড়াইটা মাঝমাঠেই সীমাবদ্ধ ছিল। খেলা জমে ওঠে দ্বিতীয়ার্ধে। অন টার্গেট শটের সবগুলোই আসে শেষ ৪৫ মিনিটে।
ম্যাচের ৫৯ মিনিটে ডি ব্রুইনার পাস ডি-বক্সে গোলরক্ষককে একা পেয়েও জালে জড়াতে পারেননি কারাসকো। ক্রোয়েশিয়ান গোলরক্ষক লিভাকোভিচ অবশ্য বল পুরোপুরি ক্লিয়ার করতে পারেননি। বল পেয়ে যান রোমেলু লুকাকু। কিন্তু তার নেয়া জোরালো শটটি দুর্ভাগ্যবশত বারে লেগে ফিরে আসে।
দুই মিনিট পর বাঁ দিক থেকে আক্রমণে উঠে ডি ব্রুইনা ক্রস বাড়ান লুকাকুর উদ্দেশে। গোলবারের কাছ থেকে লুকাকুর নেয়া হেড যায় বারের অনেক ওপর দিয়ে। ৬৮ মিনিটে উল্টো গোল পেতে পারতো ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু ডি-বক্সের বাইরে থেকে মদ্রিচের নেয়া জোরালো শটটি পরাস্ত করতে পারেনি থিবো কোর্তোয়াকো।
পরের মিনিটে ডি-বক্সে ঢুকে আর সতীর্থদের ওপর ভরসা রাখতে পারেননি ডি-ব্রুইনা। নিজেই নেন জোরালো শট। দুবারের প্রচেষ্টায় সেটি গ্লাভসবন্দি করে নেন ক্রোয়েশিয়ান গোলরক্ষক। ৭৭ মিনিটে ডি ব্রুইনার আরও একটি ক্রস গোলবারের সামনে হেড দিতে ব্যর্থ হন থোর্গান হ্যাজার্ড।
৮৯ মিনিটে গোলের দারুণ সুযোগ পেয়ে হতাশ করেন লুকাকু। ডান প্রান্ত থেকে সতীর্থের বাড়ানো ক্রস ডি-বক্সে অরক্ষিত থাকা লুকাকু পা বাড়ালে অথবা হেড দিলেই গোল হয়ে যায়। কিন্তু সেখানে তার বুকে বল লেগে চলে যায় ক্রোশিয়ান গোলরক্ষকের হাতে। বুকের সাহায্যে একটু জোর দিলেও বলটি জালে জড়াতো। কিন্তু তিনি এবারও হতাশ করেন।
আর তাতে বিশ্বকাপ থেকেই ছিটকে যায় বেলজিয়াম। কাতার বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয় বেলজিয়ামের সোনালি প্রজন্ম। গত আসরেও তারা তৃতীয় হয়েছিল। এবার কাতারে পাড়ি দিয়েছিল হট ফেবারিট হিসেবে। কিন্তু তাদের যাত্রা থেমে গেল গ্রুপ পর্বে।
‘এফ’ গ্রুপ থেকে ৩ ম্যাচে সর্বোচ্চ ৭ পয়েন্ট শেষ ষোলোতে পা রেখেছে মরক্কো। ৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় দল হিসেবে নকআউট পর্ব নিশ্চিত করেছে ক্রোয়েশিয়া।