‘গণসমাবেশে না আসলে বিবেকের কাছে দায়ী থাকবো’

Slider রাজনীতি


বরিশালে গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মাঝে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণায় যানবাহনের সংকটের আশংকা থেকে দুই দিন আগে থেকেই বরিশালে অবস্থান করছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। সমাবেশে যোগদানের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) বিকেল থেকেই বরিশালের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করে।

শনিবার (৫ নভেম্বর) বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে অনুষ্ঠিত হবে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। উক্ত গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে বিএনপির নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে যেন চলছে পিকনিকের আমেজ। দলটির নেতাকর্মীরা সেখানে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছে। কেউ কেউ আবার ব্যস্ত সময় পার করছে ছবি-সেলফি তোলায়। সবমিলিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে সমাবেশস্থলে। নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতির পাশাপাশি জোরেশোরে চলছে মঞ্চ প্রস্তুতের কাজও।

বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আগত নেতাকর্মীদের জন্য রান্নার আয়োজন করা হয়েছে মঞ্চের পাশেই। সমাবেশস্থলে উপস্থিত হাজারো নেতাকর্মীর জন্য ৮‌টি হাঁড়িতে রান্না হচ্ছে খিচুড়ি ও মুরগির মাংস। পুলিশের অভিযানের নামে হয়রানির আশঙ্কায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা নেতাকর্মীরা আবাসিক হোটেলের পরিবর্তে রাত কাটিয়েছে সমাবেশ মঞ্চেই। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নেতা-কর্মীদের অনেকেই আশ্রয় নিয়েছে মাঠের গাছতলায় তাঁবুর নিচে। আবার কয়েকজন পাটি বিছিয়ে খোলা আকাশের নিচেই শুয়ে পড়েছেন।

বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী জানান, শুক্রবার (৪ নভেম্বর) থেকে বাস ও লঞ্চ ধর্মঘট হওয়ায় নেতাকর্মীরা আগেই সমাবেশস্থলে উপস্থিত হয়েছে। সমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতাকর্মীদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হুমকি ও বাধার মুখে পড়তে হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। যাত্রাপথে গাড়ি থামিয়ে চেকিং এর নামে পুলিশও হয়রানি করছে বলেও জানান তারা। বিএনপি নেতাকর্মী বুঝতে পারলে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।

শত বাঁধা পেরিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে পেরে খুশি বিএনপির নেতাকর্মীরা। ভোলার লালমোহন উপজেলার বিএনপি কর্মী ওহাব আলী বলেন, মাছের ট্রলারে করে আসতে হয়েছে। তারপরও পথে বাধা-বিঘ্ন সৃষ্টি করা হয়েছে। তবে সমাবেশে আসার পর সব ক্লান্তি দূর হয়ে গেছে। সমাবেশে যোগ দিতে আসা বিএনপির এক কর্মী বলেন, ‘ইতোমধ্যে বরিশালের সঙ্গে অন্যান্য স্থানের যোগাযোগ বন্ধ হওয়া শুরু হয়ে গেছে। লঞ্চ, বাস, অটো, ট্রাকসহ সব যানবাহন বন্ধ রাখছে। তাই আমরা আগে থেকেই সমাবেশে যোগ দিয়েছি।’

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বড়াকোঠা ইউনিয়নের ৬৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ আনোয়ার হোসেন রাঢ়ী শেষ বয়সেও কষ্ট করে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে যোগদানের লক্ষ্যে নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে এসেছেন। গণসমাবেশ সফল করতেই কষ্ট করে তিনি এসেছেন বলে জানান। আনোয়ার হোসেন রাঢ়ী বলেন, ‘ক্ষমতাসীন সরকারের দুঃশাসনে দেশ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। দেশকে মুক্ত করতে হবে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। দেশের এমন ক্রান্তিলগ্নে বরিশালের গণসমাবেশে না আসলে বিবেকের কাছে দায়ী থাকবো। তাই দলের টানে আর ঘরে থাকতে পারলাম না।’
আগামীকাল (৫ নভেম্বর) বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *