মাঠ ছাড়বে না বিএনপি, নির্বাচন পর্যন্ত ধারাবাহিক কর্মসূচী

Slider রাজনীতি

জ্বালানি তেলসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে গত আগস্ট থেকে আন্দোলন করে আসছে বিএনপি। এই দুমাসেই ৫ নেতাকর্মীর প্রাণ গেছে। বিএনপি বলছে, পুলিশের গুলিতে ৪ জন এবং আওয়ামী লীগের কর্মীদের হাতে একজন নিহত হন।
আগস্টে পূর্বঘোষিত কর্মসূচীতে ভোলায় ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই নেতা নিহত হন। প্রতিবাদে সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচী ঘোষণা করে বিএনপি। এরইমধ্যে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নারায়ণগঞ্জে যুবদলের এক কর্মী নিহত হন পুলিশের গুলিতে। প্রতিবাদে সারাদেশে টানা বিক্ষোভ-সমাবেশ করা হয়। বিক্ষোভে মুন্সিগঞ্জে যুবদলের আরো এক নেতা নিহত হন। মূলত আগস্টে আন্দোলন শুরুর পরই একের পর এক আন্দোলনের ইস্যু তৈরি হয়েছে।

রাজধানীতেও সেপ্টেম্বর মাসজুড়ে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে বিএনপি। কোথাও কোথাও পুলিশ আবার অনেক স্থানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের তীব্র বাধার মুখে পড়ে তারা। সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। সর্বশেষ ছাত্রদলের নবগঠিত ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় কমিটি ভিসিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হন নেতাকর্মীরা। প্রতিবাদে ২৮ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি।

সংবাদ সম্মেলনে দুই মাসের কর্মসূচী ঘোষণা করে বিএনপি। ১০টি সাংগঠনিক বিভাগে গণসমাবেশ এবং ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়।

এর আগে থেকেই বিএনপি বার বার বলে আসছে বিভিন্ন বিরোধী দলকে সঙ্গে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনে করবে তারা। কিন্তু যুগপৎ আন্দোলনের সূচনা হওয়ার আগেই দুই মাসের এই কর্মসূচী ঘোষণা করা হলো। ধারণা করা হচ্ছে, দুই মাসে সারাদেশে সাংগঠনিক শক্তি সংহত করে যুগপৎ আন্দোলনে যাবে দলটি।

বিএনপির একটি সূত্র জানায়, দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া থেকে বার্তা নিয়েই আগামী নির্বাচন পর্যন্ত আন্দোলনের রুপরেখা চূূড়ান্ত করেছে দলটি। কখনও ধীরগতি আবার কখনও তীব্র আন্দোলনে মাঠ ধরে রাখবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সরকারের দমন-পীড়ন ও ধরপাকড়কে উপেক্ষা করেই রাজপথে থাকবে তারা।

বিএনপির হাই কমান্ড থেকে জানা গেছে, কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে যে অভ্যন্তরীণ মনস্তাত্ত্বিক বা দৃশ্যমান দ্বন্দ্ব ছিল তাও অনেকটাই কমে এসেছে। কাক্সিক্ষত পদ না পাওয়ায় অনেকের মধ্যে ছিল ক্ষোভ ও হতাশা। দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেন তারা। সেই ক্ষোভকে ত্যাগ করেই দলের স্বার্থে সক্রিয় হচ্ছেন নেতাকর্মীরা।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহান জানান, চলমান আন্দোলনের রূপরেখার বিষয়ে স্থায়ী কমিটিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার কোন বার্তা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু ম্যাডাম এখনও বন্দি জীবন যাপন করছেন তাই সরাসরি তিনি কোন নির্দেশনা দিতে পারছেন না। তবে নির্দেশনাতো অবশ্যই আছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, যেহেতু চেয়ারপার্সন এখনও বন্দি আছেন, সরকার মুক্তি দিচ্ছে না। তবে ম্যাডামের সঙ্গে মহাসচিব মাঝে মধ্যে দেখা করেন। তাদের মধ্যে কী নিয়ে আলোচনা হয় তা জানানো হয় না। চেয়ারপার্সন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের যোগাযোগ আছে। মা-ছেলে হিসেবে একে অপরের খোঁজ খবর নিচ্ছেন।

আন্দোলনের বিষয়ে কোন আলোচনা হয় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে আলোচনা হতেও পারে। তবে সেই বিষয়ে বলতে পারবো না। বর্তমানে খালেদা জিয়ার সঙ্গে স্থায়ী কমিটির সরাসরি কোন মিটিং হওয়ারও সুযোগ নাই। তবে চেয়ারপার্সন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পরামর্শক্রমেই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত আছে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *