দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, চলমান আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে দলের নেতাকর্মীদের নিহতের প্রতিবাদ ও বেগম খালেদা জিয়া’র মুক্তি এবং নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে ফের গণ-মাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। ৮ অক্টোবর হতে বিএনপির ১০ সাংগঠনিক বিভাগীয় এই গণ-সমাবেশ অনুষ্ঠানিত হবে।
বুধবার(২৮ সেপ্টেম্বর) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ভোলায় স্বেচ্ছাসেবক দল কর্মী আব্দুর রহিম ও ছাত্রদল নেতা নুরে আলম, নারায়ণগঞ্জে যুবদল কর্মী মো: শাওন, মুন্সিগঞ্জে যুবদল নেতা শহিদুল ইসলাম শাওন ও যশোরে আব্দুল আলিম নিহতের প্রতিবাদে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহা সমাবেশ করা হবে।
মির্জা ফখরুল জানান, ৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম, ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহ, ২২ অক্টোবর খুলনা, ২৯ অক্টোবর রংপুর, ৫ নভেম্বর বরিশাল, ১২ নভেম্বর ফরিদপুর, ১৯ নভেম্বর সিলেট, ২৬ নভেম্বর কুমিল্লা, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে গণ-সমাবেশ এবং ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল নেতাদের হত্যার উদ্দেশ্যেই হামলা ছাত্রলীগ করেছে। তিনি এঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ ক্যাডারদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কারের দাবি জানান। তিনি বলেন, মঙ্গলবার নেত্রকোনায় গণঅধিকার পরিষদের নেতাদেরও হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করছে আওয়ামী লীগ।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন বিএনপির দাবি অনুযায়ী কার কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিবে আওয়ামী লীগ। এ বিষয়ে বিএনপির প্রতিক্রিয়া কি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাববে এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, পদত্যাগের আগেই নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের কাছে তারা পদত্যাগ পত্র জমা দিবে। এটাতো শুধু বিএনপির দাবি না। এটা দেশের জনগণের দাবি। প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধন করবে।
ফখরুল বলেন, আমরা জনগণকে সম্পৃক্ত করতে চাই। গণআন্দোলন সৃষ্টির মাধ্যমেই সরকার পদত্যাগ করবে।
তিনি বলেন, সমাবেশে জনগণের সম্পৃক্তা বেড়েছে। খুব শিগগিরই যুগপৎ আন্দোলন আসবে। আমরা গণতান্ত্রিক কর্মসূচী দিচ্ছি। কেউ আন্দোলনে হামলা করলে জনগণ প্রতিরোধ করবে। তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা কোন সমাবেশ বাতিল করিনি। আমাদের আন্দোলন দেখে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ পিছু হটেছে। এটা জনগণের বিজয়।
এসময়, চলমান কর্মসূচীতে ৪ জনকে গুলি করে এবং ১ জনকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হত্যা ও ২৭৬৮ জনের বেশি আহত হওয়ার তথ্য জানান মির্জা ফখরুল। এছাড়া, ২৯৪ জন কর্মী গ্রেফতার, প্রায় ৭৫টি মিথ্যা মামলায় এজাহার ভূক্ত ৫৪৭০জন ২৫ হাজার নেতা-কর্মীকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এসময়, ২৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভার সিদ্ধান্তসমূহ জানানো হয়। সভায় সকল হত্যা ও নির্যাতনের সকল দায় স্বীকার করে অবিলম্বে পদত্যাগের দাবি জানানো হয়।
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর করা এবং বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীকে মুক্তি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সকল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের কৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। চলমান আন্দোলনকে আরও বেগবান করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় সভায়। পঞ্চগড়ের করতোয়া নদীতে নৌকা ডুবিতে শতাধিক মানুষের প্রাণহানিতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়।
আগস্ট থেকে জ্বালানী তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে চলমান কর্মসূচীতে আজ পর্যন্ত ভোলায় নূরে আলম, আব্দুর রহিম, নারায়ণগঞ্জে শাওন, মুন্সিগঞ্জে শহিদুল ইসলাম শাওন, যশোরে আব্দুল আলিম ৫জন নিহত হয় তার মধ্যে ফ্যাসিষ্ট সরকারর পুলিশর ৪ জনকে গুলি করে এবং ১ জনকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে, ২৭শ ৬৮ জনের অধিক আহত, ২৯৪ জন কর্মী গ্রেফতার, প্রায় ৭৫টি মিথ্যা মামলায় এজাহার ভূক্ত ৫৪শ ৭০জন করে প্রায় ২৫ হাজার নেতা-কর্মীকে আসামী করে মামলা দায়েরে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
এদিকে, নিউইয়র্কে শেখ হাসিনা দেশে গুম, বিনা বিচারে হত্যাকান্ড এবং সরকারী দমন নীতি সম্পর্কে মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।